
শপথ নিলেন আনোয়ার ইব্রাহিম

অর্থনীতি ডেস্ক : মালয়েশিয়ার দশম প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়েছেন আনোয়ার ইব্রাহিম। তিনি দেশটির প্রধান রাজা ও পেনাংয়ের সুলতান আবদুল্লাহ রিয়াতউদ্দিন আল মোস্তাফার উপস্থিতিতে শপথ নেন।
বৃহস্পতিবার মালয়েশিয়ার সংবাদমাধ্যম দ্য স্টার ডট কমের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, কুয়ালালামপুরে সুলতান আবদুল্লাহর প্রশাসনিক ভবন আসতানা নেগারা প্রাসাদে স্থানীয় সময় বিকেল ৫টায় শপথ নেন আনোয়ার ইব্রাহিম।
গত শনিবার সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৬টা পর্যন্ত ভোটারদের শান্তিপূর্ণ ভোটদানে দেশটির ২ কোটি ১১ লাখ ৭৩ হাজার ৬৩৮ নিবন্ধিত ভোটার ও মোট ২২২টি আসনের মধ্যে মাইউন্ডি ডট কম ডট মাই সরকারি পোর্টালের তথ্য মতে, তুখোড় এ নেতা আনোয়ার ইব্রাহিমের জোট পাকাতান হারাপান (পিএইচ) জয় পেয়েছেন ৮২টি আসনে।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী মুহিউদ্দিন ইয়াসিনের পেরিকাতান ন্যাশনাল (পিএন) জোট জয় পেয়ছেন ৭৩টি আসনে। দুর্নীতিসহ বিভিন্ন কেলেঙ্কারিতে সাজাপ্রাপ্ত সাবেক নেতা নাজিব রাজ্জাকের দল বারিশান ন্যাশনাল (বিএন) জয় পেয়ছেন মাত্র ৩০টি আসনে। তাছাড়া বর্ণেও মালয়েশিয়ার সারোয়াক রাজ্যের জিপিএস পেয়েছেন ২২টি আসন ও জিপিআরএস পেয়েছেন ৬টি আসন এবং সাবাহ রাজ্যের ওয়ারিশান পেয়েছেন ৩টি আসন ও অন্যরা পেয়েছেন ৩টি আসন। যা এককভাবে সরকার গঠনে কোনো দলের সামর্থ্য ছিলোনা। ফলে নানা চড়াই-উৎরাই পেরিয়ে আজ আনোয়ার ইব্রাহিমই মালয়েশিয়ার দশম প্রধানমন্ত্রীর শপথ নিলেন। ৭৩ বছর বয়সী মালয়েশিয়ান এ নেতা ছাত্রনেতা থেকে সংস্থারপন্থি অর্থনীতিবিদ, মন্ত্রী থেকে উপ-প্রধানমন্ত্রী পদে আসীন হওয়া, বারবার কারাবরণ এবং মালয়েশিয়ার কয়েক দশকের শাসনকারী দলকে ক্ষমতা থেকে উৎখাতের প্রতিটি পর্যায়ের নায়ক। ২৬ বছরের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার স্বপ্ন ও ২০ বছরের জেলখাটা মালেশিয়ানের নানা ষড়যন্ত্র তার স্বপ্নপূরণে অলঙ্ঘনীয় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিল। ফরেন পলিসি ম্যাগাজিনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে আনোয়ার বলছিলেন,‘আপনি যদি অপরাধের বিরুদ্ধে কঠোর হন, দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর হন, ক্ষমতার অপব্যবহারের বিরুদ্ধে কঠোর হন, সম্পদের পাহাড়গড়া কিছু পরিবারের বিরুদ্ধে কঠোর হন তাহলে শাসকগোষ্ঠীর কাছে তো জনপ্রিয় হতে পারবেন না। এ সম্পর্কে আমি পূর্ণ ওয়াকিবহাল।
২০২০ সালে মাহাথির পূর্ব সমঝোতা অনুসারে ক্ষমতা হস্তান্তর নিয়ে গড়িমসি করতে থাকেন। এ সময় মাহাথিরের দলের নেতারা দাবি করেন, মাহাথিরকে পুরো মেয়াদে ক্ষমতায় থাকতে দিতে হবে। এ নিয়ে গত ফেব্রুয়ারিতে ক্ষমতাসীন জোটে ভাঙন দেখা যায়। এর জেরে মাহাথির পদত্যাগ করেন। এরপর রাজা মাহাথিরের আপত্তি উপেক্ষা করে মুহিউদ্দীন ইয়াসিনকে প্রধানমন্ত্রী পদে নিয়োগ দেন। সংসদে তার সংখ্যাগরিষ্ঠতা ছিল কি না তা নিয়ে ঘোর সংশয় ছিল। এ কারণে সংসদে ভোটাভুটির আয়োজন করার সাহস দেখাতে পারেননি প্রধানমন্ত্রী মুহিউদ্দীন। শেষ পর্যন্ত পদত্যাগ করেন তিনি।
