শুধু আয়কর নয়, সব ক্ষেত্রে সংস্কার চান পরিকল্পনামন্ত্রী
অর্থনীতি ডেস্ক : পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, সংস্কার সবখানে হওয়া দরকার। সবচেয়ে বেশি সংস্কার দরকার আয়করে। এ জন্য আমি সবসময় সংলাপের পক্ষে। যত বেশি আলোচনা হবে, সংস্কার প্রক্রিয়ায় জনগণের অংশগ্রহণ তত বাড়বে।
কাঙ্খিত উন্নয়নের জন্য অনেক সংস্কার করতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। তিনি বলেন, শুধু আয়কর নয়, সিভিল সার্ভিসসহ সব ক্ষেত্রে আমাদের সংস্কার করতে হবে, তবে বিদ্যমান আইন-কানুন মেনে সংবিধানের আলোকে এটি করতে হবে। শনিবার রাজধানীর গুলশান ক্লাবে ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস ফোরাম অফ বাংলাদেশ (আইবিএফবি) আয়োজিত ‘শতবর্ষে আয়কর আইন, প্রত্যাশা ও প্রাপ্তি’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন পরিকল্পনামন্ত্রী।
আইবিএফবির সভাপতি হুমায়ন রশিদের সভাপতিত্বে এ সেমিনারে বক্তব্য দেন সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল হাসান আরিফ, এনবিআরের সাবেক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আবদুল মজিদ, আইএফবির সহসভাপতি এম এ সিদ্দীক, এনবিআরের সাবেক সদস্য আলমগীর হোসেন প্রমুখ। এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন স্নেহাশীষ বড়ুয়া এফসিএ।
সংস্কারকে বর্তমান সরকার সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়েছে জানিয়ে এম এ মান্নান বলেন, আমাদের নেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আন্তরিকভাবে চান সংস্কার করা হোক, কিন্তু একটি স্বার্থান্বেষী মহল সংস্কার চায় না। তারা বাধা দেয়ার চেষ্টা করছে। এদের বিরুদ্ধে আমাদের সবাইকে রুখে দাঁড়াতে হবে।
পরিকল্পনামন্ত্রী আরও বলেন, সংস্কার সবখানে হওয়া দরকার, তবে আমি মনে করি, সবচেয়ে বেশি সংস্কার দরকার আয়করে। রাজস্ব বাড়ানোর স্বার্থেই এটা করা জরুরি। এ জন্য আমি সবসময় সংলাপের পক্ষে। কারণ যত বেশি আলোচনা হবে, সংস্কার প্রক্রিয়ায় জনগণের অংশগ্রহণ তত বাড়বে। এ জন্য সংস্কার হতে হবে সংলাপের মাধ্যমে সকলের পরামর্শ নিয়ে। পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, এটা ঠিক, আমাদের দেশে কর অব্যাহতি বেশি। সবাইকে যে যৌক্তিকভাবে সুবিধা দেয়া হয়, তা ঠিক না। একজন গরিব রিকশাচালক মূল্য সংযোজন কর-ভ্যাট দিয়ে দেশের উন্নয়নে অবদান রাখছেন। তাহলে যাদের বেশি সম্পদ আছে, তারা কেন অব্যাহতি পাবে?
অনুষ্ঠানে একজন আলোচকের বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে মন্ত্রী বলেন, যে কর্মকর্তা ভূগোল বিষয়ে লেখাপড়া করেছেন, চাকরি জীবনে তিনি হয়তো কাজ করছেন ট্যাক্স বিভাগে। এটা সত্যি, তিনি তো ভালো নীতি প্রণয়ন করতে পারবেন না। এ জন্য সিভিল সার্ভিসে সংস্কার দরকার।
মন্ত্রী বলেন, অনেকে জিজ্ঞেস করেন কেন কর দেব? তাদের উদ্দেশ্যে বলতে চাই, রাষ্ট্রের মালিক জনগণ। আমাদের সংবিধানে বলা আছে, রাষ্ট্রের স্বার্থে জনগণ কর দিতে; বিনিময়ে রাষ্ট্র সেবা দেবে। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, সরকার কি সব সেবা নিশ্চিত করতে পারছে? স্বীকার করছি এখানে সরকারের ঘাটতি আছে। সেবার মান বাড়াতে বর্তমান সরকার সর্বাত্মক চেষ্টা করছে। সবাই যদি একই প্রশ্ন করে, তাহলে উন্নয়ন থেমে যাবে। সুতরাং দেশের উন্নয়নে সামর্থ্যবান সবাইকে কর দিতে হবে। কর দেয়া নৈতিক দায়িত্ব উল্লেখ করে এম এ মান্নান বলেন, একসময় রাজাকে খাজনা দিত জনগণ। তখন রাজাকে খাজনা বা কর দেয়া দায়িত্ব ছিল। এখন সরকারকে কর দেয়া দায়িত্ব। সূত্র : নিউজবাংলা