সাধারণকে স্বস্তি দিতে দেশে দাম কমানোর পরামর্শ অর্থনীতিবিদদের বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম কমেছে
বিশ্বজিৎ দত্ত : বিশ্ব বাজারে অশোধিত তেল ব্যারেল পিছু ১০০ ডলারের নীচে নেমেছে বেশ কিছু দিন আগেই। চিনে কোভিড-নীতি বিরোধী বিক্ষোভের জেরে তা আরও পড়ল। চাহিদা আরও কমে যাওয়ার আশঙ্কায় প্রায় ১১ মাসের তলানিতে নেমে গতকাল ব্রেন্ট ক্রুড হল ৮১.৪৬ ডলার।
আর এক ধরনের অশোধিত তেল ডবিøউটিআই নামল ৭৪.৫১ ডলারে। আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানীর মূল্য বৃদ্ধির কথা বলে গত কয়েমাস আগে তেলের দাম দাম লিটার প্রতি প্রায় ৫২ শতাংশ বৃদ্ধি করেছিল সরকার। ৮০ টাকা লিটার কেরোসিন ও ডিজেলের মূল্য বৃদ্ধি করে ১১৪ টাকা ও পেট্রোলের মূল্য ৮৬ টাকা থেকে বৃদ্ধি করে ১৩০ টাকা করা হয়েছে। এই মূল্য বৃদ্ধির বিষয়ে বিপিসির চেয়ারম্যান গণ মাধ্যমকে বলেছিলেন জ্বালানির মূল্য বৃদ্ধিতে প্রতিমাসে সরকারকে জ্বালানি তেলে ১১০০ কোটি টাকা লোকসান দিতে হচ্ছে।
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পরেই চড়েছিল অশোধিত তেলের দাম। একটা সময় ব্রেন্ট ১৩৯ ডলার পেরোয়। তবে অর্থনীতিবিদরা বার বারই বলেছেন , চড়া জ্বালানির কারণে মাথা তোলা মূল্যবৃদ্ধি সব থেকে বেশি ধাক্কা দিয়েছে সাধারণ এবং স্বল্প রোজগেরে মানুষকে। তাই বিশ্ব বাজারে তেল-গ্যাসের দাম কমার সুবিধা তাঁদের কাছে পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে না কেন? বিশেষত আন্তর্জাতিক দাম বাড়লে এতদিন যেহেতু গ্রাহকদের ঘাড়ে বোঝা চাপতে সময় লাগেনি।এখন জ্বালানির দাম কমেছে, বোঁঝা কিছুটা নামানো হউক। দেশে উচ্চমূল্যস্ফীতিতে সাধারণ ও নি¤œ আয়ের মানুষ খুবই সংকটে রয়েছে। বর্তমানে মূল্য স্ফীতির পরিমান প্রায় ১০ শতাংশ।
এ বিষয়ে জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ ও জ্বালানি সচিবকে টেলিফোন করে পাওয়া যায়নি। তাদের মেসেজ পাঠালেও তারা মেসেজের উত্তর দেননি।
এ বিষয়ে সিপিডির অর্থনীতিবিদ, ড, খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, ২ কারণে জ্বালানি তেলের দাম কমায় না সরকার। প্রথমতো সরকার নিজেই এখানে নিয়ন্ত্রক বাজারে কোন প্রতিযোগী নেই। সুতরাং বাজারের নিয়ম মেনে এখানে দাম কমে না। দ্বিতীয়ত সরকার দীর্ঘ মেয়াদী চুক্তিতে জ্বালানি তেল কিনে। ফলে আগের চুক্তি মোতাবেক এখনো তেল কিনতে হবে। সুতরাং ইচ্ছে কররেই মূল্য কমানো যাবে না।
তিনি বলেন, ভারত এমনকি আফগানিস্তানেও বিশ্ব বাজারের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে জালানি তেলের মূল্য সমন্বয় করে।
তিনি এটিও মনে করিয়ে দেন ২০১৪ সালের পর গত ৭ বছর আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের দাম কমছিল। তখনো সরকার তার সঙ্গে সমন্বয় করে জ্বালানি তেলের মূল্য কমায়নি। তার বদলে এই সময়ে সরকার ৪৮ হাজার কোটি টাকা তেল বিক্রি করে লাভ করেছে।