সপ্তাহ ব্যবধানে ডিএসইতে বাজার মূলধন বেড়েছে ১২২ কোটি টাকা
মাসুদ মিয়া: দেশের শেয়ারবাজার টানা তিন সপ্তাহ সূচক নি¤œমুখী থাকার পর গত সপ্তাহ সামান্য সূচকের উত্থানের মধ্যে দিয়ে লেনদেন শেষ হয়েছে। সপ্তাহটিতে শেয়ারবাজারে প্রধান প্রধান সূচক বেড়েছে। সূচক বাড়লেও টাকার পরিমাণে লেনদেন কমেছে। সপ্তাহটিতে অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট দর অপরিবর্তিত রয়েছে। আর সপ্তাহ ব্যবধানে প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ ডিএসইতে বাজার মূলধন বেড়েছে ১২২ কোটি টাকা। গত সপ্তাহে ৫ কার্যদিবস লেনদেন হয় চার কার্যদিবস সূচক ঊর্ধ্বমুখী থাকে আর শেষ তিন কার্যদিবস টানা ঊর্ধ্বমুখী ছিল শেয়ারবাজার। গত সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসের লেনদেন শেষে ডিএসইর বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে ৭ লাখ ৬৩ হাজার ৭৪৭ কোটি টাকা। যা তার আগের সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে ছিল ৭ লাখ ৬৩ হাজার ৬২৫ কোটি টাকা। অর্থাৎ গত সপ্তাহে ডিএসইর বাজার মূলধন বেড়েছে ১২২ কোটি টাকা।
এদিকে সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৫৬টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৪০টির। আর ২৭১টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
এতে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ৩০ দশমিক ২৬ পয়েন্ট বা দশমিক ৪৯ শতাংশ। আগের সপ্তাহে সূচকটি কমে ৫০ দশমিক ৮৮ পয়েন্ট বা দশমিক ৮১ শতাংশ। বাছাই করা ভালো কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক গত সপ্তাহে বেড়েছে ২৬ দশমিক ৪৬ পয়েন্ট বা ১ দশমিক ২১ শতাংশ। আগের সপ্তাহে সূচকটি কমে ১০ দশমিক ২৪ পয়েন্ট বা দশমিক ৪৭ শতাংশ।
প্রধান মূল্যসূচক ও ডিএসই-৩০ মূল্যসূচকের পাশাপাশি গত সপ্তাহে বেড়েছে ইসলামী শরিয়াহ ভিত্তিতে পরিচালিত কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই শরিয়াহ্ সূচক। গত সপ্তাহে এই সূচকটি বেড়েছে ১৬ দশমিক ২১ পয়েন্ট বা ১ দশমিক ২০ শতাংশ। আগের সপ্তাহে সূচকটি কমে ১০ দশমিক শূন্য ৮ পয়েন্ট বা দশমিক ৭৪ শতাংশ।
সবকটি মূল্যসূচক বাড়লেও ডিএসইতে কমেছে লেনদেনের পরিমাণ। কিছুদিন আগে যেখানে ডিএসইতে প্রতিদিন গড়ে হাজার কোটি টাকার ওপরে লেনদেন হয়েছে। সেই লেনদেন এখন ৪০০ কোটি টাকার ঘরে নেমে এসেছে। গত সপ্তাহের প্রতি কার্যদিবসে ডিএসইতে গড়ে লেনদেন হয়েছে ৪০৪ কোটি ৯২ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে প্রতিদিন গড়ে লেনদেন হয় ৪১৩ কোটি ৫৯ লাখ টাকা। অর্থাৎ প্রতি কার্যদিবসে গড় লেনদেন কমেছে ৮ কোটি ৬৭ লাখ টাকা বা ২ দশমিক শূন্য ৯ শতাংশ।
আর গত সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে মোট লেনদেন হয়েছে ২ হাজার ২৪ কোটি ৬৪ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে লেনদেন হয় ২ হাজার ৬৭ কোটি ৯৫ লাখ টাকা। সে হিসাবে মোট লেনদেন কমেছে ৪৩ কোটি ৩১ লাখ টাকা বা ২ দশমিক শূন্য ৯ শতাংশ। গত সপ্তাহে ডিএসইতে টাকার অঙ্কে সব থেকে বেশি লেনদেন হয়েছে জেনেক্স ইনফোসিসের শেয়ার। সপ্তাহজুড়ে কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন হয়েছে ১২৯ কোটি ২৪ লাখ ১৯ হাজার টাকা, যা মোট লেনদেনের ৬ দশমিক ৩৮ শতাংশ। দ্বিতীয় স্থানে থাকা বসুন্ধরা পেপারের শেয়ার লেনদেন হয়েছে ১১০ কোটি ৫৮ লাখ ৩৩ হাজার টাকা। ৮৪ কোটি ৩৮ লাখ ২৮ হাজার টাকা লেনাদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে আমরা নেটওয়ার্ক।
এছাড়া লেনদেনের শীর্ষ ১০০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- চাটার্ড লাইফ ইন্স্যুরেন্স, ওরিয়ন ফার্মা, নাভানা ফার্মাসিউটিক্যালস, সি পার্ল বিচ রিসোর্ট, বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশন, ইস্টার্ন হাউজিং এবং ইন্ট্রাকো রিফুয়েলিং স্টেশন।
অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) গত সপ্তাহে টাকার পরিমাণে লেনদেন হয়েছে ৪৮ কোটি ৮৭ লাখ ১৪ হাজার ৯৪৩ টাকার। আর আগের সপ্তাহে লেনদেন হয়েছিল ৫৩ কোটি ৯৫ লাখ ৫৩ হাজার ১৪২ টাকার। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে সিএসইতে লেনদেন ৫ কোটি ০৮ লাখ ৩৮ হাজার ১৯৯ টাকা কমেছে। সপ্তাহটিতে সিএসইর সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ৭৯.৯৫ পয়েন্ট বা ০.৪৩ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৮ হাজার ৪১৯.৬২ পয়েন্টে। সিএসইর অপর সূচকগুলোর মধ্যে সিএসসিএক্স ৪৮.৮১ পয়েন্ট বা ০.৪৪ শতাংশ, সিএসই-৫০ সূচক ১৩.৩২ পয়েন্ট বা ১.০১ শতাংশ এবং সিএসআই সূচক ১৮.৫৬ পয়েন্ট বা ১.৬১ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে যথাক্রমে ১১ হাজার ০৩৬.৪৮ পয়েন্টে, এক হাজার ৩৩০.০৭ পয়েন্টে এবং এক হাজার ১৭১.১০ পয়েন্টে। তবে সিএসই-৩০ সূচক ১.২৩ পয়েন্ট বা ০.০০৯ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ১৩ হাজার ২১৩.৫৯ পয়েন্টে। সপ্তাহজুড়ে সিএসইতে ২৪৯টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট লেনদেনে অংশ নিয়েছে। প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ৩৯টির বা ১৫.৬৬ শতাংশের দর বেড়েছে, ৪০টির বা ১৬.০৬ শতাংশের কমেছে এবং ১৬৯টির বা ৬৭.৮৭ শতাংশের দর অপরিবর্তিত রয়েছে।