শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় সমাবর্তনের অপেক্ষায় গ্র্যাজুয়েটরা মাথাব্যথা নেই উপাচার্যের
অর্থনীতি ডেস্ক : রাজধানীর শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (শেকৃবি) প্রতিষ্ঠার পর পার হয়েছে ২২ বছর। প্রতিবছর সমাবর্তনের নিয়ম থাকলেও প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে বিশ্ববিদ্যালয়টিতে সমাবর্তন হয়েছে মাত্র একবার। বর্তমানে সমাবর্তনের অপেক্ষায় রয়েছেন প্রায় পাঁচ হাজার গ্র্যাজুয়েট। সঠিক সময়ে সমাবর্তন না পেয়ে শিক্ষার্থী এবং শিক্ষকদের একাংশের আলোচনা-সমালোচনা ও ক্ষোভে সরগরম হয়ে উঠেছে বিশ্ববিদ্যালয়কেন্দ্রিক বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের গ্রæপ ও বিভিন্ন আড্ডার আসর।
জানা যায়, রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের উপস্থিতিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম এবং সর্বশেষ সমাবর্তন হয় ২০১৫ সালের ১৬ নভেম্বর। এতে ২০০১ সাল থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক, স্নাতকোত্তর ও পিএইচডি ডিগ্রি অর্জনকারী শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করার সুযোগ পান। এর পরে সাত বছর পেরিয়ে গেলেও দ্বিতীয় সমাবর্তনের মুখ দেখেননি পরবর্তী গ্র্যাজুয়েটরা। এতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সমাবর্তনের অপেক্ষায় থাকা গ্র্যাজুয়েটরা।
বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাবর্তন অনুষ্ঠানের সময় শেকৃবিতেও বিষয়টি শিক্ষার্থীদের মধ্যে আলোচনায় আসে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ২২ বছরে মাত্র একবার সমাবর্তন হওয়ায় অনেক শিক্ষার্থী অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে নিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের তুলনা টেনে সমালোচনায় মুখর হয়ে ওঠেন। স¤প্রতি অনুষ্ঠিত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) সমাবর্তন এবং স¤প্রতি বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) সমাবর্তনের নোটিশকে কেন্দ্র করে গত কিছুদিন ধরে আলোচনায় তুঙ্গে রয়েছে বিষয়টি। ১৯৩৮ সালে প্রতিষ্ঠিত ‘দি বেঙ্গল এগ্রিকালচারাল ইনস্টিটিউট’ ২০০১ সালে শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে উন্নীত হয়। সমাবর্তনের বিষয়ে শেকৃবির ৭১ ব্যাচের শিক্ষার্থী মো. আবু কাউসার বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা শেষে সব গ্র্যাজুয়েটের স্বপ্ন থাকে আনুষ্ঠানিক সমাবর্তনের। অনেক আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ চুকিয়েছি। তবে কালো গাউন আর মাথায় হ্যাট পরে আনুষ্ঠানিক সমাবর্তনের মাধ্যমে সনদ গ্রহণ স্বপ্নই রয়ে গেলো।
৭৭ ব্যাচের শিক্ষার্থী আরিফুর রহমান বলেন, ভর্তির পর থেকে শুধু ঢাবিসহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন দেখে যাচ্ছি। তাছাড়া বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলাতেও প্রতিবছর সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হয়। বাকৃবিতেও কিছুদিন পর তাদের সমাবর্তন অনুষ্ঠান করতে যাচ্ছে। আমরা কেন তাহলে রাজধানীর প্রাণকেন্দ্রে অবস্থান করেও সমাবর্তন থেকে বঞ্চিত হবো? বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেকেই সমাবর্তনের ছবি নিজের টাইমলাইনে প্রকাশ করেন। সত্যিই খুব ভালো লাগে অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন দেখতে। কিন্তু চরম হতাশ ও আফসোস লাগে যখন নিজেদের সমাবর্তনের কোনো তৎপরতা দেখি না। কবে যে নিজের বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তনের ছবি দেখব, বিশ্ববিদ্যালয়ে থাকা অবস্থায় আদৌ দেখতে পারব কী না জানি না। তবে দেখার ইচ্ছাটা প্রবল। তবে শিক্ষার্থীদের আগ্রহ থাকলেও এ বিষয়ে গুরুত্ব দিচ্ছেন না বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. শহীদুর রশীদ ভূঁইয়া। এ বিষয়ে তিনি বলেন, আমি উপ-উপাচার্য থাকা অবস্থায় একবার আমরা সমাবর্তন করেছি। এখানে খাবার নিয়ে পর্যন্ত ঝগড়াঝাঁটি হয়েছে। একটি বড় প্রোগ্রাম করতে যে ধরনের আন্তরিকতা দরকার তা সবার মাঝে দেখিনি। তিনি আরও বলেন, সমাবর্তন করা অনেক সময়সাপেক্ষ ব্যাপার। অনেক প্রস্তুতির দরকার। আমার সময়টা আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়নে ব্যয় করতে চাই। সমাবর্তনের চেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যান্য বিষয়গুলো নিয়ে বেশি ভাবছি। সূত্র : জাগোনিউজ