টিসিবি’র ফ্যামিলি কার্ডের পণ্যে সুবিধাভোগীদের খাদ্য চাহিদার ৮০ ভাগই পূরণ হয়না
মতিনুজ্জামান মিটু: নোয়াখালীতে খাদ্য নিরাপত্তা পরিস্থিতি বিষয়ক শীর্ষক নাগরিক সংলাপে এমন্তব্য করা হয়। টিসিবি’র ফ্যামিলি কার্ড কার্যক্রমের মাধ্যমে প্রাপ্তপণ্য দিয়ে সুবিধাভোগীদের মাসিক খাদ্য চাহিদার মাত্র ২০ শতাংশ পূরণ হয়। মাসের বাকি সময়ে এই সব পরিবারকে খাদ্য সংকটে থাকতে হয়। এছাড়াও এক পরিবারে একাধিক কার্ড বিতরণ, টিসিবিপণ্য বিক্রয় কেন্দ্রের দূরত্বের কারণে অতিরিক্ত ভাড়াখরচ, প্যাকেট পদ্ধতিতে পণ্য বিক্রির কারণে চাহিদামত খাদ্যপণ্য ক্রয় করতে নাপারার কারণে সুবিধাভোগীদের অতিরিক্ত অর্থ ব্যয় করতে হয়। সোমবার নোয়াখালীর বিআরডিবি মিলনায়তনে খাদ্য নিরাপত্তা পরিস্থিতিঃ প্রেক্ষিত খাদ্য পণ্যের মূল্য বৃদ্ধি ও সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচির বরাদ্দ’ শীর্ষক নাগরিক সংলাপে প্রকাশিত একটি সামাজিক নিরীক্ষা প্রতিবেদনে এই তথ্য প্রকাশ করে। উন্নয়ন সংগঠন পার্টিসিপেটরি রিসার্চ অ্যান্ড অ্যাকশান নেটওয়ার্ক-প্রান ও একশানএইড বাংলাদেশ যৌথভাবে এসংলাপের আয়োজন করে।
নাগরিক সংলাপে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নোয়াখালীর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক ইসরাত সাদমিন, কৃষি ব্যক্তিত্ব রেজাউল করিম সিদ্দিকী, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক সায়েদুল হক, জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক হুমায়ুন কবির, জেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মো. জসিম উদ্দিন, জেলা কৃষি বিপণন কর্মকর্তা বিজয় কুমার দাস, নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক ড. মেহেদি হাসান, ড. আবদুল কাইযুম মাসুদ, ড. মুহাম্মদ মহিনুজ্জামান। এছাড়াও বিভিন্ন সরকারি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা, স্থানীয় সরকার প্রতিনিধি, সরকারি বিভিন্ন প্রকল্পের সুবিধাভোগীরা সংলাপে অংশ নেন। সংলাপে টিসিবি ফ্যামিলি কার্ড কার্যক্রম : কতোটা পেলনিন্ম আয়ের মানুষ শিরোনামে একটি সামাজিক নিরীক্ষা প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন প্রানের কর্মসূচি সমন্বয় কারী উম্মে সালমা।
সংলাপে বক্তারা বলেন,‘মানুষের খাদ্যের অধিকার মানবাধিকার, তাই নাগরিকের খাদ্য অধিকার ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দায়িত্ব রাষ্ট্রের। করোনা মহামারীর কারণে দেশে নতুন দরিদ্র হয়েছে ৩ কোটিরও বেশি মানুষ। বর্তমানে খাদ্যপন্য মূল্য বৃদ্ধি মানুষের খাদ্য নিরাপত্তাকে আরও বেশি বিঘ্নিত করছে। ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক উৎপাদকরা কৃষিপণ্যের ন্যায্য মূল্য না পাওয়ার কারণে আরও দারিদ্র্য অবস্থায় উপনীত হচ্ছে। এজন্য, পারিবারিক কৃষিকে প্রণোদনা দেওয়া, রমজানকে সামনে রেখে স্থানীয় বাজার তদারকি জোরদার করা, দরিদ্র্যদের জন্য রেশনকার্ড প্রবর্তন করা, টিসিবি খাদ্য সহায়তা কার্ডের পরিমাণ বৃদ্ধি করা, কার্ড বন্টনে সুশাসন নিশ্চিত, টিসিবিপন্য বিক্রির সময় এবং সুদির্দিষ্ট করে তা প্রচার করা, বিক্রয়কেন্দ্রের সংখ্যা বৃদ্ধি এবং সুবিধাভোগী বাছাইয়ে দলীয় দৃষ্টিভঙ্গি ত্যাগ করা, দেশের সাধারণ জনগণেরওপর মূল্যের অভিঘাত প্রশমন ও খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতে সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী বৃদ্ধি, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা বৃদ্ধি, দেশীয় উৎপাদন বৃদ্ধি, নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য প্রান্তিক ও শ্রমজীবি আয়ের মানুষের কাছে পৌঁছানোসহ বহুমুখী পদক্ষেপ গ্রহণের সুপারিশ করা হয়।