ফরিদপুর প্রতিনিধি : ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলার চতুল ইউনিয়নের হাসামদিয়া গ্রামে ব্যক্তি উদ্যোগে গড়ে তোলা হয়েছে কৃষি সংগ্রহশালা। কৃষিকাজে ব্যবহারের নানা উপকরণ স্থান পেয়েছে এই সংগ্রহশালায়।
ঢেঁকি, মই, লাঙল, তেল ভাঙানো ঘানিসহ হারিয়ে যাওয়া কৃষি উপকরণ রয়েছে এতে। সঙ্গে রয়েছে কৃষিবিষয়ক সমৃদ্ধ একটি পাঠাগারও।
ব্যতিক্রমী এ সংগ্রহশালা স্থানীয় ও বিভিন্ন এলাকা থেকে ঘুরতে আসা মানুষের কাছে বিনোদনকেন্দ্রে পরিণত হয়েছে। কৃষি যন্ত্রপাতির সঙ্গে পরিচিত হতে শিক্ষার্থীসহ গবেষকরাও আসেন এখানে।
স¤প্রতি সরেজমিনে দেখা গেছে, ছন দিয়ে সাজানো গেট। আর গেট পার হলেই দেখা মেলে কৃষিকাজের নানা উপকরণ, দড়ি পাকানোর ঢ্যারা, ঢেঁকি, আম পাড়ার জালি, লাঙল-জোয়াল, গরুর গাড়ির ছই, মাছ ধরার চাঁই থেকে শুরু করে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের কৃষি উপকরণে ঠাসা মাটির ঘর। পাশেই রয়েছে কৃষকের স্বাস্থ্য শিক্ষা ও চাষবাসের জন্য থরে থরে সাজানো দুর্লভ সব বই নিয়ে কৃষি পাঠাগার।
জাকারিয়া বেগ তার মাটির বাড়িটিকেই যেন কৃষি জাদুঘরে রূপ দিয়েছেন। ১০ বছর ধরে দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে কৃষিকাজে ব্যবহৃত নানা উপকরণ সংগ্রহের মাধ্যমে গড়ে তুলেছেন এটি। কৃষিভিত্তিক জ্ঞান অর্জনে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন এলাকা থেকে এই সংগ্রহশালা দেখতে আসে।
উদ্যোক্তা জাকারিয়া বেগ বলেন, নতুন প্রজন্মকে কৃষির সঙ্গে যুক্ত করা আর কৃষকের মধ্যে বাস্তবভিত্তিক জ্ঞান দিতে এটি গড়ে তোলা। এখানকার কৃষি পাঠাগারে দুর্লভ অনেক বইও সংগ্রহ করা হয়েছে।
কিভাবে এগুলো সংগ্রহ করছেন জানতে চাইলে জাকারিয়া বেগ বলেন, আমি ছোটবেলা থেকেই বাঙালি সংস্কৃতি নিয়ে কাজ করছি। এখনো সংগ্রহ করে চলেছি। আমার এখানে প্রায় ৩০০ উপকরণ সংগৃহীত আছে। যেখানে আদি বাংলার কোনো উপকরণ চোখে পড়ে, সেগুলো সংগ্রহ করে আমার কৃষি জাদুঘরে সাজিয়ে রাখি। কৃষি ও কৃষকের প্রতি ভালোবাসার এমন দৃষ্টান্তকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছে কৃষি বিভাগ ও উপজেলা প্রশাসন।
এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা প্রিতম হোড় বলেন, তার এই কাজ কৃষি উন্নয়নে সহায়ক ভ‚মিকা রাখবে বলে মনে করি। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মোশারেফ হোসাইন বলেন, ‘গাঁওগেরামে গড়ে ওঠা কৃষি সংগ্রহশালাকে ভবিষ্যতে কিভাবে আরো সমৃদ্ধ করা যায়, সে প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। কৃষি বিভাগের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে এরই মধ্যে কথা বলা হয়েছে।