রমজানে এক মাসের পণ্য একসঙ্গে না কিনলে বাজারে সমস্যা হবে না : বাণিজ্যমন্ত্রী
সোহেল রহমান: সরবরাহ পরিস্থিতি স্বাভাবিক ও দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে রমজান শুরুর আগে একসঙ্গে পুরো মাসের পণ্য না কেনার জন্য ভোক্তাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি।
বুধবার সচিবালয়ে ‘দ্রব্যমূল্য ও বাজার পরিস্থিতি পর্যালোচনা সংক্রান্ত টাস্কফোর্স কমিটি’র পঞ্চম সভা শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ আহ্বান জানান। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ-এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান ফজলুর রহমান উপস্থিত ছিলেন।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, আমরা সব সময় লক্ষ্য করছি যে, রমজানের প্রথম সাতদিন-ই বেশি ক্রাইসিস। এ সময় পণ্য কেনায় যে উপচেপড়া ভিড় থাকে, এর দরকার নেই। সব মানুষ যদি একদিনেই মনে করে সব কিনে ফেলবে, তাহলে কীভাবে হবে? সাপ্লাইটা তো ঠিক রাখতে হবে। হুট করে বেশি পণ্য কেনার দরকার নেই। এটা সারা মাস ধরেই পাওয়া যাবে। ধরুন, দোকানে আছে ১০০ কেজি মাল, যখন ১০ জন ক্রেতা একসঙ্গে গিয়ে প্রত্যেকে ১০০ কেজি করে কিনতে চায় তখন মনে হয় সংকট, যেটা আর্টিফিশিয়াল। এটা কিন্তু একটা বড় ধরনের ঝামেলা।
এ বিষয়ে গণমাধ্যমের সহযোগিতা কামনা করে তিনি বলেন, আপনারা কাইন্ডলি বলুন যে, ভোক্তারা যেন তড়িঘড়ি না করেন। এটা একটা পজিটিভ মেন্টালিটি। তাহলে বাজারে সমস্যা হবে না। রমজানের আগে থেকে সাতদিনের পণ্য কিনে নিলে পরের ৭-৮ দিন চলে যায়। তখন দেখা যায় বাজার স্বাভাবিক হয়ে আসছে। আমরা সর্বাত্মক চেষ্টা করছি, যেন রমজান মাসে বাজারে এ সমস্যাটা না হয়।
বাণিজ্যমন্ত্রী জানান, বৈঠকে রমজানকে সামনে রেখে ছয়টি নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মজুত, সরবরাহ ও মূল্য স্বাভাবিক রাখতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। বিগত বছরগুলোর অভিজ্ঞতার আলোকে চাহিদা মোতাবেক ভোজ্য তেল, চিনি, মশুর ডাল, ছোলা, পেঁয়াজ, খেজুর, চাল-গম-এর মতো নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। চিনির মজুত পরিস্থিতি ভালো। তবে দাম একটু বেশি। রমজানে দাম নিয়ে কোনো সমস্যা হবে না। অনেক সময় ছোটো সংকটকে আমরা বড় করে দেখি। আমাদের ভোক্তা অধিকার সক্রিয় রয়েছে।
প্রসঙ্গক্রমে তিনি বলেন, চলমান বিশ^ পরিস্থিতিতে আমদানি নির্ভর পণ্যগুলো আমদানির জন্য এলসি খোলার ক্ষেত্রে কিছু সমস্যা হচ্ছে। বিষয়টিকে অগ্রাধিকার দিয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় কাজ করছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য আমদানিতে এলসি খোলার সুবিধার্থে নির্দিষ্ট পরিমাণ ডলার রাখার জন্য ব্যবসায়ীরা প্রস্তাব দিয়েছেন। অনেক ব্যবসায়ী চিনির ওপর আরোপিত ট্যাক্স ও ভ্যাট প্রত্যাহের দাবি জানিয়েছেন। দেশের মানুষের সুবিধার জন্য বিষয়গুলো নিয়ে সরকার সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, আমরা প্রতিবেশি দেশ ভারত থেকে যে সকল পণ্য আমদানি করে থাকি সেগুলো পূর্বে না জানিয়ে হঠাৎ করে রপ্তানি বন্ধ না করার বিষয়ে ভারত সরকারকে জানানো হয়েছে। এছাড়া, বাংলাদেশের চাহিদা মোতাবেক নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য সরবরাহের নিশ্চয়তা দিয়েছে ভারত সরকার। সবদিক বিবেচনায় বলা যায়, আগামী দিনগুলোতে আমাদের নিত্যপ্রয়োজনীয় কোন পণ্যের সংকট হবে না, মূল্য স্বাভাবিক থাকবে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে বাজার অভিযান জোরদার করা হবে।