সম্পদ পাচার আর অবাস্তব পরিকল্পনার কারণে দেশের মানুষ গরিব
বিডি রহমতউল্লা
বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক অবস্থাটা কিভাবে প্রকাশ করা যায় ? দারুন একটা সংকটময় অবস্থা ধারন করেছে । আমরা সবাই—-যারা রাষ্ট্রের কোন সাতে-পাঁচে নাই-নিরীহ জনগন তাদের দিনগুলো কি এক নিদারুন সংকটে কাটছে !! এক অব্যক্ত হাহাকার নিয়ে সবাই দিন গুজরান করছে ! খাদ্য, চিকিৎসা,রোজকার চলনে বলনে, বসবাসস্থানে কোথায় কে সামাল দিতে পারছে বলতে পারবেন ? সরকারী হিসেবেই আগষ্টে মূল্যস্ফীতি ৯.৫২%,সেপ্টেম্বরে ৯.১%.। মে ২০১১ সালের পর যা আর ৯%এর উপরে যায়নি [প্রথম আলো,১২ অক্টোবর-২০২২]। দুর্নীতি মনে হচ্ছে শরীরের এক জরুরী অঙ্গ হয়ে উঠেছে । যে দপ্তরেই যান না কেন, ঘুষের বিষয়টা আগেই ফয়সালা করে নিতে হবে । তা না হলে সরাসরি আপনাকে ওরা — ওয়া আলাইকুম আস্সালাম বলে দিবে । এটা বলবে প্রচন্ড সাহস ও নির্দেশের সুরেই । অবস্থা এতই খারাপ না হলে এটা কি সম্ভব যে জাহাঙ্গীনগর বিশ^বিদ্যালয়ের একদল শিক্ষক ভর্তি পরীক্ষার ফি, যা বিশ^বিদ্যালয়ের প্রাপ্য, তা না দিয়ে নিজেরা ভাগ বাটোয়ারা করে নিয়ে নেয় !![ প্রথম আলো-১২ অক্টোবর ২০২২] । দেশের এ হালহকিকত কেনো হলো ? আমরা ৭১-এ যখোন স্বাধীনতা যুদ্ধে নেমেছিলাম তখোন কি দেশের এ অবস্থা হবে তা ভাবতে পেরেছিলাম ? স্বাধীনতা, সাম্য, মুক্তি আর গনতস্ত্রের এ বিপর্য্যস্ত অবস্থা দেখে আমরা পর্য্যুদস্ত, কাহিল, দিশেহারা !! সম্পদ প্রাপ্তি ও প্রাপ্ত সম্পদের ব্যবহার যোগ্যতা বাড়িয়ে দেশের অর্থ সম্পদ বাড়াবার দক্ষতা, মেধা, সুজনশীল চিন্তা চেতনা কি জাতীয় নেতাদের আছে ? স্পষ্টতই তা নেই । প্রাপ্তি ও প্রাপ্তব্য সম্পদে আমাদের দেশ কিন্তু দরিদ্র নয়। বরং বলা যায় অনেক ধনী । কিন্ত সম্পদ পাচার, লুন্ঠন, নির্যাতন, অত্যাচার, ভুল ও অবাস্তব পরিকল্পনায় প্রায় আপামর জনতা দরিদ্র বনে গেছে । এক মহা আর্থিক সংকটে জনগনের দিন গুজরান হচ্ছে । আর এদিকে একদল হায়েনা, শকুনের দল, সম্পদ লুটেরা বিমানের অত্যন্ত উঁচু শ্রেনী বিজনেস ক্লাসে বিদেশে প্রমোদ ভ্রমন ও অর্থ পাচারে মত্ত । যে বিমানে ইকোনমী শ্রেনীর ভাড়া ৮০,০০০/টাকা সে বিমানের বিজনেস ক্লাসের ভাড়া ৫/৫.৫০ লাখ । লুটেরাদের ভ্রমণের চাপে বিমানে বিজনেস ক্লাসের সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে, বিমানের সংখ্যাও বাড়ানো হয়েছে। এদের অর্থ পাচারের ফলে দেশে বিদেশী মুদ্রার সংকট বিশেষ করে ডলারের সংকট আরো তীব্রতর হচ্ছে। এল সি খুলা যাচ্ছে না!![ বণিক বার্তা,১২ অক্টোবর ২০২২] আর এদিকে সুইস ব্যাংক ৯০টি দেশের অর্থ পাচারকারীদের নামের তালিকা প্রকাশ করেছে যার মধ্যে বাংলাদেশের নাম নেই । ভাববেন না যে বাংলাদেশের লুটেরা, খুনী অর্থ পাচারকারীরা ভালো হয়ে গেছে! বাংলাদেশের প্রচুর কুখ্যাত ক্রিমিনাল ”ধনী” শ্বাপদেরা সুইস ব্যাংকে টাকা পাচার করেই যাচ্ছে । সুইস ব্যাংকে এরা, এই জারজেরা এক বছরে আরো প্রায় ৩০০০ কোটি টাকা বেশী জমা করেছেন। ২০২০ সালে যেখানে বাংলাদেশীদের জমানো টাকা ছিলো ৫৩৪৭ কোটি ২০২১ সালে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৮২৭৫ কোটি টাকা । তবুও বাংলাদেশের নাম ৯০টি দেশের নামের মধ্যে না থাকার বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে বাংলাদেশ ফিনান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট [ ইঋওট] জানায় বাংলাদেশ ও সুইস সরকারের মধ্যে স্বয়ংক্রিয় তথ্য বিনিময় চুক্তি [অঊঙও] নেই বিধায় বাংলাদেশী লুটেরা অর্থ পাচারকারীদের নাম প্রকাশ করা হয় না [ প্রথম আলো-১২ অক্টোবর ২০২২] !! জনগনকে এ পশুদের হাত থেকে রক্ষা করতে আমাদের মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে হবে। (সাবেক ডিজি পাওয়ারসেল)