পাকিস্তানে গমের জন্য মারামারি, কাড়াকাড়ি পেঁয়াজ-মুরগির দাম আকাশছোঁয়া
রাশিদুল ইসলাম: পাকিস্তানে খাদ্যসঙ্কট ও মূল্যবৃদ্ধি চরম সীমায় পৌঁছেছে। আর্থিক মন্দায় জর্জরিত। দেশে গমের তীব্র সঙ্কট দেখা দিয়েছে। বাজারে হাজার হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে আটার বস্তা। গম কিনতে মারামারি, কাড়াকাড়ি শুরু হয়ে গেছে বাজারগুলিতে। কোথাও লুটপাটের চেষ্টা চলছে। মারামারি করে গম কিনতে গিয়ে পদপিষ্ট হয়ে মৃত্যুর ঘটনাও ঘটছে। এদিকে পেঁয়াজ, মুরগির মাংসের দাম আকাশছোঁয়া। নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস কিনতেও হিমশিম খেতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে। ওয়াল
স¤প্রতি একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। সেখানে দেখা গেছে, আটার বস্তা নিয়ে কাড়াকাড়ি চলছে। কাতারে কাতারে মানুষ হামলে পড়ছে সামান্য আটার জন্য। ধাক্কাধাক্কি, মারামারি চলছে। আবার এমনও দেখা গেছে, গম বস্তা বোঝাই লরির পিছনে বহু মানুষ ঝুলতে ঝুলতে যাচ্ছে। গমের বস্তা তুলে নেওয়ার চেষ্টা করছে।
ইসলামাবাদ এবং পেশোয়ারে ১০ কেজি ময়দার বস্তা বিক্রি হচ্ছে দেড় হাজার টাকা। এক দিকে ময়দার আকাল, অন্য দিকে আটা, ময়দার আকাশছোঁয়া দামে বিধ্বস্ত মানুষজন।
আটার কল এবং পাকিস্তানের খাদ্য দফতরের মধ্যে সমন্বয়ের অভাবের কারণেই সঙ্কট তৈরি হয়েছে। তা ছাড়া পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশ থেকে গমের জোগানও কমেছে। সে কারণে সরকারি দোকান থেকে ভর্তুকি দেওয়া গমের বস্তা কেনার জন্য লাইন দিচ্ছেন সাধারণ মানুষ। এক্সপ্রেস ট্রিবিউন জানিয়েছে, সিন্ধু সরকারের ভর্তুকিযুক্ত ময়দা বিক্রি করার সময় মিরপুরে পদপিষ্ট হয়ে একজন মারা গেছেন।
গত চারদিনে পেঁয়াজের দাম প্রায় ৫০০ শতাংশ হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। এছাড়া চাল, ডাল থেকে শুরু করে তেল, পাউরুটি, দুধ সহ জ্বালানির দামও অনেকাংশে বেড়েছে। গত বছরের ৬ জানুয়ারি পাকিস্তানে এক কেজি পেঁয়াজের দাম ছিল ৩৬ টাকার মতো। আর এবছরের ৫ জানুয়ারি পেঁয়াজের দাম ৫০০ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে কেজি প্রতি ২২০ টাকারও বেশি। শুধু পেঁয়াজ নয়, চাল, ডাল, নুন, সহ সবকিছুরই দাম বেড়েছে। মুরগির মাংস ধরাছোঁয়ার বাইরে হয়ে গেছে।
করাচিতে আটা ১৪০ টাকা থেকে ১৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। ইসলামাবাদ ও পেশোয়ারে ১০ কেজি আটা ১ হাজার ৫০০ টাকা কেজি, ২০ কেজি আটা ২ হাজার ৮০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। গত দু’সপ্তাহে ১৫ কেজি আটার দাম ৩০০ টাকা বেড়েছে। খাইবার পাখতুনখোয়ায় খোলা বাজারে এক বস্তা আটার দাম ৩,১০০ টাকা যা ভাবনাচিন্তারও বাইরে।
ভারতীয় সংবিধানের ৩৭০ ধারা রদের পরে ভারতের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে প্রায় ইতি টেনেছে পাকিস্তান। সীমান্ত পেরিয়ে ব্যবসা-বাণিজ্যও বন্ধ। ক‚টনেতিক স্তরে ভারতের সঙ্গে পাক সরকার সম্পর্ক ছিন্ন করার সিদ্ধান্তে নাজেহাল সেখানকার সাধারণ মানুষ। ভাঙনের মুখে পাকিস্তানের অর্থনীতি। আটা-ময়দা, জীবনদায়ী ওষুধ, এমনকী টান পড়েছে আনাজ থেকে নিত্য ব্যবহারের পণ্যেও। ভারত থেকে পেঁয়াজ ও অন্যান্য আনাজ আমদানি বন্ধ হওয়ায় টান পড়েছে হেঁশেলেও।