৬ বিলিয়ন থেকে বেড়ে জিডিপি এখন ৪৬৫ বিলিয়ন : অর্থমন্ত্রী
মাসুদ মিয়া: অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, স্বাধীনতার পর থেকে দেশের উন্নয়ন শুরু। ১৯৭২ সালে জিডিপি ছিল মাত্র ৬ দশমিক ৩ বিলিয়ন, বর্তমান সেটা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৬৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে। গতকাল রোববার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ‘বাংলাদেশ-বিশ্বব্যাংকের ৫০ বছরের বন্ধুত্ব উদযাপন অনুষ্ঠান’-এ প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
অর্থমন্ত্রী বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশ ৩৫তম বৃহৎ অর্থনীতির দেশ। আমাদের দারিদ্র্যের হার কমে হয়েছে ২০ শতাংশ। মাথাপিছু আয় বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৮২৪ মার্কিন ডলারে। গড় আয়ু বেড়ে হয়েছে ৭৩ বছর। বাংলাদেশের স্থপতি বঙ্গবন্ধু। আর মর্ডান বাংলাদেশের স্থপতি শেখ হাসিনা। এটা নিয়ে কারোর প্রশ্ন নেই। বাংলাদেশের উন্নয়নে বিশ্বব্যাংক অনেক সহায়তা করছে।
ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা তুলে ধরে অর্থমন্ত্রী বলেন, আমাদের পরবর্তী টার্গেট ২০৩১ সালে বাংলাদেশ উচ্চ মধ্যম আয়ের দেশ হবে। ২০৪১ সালে বাংলাদেশ স্মার্ট, ডেভেলপড বাংলাদেশ হবে। এসময় বিশ্বব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (অপারেশন) এক্সেল ভন ট্রটসেনবার্গ, বিশ্বব্যাংকের দক্ষিণ এশীয় অঞ্চলের ভাইস প্রেসিডেন্ট মার্টিন রাইজার, অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব শরিফা খান, বাংলাদেশ ও ভুটানে নিযুক্ত বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর আবদৌলায়ে সেক প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
এদিকে গত ৫০ বছরে ঋণ ও অনুদান হিসেবে বাংলাদেশকে তিন হাজার ৮০০ কোটি ডলার দিয়েছে বিশ্বব্যাংক। বিশ্বব্যাংক সর্বপ্রথম স্বাধীন বাংলাদেশে ১৯৭২ সালের ২৪ নভেম্বর যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ পুনর্গঠনের একটি প্রকল্পে পাঁচ কোটি ডলার সহায়তা দেয়। এটিই বাংলাদেশকে সংস্থাটির প্রথম সহায়তা। এসব প্রকল্পের মধ্যে রয়েছে এক হাজার ৬০০ কিলোমিটার পল্লী সড়ক নির্মাণ, এক হাজার সাইক্লোন শেল্টার ও ৭০০ কিলোমিটার বাঁধ নির্মাণ করা হয়েছে। এ ছাড়া বড় অবকাঠামো বঙ্গবন্ধু বহুমুখী সেতু (যমুনা সেতু) এবং ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক (দুই লেন) নির্মাণে অর্থায়ন ছিল বিশ্বব্যাংকের। তবে সংস্থাটি সত্তরের দশকে মূলত পুনর্বাসন ও পুনর্গঠন প্রকল্পেই বেশি অর্থায়ন করেছে।
আশির দশকে কৃষি খাতে ব্যাপক বিনিয়োগ করে বিশ্বব্যাংক। ১৯৭৮ থেকে ১৯৯৪ সাল পর্যন্ত সংস্থাটি এ দেশের অর্থনীতি ও ব্যবসা-বাণিজ্য খাত সংস্কারে আর্থিক ও কারিগরি সহায়তা দেয়। বিশ্বব্যাংকের সহায়তায় কয়েক দশক ধরে প্রাথমিক শিক্ষা উন্নয়ন কর্মসূচি (পিইডিপি) বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। এ ছাড়া নারী শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তি এখন একটি সফল প্রকল্প। জলবায়ু পরিবর্তনের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় দুর্যোগপ্রবণ এলাকায় এক হাজারের বেশি সাইক্লোন শেল্টার বানানো হয়েছে সংস্থাটির অর্থায়নে। ৭০০ কিলোমিটার বাঁধ নির্মাণ করা হয়েছে। গত ৫০ বছরে বাংলাদেশকে সব মিলিয়ে ৩ হাজার ৮০০ কোটি ডলার দিয়েছে বিশ্বব্যাংক। এ অর্থ কাজে লেগেছে দারিদ্র্য বিমোচনে। রাস্তাঘাট, ভবনসহ বড় অবকাঠামো নির্মাণেও অর্থ দিয়েছে। এ ছাড়া শিক্ষা, স্বাস্থ্য, সামাজিক নিরাপত্তা, পরিবেশ রক্ষা, কর্মসংস্থানসহ বিভিন্ন খাতে বিশ্বব্যাংক দশকের পর দশক অর্থ দিয়ে আসছে।