অভ্যান্তরিন চাহিদার ৮০% প্লাস্টিক খেলনা দেশে তৈরি হয়, লেখতে হয় মেডইন চায়না : বিপিজিএমইএ’র সভাপতি
মো. আখতারুজ্জামান : দেশের প্লাস্টিক খেলনা বাজারে আমাদের ইমেজ সংকট রয়েছে। ফলে দেশে তৈরি হলেও লিখতে হচ্ছে মেইড ইন চায়না। চায়না থেকে ২০ শতাংশ প্লাস্টিক খেলনা আমদানী করা হয়। বাকি ৮০ শতাংশ দেশেই উৎপাদিত বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ প্লাস্টিক দ্রব্য প্রস্তুতকারক ও রপ্তানীকারক এসোসিয়েশনের (বিপিজিএমইএ) সভাপতি সামিম আহমেদ।
মঙ্গলবার চার দিনব্যাপী ১৫তম ইন্টারন্যাশনাল প্লাস্টিক ফেয়ার-২০২৩ উপলক্ষ্যে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ তথ্য জানান।
আইপিএফ-২৩ উপলক্ষে রাজধানী পল্টনের বিপিজিএমইএ অফিসে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন- বিপিজিএমইএ সাবেক সভাপতি মো. ইউসুফ আশরাফ, বিপিজিএমইএ সাবেক সভাপতি ফেরদৌস ওয়াহেদ, বিপিজিএমইএ সাবেক সভাপতি শাহেদুল ইসলাম হেলাল, বিপিজিএমইএ সিনিয়র সহ-সভাপতি গিয়াসউদ্দিন আহমেদ, বিপিজিএমইএ সহ-সভাপতি কে এম ইকবাল হোসেন, বিপিজিএমইএ সহ-সভাপতি কাজী আনোয়ারুল হক আরও অনেকে।
জানানো হয়, ঢাকার ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরা (আইসিসিবি) তে আগামী ২২ ফেব্রæয়ারি থেকে ২৫ ফেব্রæয়ারি পর্যন্ত এই মেলা চলবে। বিশ্বের ২১টি দেশ থেকে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান আন্তর্জাতিক এই ফেয়ারে অংশগ্রহণ করবে। প্রদর্শনীতে যে সকল দেশ অংশগ্রহণ করছে তারমধ্যে চীন, তাইয়ান, ভারত, বাংলাদেশ, ভিয়েতনাম, শ্রীলংকা, পাকিস্তান, ইন্দোনেশিয়া, দক্ষিণ কোরিয়া, বেলজিয়াম, কানাডা, ইউএসএ, ফ্রান্স, হংকং, ইটালি, জাপান, মালয়েশিয়া, অস্ট্রিয়া, সিঙ্গাপুর, তুরস্ক, সংযুক্ত আরব আমিরাত উল্লেখযোগ্য।
বিপিজিএমইএ সভাপতি সামিম আহমেদ বলেন, প্লাস্টিকের স্থানীয় বাজার বড় হচ্ছে। এর পাশাপাশি রপ্তানী বাজারও বাড়ছে। আগামীতে দেশে পেট্রোকেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রি গড়ে উঠবে। ইতোমধ্যে বেশ কয়েকটি রি-সাইক্লিং ইন্ডাস্ট্রি কাজ করছে। অটোমোবাইল এবং ইলেকট্রিক ও ইলেকট্রনিকস খাতে প্লাস্টিক ব্যবহার বাড়ছে। ভবিষ্যতে এ সেক্টর চাহিদা অনুযায়ী বিস্তৃত হবে। সেজন্য আমাদেরকে সেইভাবে প্রস্তুতি নিতে হবে।
তিনি বলেন, তবে গার্মেন্টস সেক্টর যে ধরণের সুবিধা ভোগ করছে আমরা সেরকম সুবিধা পাচ্ছি না। এখন সকল ইন্ডাস্ট্রি গড়ে উঠছে কমপ্লায়েন্স ইস্যু এবং পরিবেশ ইস্যু প্রতিপালনের মাধ্যমে। সেক্টরের উন্নয়নে ভাল পলিসি এবং তা বাস্তবায়নে সরকারের সমর্থন প্রয়োজন রয়েছে। আগামী দিনের চাহিদা মাথায় রেখেই তাই আমরা অগ্রসর হচ্ছি।
সভাপতি বলেন, প্লাস্টিক খেলনা আইটেম এবং ক্রোকারিজ আইটেম এর উপর থেকে ভ্যাট প্রত্যাহার করা প্রয়োজন বলে আমরা মনে করি। প্লাস্টিক শিল্প খাতে কর অবকাশ সুবিধা প্রদান করা প্রয়োজন। স্টেকহোল্ডারদের সাথে আলোচনাক্রমে সার্বজনীন প্যাকেজিং এ্যাক্ট প্রণয়ন করা প্রয়োজন। পাটজাত মোড়কের বাধ্যতামূলক ব্যবহার আইন-২০১০ পূণর্মূল্যায়নপূর্বক ওভেন খাতকে বিকাশের সুযোগ প্রদান করা প্রয়োজন। সেইসঙ্গে তিনি রিসাইকিলিং পণ্যের উপর ভ্যাটন প্রত্যাহারের দাবি জানান।
সামিম আহমেদ বলেন, বর্তমানে রপ্তানীতে প্লাস্টিক পণ্যের অবস্থান ১২তম। কিন্তু প্রচ্ছন্ন রপ্তানীর (যার মধ্যে গার্মেন্টস এক্সেসরিজ উল্লেখযোগ্য) হিসাব এর সাথে যুক্ত হলে রপ্তানীতে প্লাস্টিক পণ্যের অবস্থান হবে ৬ষ্ঠ। পরিসংখ্যানে দেখা যায়, বিগত ২০১০-১১ অর্থবছরে মোট প্লাস্টিক রপ্তানী ছিল ৬৮.৭৬ মিলিয়ন ইউএস ডলার। আর ২০২১-২০২২ অর্থবছরে এসে রপ্তানী দাঁড়িয়েছে ১৬৬.২৫ মিলিয়ন ইউএস ডলার। ২০২১-২০২২ অর্থবছরে রপ্তানি টার্গেট ছিল ১২৭.০০ মিলিয়ন ইউএস ডলার আর অর্জিত হয়েছে ১৬৬.২৫ মিলিয়ন ইউএস ডলার । অর্থ্যাৎ ৪৪ শতাংেশের বেশী প্রবৃদ্ধি হয়েছে।