প্রাইমার্কের সাথে বাণিজ্যমন্ত্রীর বৈঠক তৈরী পোশাকের উপযুক্ত মূল্য নিশ্চিতের আহ্বান
মো. আখতারুজ্জামান : বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন, প্রাইমার্ক আমাদের বড় ক্রেতা, বিশ^খ্যাত এ পোশাক ব্র্র্যান্ড বাংলাদেশ থেকে আরও বেশি তৈরী পোশাক ক্রয় করবে বলে বিশ^াস করি, একই সাথে এ শিল্প কে টিকিয়ে রাখতে, এ শিল্পের সাথে জরিত জনবলকে উৎসাহ দিতে তৈরী পোশাকের উপযুক্ত মূল্য নিশ্চিত করা প্রয়োজন।
বুধবার বাণিজ্যমন্ত্রী বাংলাদেশ সচিবালয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে প্রাইমার্কের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা পাউল মার্চেন্টের নেতৃত্বে বাংলাদেশে সফররত যুক্তরাজ্য ভিত্তিক বিশ^খ্যাত তৈরী পোশাক ব্র্র্যান্ড প্রাইমার্ক অ্যান্ড অ্যাসোসিয়েটের একটি প্রতিনিধি দলের সাথে মতবিনিময়ের সময় এ সব কথা বলেন। এ সময় প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান ফজলুর রহমান উপস্থিত ছিলেন।
টিপু মুনশি বলেন, বাংলাদেশ তৈরী পোশাক শিল্পে দক্ষতা অর্জন করেছেন। বর্তমানে বাংলাদেশ পৃথিবীর মধ্যে দ্বিতীয় বৃহত্তমত তৈরী পোশাক রপ্তানি কারক দেশ। বাংলাদেশের চল্লিশ লাখের বেশি শ্রমিক তৈরী পোশাক শিল্পে কর্মবান্ধব পরিবেশে কাজ করছে। এর মধ্যে প্রায় ৬৫ ভাগই নারী শ্রমিক। গতবছর ৪২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের তৈরী পোশাক বাংলাদেশ রপ্তানি করেছে, ২০৩০ সালে এ রপ্তানির পরিমাণ ১০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার নির্ধারণ করে আমরা কাজ করছি। বাংলাদেশ এখন চাহিদা মোতাবেক যে কোন পরিমান পণ্য যথা সময়ে সরবরাহ করার সক্ষমতা অর্জন করেছে। আমরা রপ্তানি বাণিজ্যে বড় লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে কাজ করে যাচ্ছি।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের তৈরী পোশাক শিল্পের উন্নয়নে সরকার প্রয়োজনীয় সবধরনের সহযোগিতা প্রদান করছে। তৈরী পোশাক শিল্পের কর্মীদের সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য নিয়মিত প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে, পণ্যের মান এবং ডিজাইন আধুিনক করা হচ্ছে। বাংলাদেশে তৈরী পোশাক শিল্পে কিছু বিদেশী দক্ষকর্মী ছিল, এখন আমাদের প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত দক্ষ কর্মীরাই কাজ করছে। শিল্প বিকাশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায় দেশের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ১০০টি স্পেশাল ইকোনমিক জোন গড়ে তোলার কাজ দ্রæত এগিয়ে চলছে। অনেক গুলোর কাজ এখন শেষ পর্যায়ে। আগামী ২০২৬ সালে বাংলাদেশ এলডিসি গ্রাজুয়েশন করবে, তখন বিভিন্ন দেশ থেকে বাণিজ্য সুবিধা পেতে পিটিএ বা এফটিএ’র মত বাণিজ্য চুক্তি করার জন্য আমরা কাজ করছি।
প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান ফজলুর রহমান বলেন, প্রতিযোগিতা মূলক বিশ^ বাণিজ্যে বাংলাদেশ দক্ষতার সাথে এগিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশ বিগত যে কোন সময়ের চেয়ে বর্তমানে বিশ^মানের ও আধুনিক তৈরী পোশাক তুলনামূলক কম দামে সরবরাহ করতে সক্ষম। কোভিড-১৯ পরিস্থিতিতে অনেক ক্রেতা ক্রয় আদেশ বাতিল করার কারনে আমাদের দেশের ব্যবসায়ীরা ক্ষতির মধ্যে পরেছেন, সরকারের সহযোগিতায় তৈরী পোশাক শিল্পসহ দেশের অর্থনীতির চাকা চলমান ছিল। বাংলাদেশের তৈরী পোশাকের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করা প্রয়োজন। বাংলাদেশ এখন যে কোন পরিমান পণ্য সরবরাহ করার সক্ষমতা অর্জন করেছে।
প্রাইমার্কের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা পাউল মার্চেন্ট বলেন, বাংলাদেশ বাণিজ্য ক্ষেত্রে আমাদের কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশ তৈরী পোশাক সেক্টরে অনেক উন্নতি করেছে। গ্রিণ ফ্যাক্টরিতে কর্মবান্ধব পরিবেশে বাংলাদেশ তৈরী পোশাক উৎপাদন করছে। শিল্প ক্ষেত্রে প্রযুক্তির ব্যবহার আরও বেশি আকর্ষনীয় করেছে। বাংলাদেশের তৈরী পোশাক আমাদের কাছে খুবই প্রিয়।
আগত প্রতিনিধি দলে ছিলেন, এবিএফ’র পরিচালক ও কোম্পানি সেক্রেটারি পাউল লিস্টার, এবিএফ’র গ্রæপ করপোরেট রিসপনসেবলিটি ডাইরেক্টর কাথারিন স্টিওয়ার্ট, ইকোলক বোর্ডের নির্বাহী চেয়ারম্যান জুয়ান চাপারো, প্রাইমার্ক এর হেড অফ পলিসি এন্ড পাবলিক এ্যাফেয়ার্স ইম্মা অরমন্ড, প্রাইমার্ক এর হেড অফ সোর্সিং মাদিউ আরহোডস এবং বেক্সিমকো বাংলাদেশ লিমিটেড এর গ্রæপের পরিচালক এবং প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ নাভেদ হোসেইন।
পরে বাণিজ্যমন্ত্রী বাংলাদেশ সচিবালয়ে বাণিজ্যমন্ত্রীর অফিস কক্ষে জাপান এক্সটার্নাল ট্রেড অর্গানাইজেশন (জেট্রো) এর প্রেসিডেন্ট কাজুশিক নোবুতানির নেতৃত্ব আগত একটি প্রতিনিধি দলের সাথে মত বিনিময় করেন।