সোহেল রহমান : দুই দফা সংশোধনে মাতারবাড়ী কয়লা নির্ভর বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রের সড়ক ও জনপথ অংশ নির্মাণে মোট ব্যয় বাড়ছে ৪২২ কোটি ৫৭ লাখ টাকা। মূল প্রকল্পে ব্যয় ধরা হয়েছিল ৬০২ কোটি ৩২ লাখ টাকা। প্রকল্পের প্রথম সংশোধনীতে ৫৭ কোটি ৬৬ লাখ টাকা ব্যয় বাড়ানো হয়েছিল। দ্বিতীয় সংশোধনীতে ব্যয় বাড়ানো হয়েছে ৩৬৪ কোটি ৮১ লাখ টাকা।
ব্যয় বাড়ানোর পাশাপাশি দুই দফায় প্রকল্পের মেয়াদও চার বছর বাড়ানো হয়েছে। মূল প্রকল্পের বাস্তবায়নকাল ছিল ২০১৫ সালের জুলাই থেকে ২০২০ সালের জুন পর্যন্ত। প্রথম দফায় ব্যয় না বাড়িয়ে প্রকল্পের মেয়াদ দুই বছর বাড়ানো হয়। পরবর্তীতে মেয়াদ আরও দুই বছর বাড়িয়ে সময়সীমা ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত নির্ধারণ করা হয়েছে।
জানা যায়, জাপানী দাতা সংস্থা জাইকার অর্থায়নে প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হচ্ছে। মূল প্রকল্পে জাইকা’র অর্থায়নের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৫০৪ কোটি ৭১ লাখ টাকা। দ্বিতীয় সংশোধনীতে এটি বাড়িয়ে ৭৯১ কোটি ২৭ লাখ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। অর্থাৎ প্রকল্পে জাইকা’র মোট অর্থায়ন বাড়ছে ২৮৬ কোটি ৫৬ লাখ টাকা। অন্যদিকে মূল প্রকল্পে সরকারি অর্থায়নের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৯৭ কোটি ৬১ লাখ টাকা। প্রথম সংশোধনীতে এটি বাড়িয়ে ১৫৫ কোটি ২৭ লাখ টাকা এবং দ্বিতীয় সংশোধনীতে আরও বাড়িয়ে ২৩৩ কোটি ৫২ লাখ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। অর্থাৎ দুই দফা সংশোধনীতে প্রকল্পে সরকারি অর্থায়নের পরিমাণ বাড়ানো হয়েছে ১৩৫ কোটি ৯১ লাখ টাকা।
জানা যায়, প্রকল্প এলাকা হচ্ছে কক্সবাজার জেলার মহেশখালী এবং চকরিয়া উপজেলা। প্রকল্পে নতুন অঙ্গ অন্তর্ভুক্তি; কয়েকটি অঙ্গের পরিমাণ ও ব্যয় বৃদ্ধি; কয়েকটি অঙ্গের পরিমাণ অপরিবর্তিত রেখে ব্যয় বৃদ্ধি; কয়েকটি অঙ্গের পরিমাণ হ্রাস ও ব্যয় বৃদ্ধি এবং কয়েকটি অঙ্গের পরিমাণ বৃদ্ধি ও ব্যয় হ্রাসের কারণে সব মিলিয়ে ব্যয় বাড়ছে।
প্রকল্পটির প্রধান উদ্দেশ্য হচ্ছেÑ মাতারবাড়ী বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রের সাথে জাতীয় মহাসড়ক এন-১-এর সংযোগ স্থাপন। এছাড়া, প্রকল্পটির মাধ্যমে মাতারবাড়ী ও মহেশখালী উপজেলার মধ্যে সরাসরি সড়ক যোগাযোগ স্থাপন করা হবে। প্রকল্পের আওতায় কোহেলিয়া নদীর উপর নির্মিত ৮৯৫ মিটার দীর্ঘ সেতু ও নদীর পশ্চিম তীর বরাবর নির্মিত সড়ক-কাম-বাঁধটি জলোচ্ছাস, সামুদ্রিক ঝড় প্রভৃতি প্রাকৃতিক দূর্যোগ থেকে বিদ্যুৎ কেন্দ্রকে রক্ষা করবে এবং অত্র এলাকার সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজ ও নিরাপদ করবে।
প্রকল্পের আওতায় প্রধান কার্যক্রমগুলোর মধ্যে রয়েছেÑ ৫৫ হেক্টর ভূমি অধিগ্রহণ ও পুনর্বাসন ক্ষতিপূরণ; সড়ক রক্ষণাবেক্ষণ/জেনারেল সাইট ফ্যাসিলিটিজ; ৫.২৩ কিলোমিটার সড়ক পুনর্বাসন; ৭.৩৫ কিলোমিটার সড়ক নির্মাণ; ২.১০ কিলোমিটার রিজিড পেভমেন্ট; ৮৯৫ মিটার কোহেলিয়া সেতু নির্মাণ; ২২ মিটার রেগুলেটর/ওয়াটার ইনলেট; ৫৪.০০ মিটার আরসিসি সেতু নির্মাণ; সেতু ও তীর রক্ষা।