সোহেল রহমান : বাংলাদেশে জাপানের ব্যবসায়ীদের আরও বড় ধরনের বিনিয়োগের আহবান জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুন্শি।
রোববার সচিবালয়ে ঢাকায় নবনিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত আইওয়ামা কিমিনোরি-এর সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এ প্রত্যাশার কথা ব্যক্ত করেন। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (এফটিএ) নূর মো. মাহবুবুল হক এসময় উপস্থিত ছিলেন। বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, জাপানের সাথে বাংলাদেশের ব্যবসা-বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক দীর্ঘদিনের। বাংলাদেশের বড় উন্নয়ন সহযোগী জাপান। দেশের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ১০০টি স্পেশাল ইকোনমিক জোন গড়ে তোলার কাজ দ্রæত এগিয়ে চলছে। অনেকগুলোর কাজ এখন শেষ পর্যায়ে। জাপানও এখানে বিনিয়োগ করেছে। তবে জাপানের কাছ থেকে আরও বড় ধরনের বিনিয়োগ আশা করে বাংলাদেশ।
তিনি বলেন, বাণিজ্য সুবিধা বাড়ানোর জন্য সংশ্লিষ্ট বিষয়ে জাপানের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা ও দক্ষ নেগোসিয়েশনের সুবিধার্থে একটি ‘জয়েন্ট স্টাডি গ্রæপ’ কাজ করার জন্য প্রস্তুত। এলডিসি গ্রাজুয়েশনের পর এফটিএ বা পিটিএ’র মত বাণিজ্য সহযোগিতা চুক্তি করে উভয় দেশের ব্যবসা, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বাড়ানোর জন্য কাজ করা হবে। জাপান ইতোমধ্যে এ বিষয়ে ব্যাপক আগ্রহ প্রকাশ করেছে, সে মোতাবেক কাজ চলছে। উভয় দেশের ব্যবসায়ী ও বিনিয়োগকারীরা সফর বিনিময় করলে বাণিজ্য বৃদ্ধি এবং বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত সহজ হবে।
প্রসঙ্গক্রমে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, আগামী ২০২৬ সালে বাংলাদেশ এলডিসি গ্রাজুয়েশন করবে, তখন বিভিন্ন দেশ থেকে বাণিজ্য সুবিধা পেতে পিটিএ বা এফটিএ’র মত বাণিজ্য চুক্তি করার জন্য আমরা কাজ করছি। তখন বাংলাদেশকে অনেক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে হবে।
জাপানের রাষ্ট্রদূত আইওয়ামা কিমিনোরি বলেন, জাপান সরকার বাংলাদেশকে ব্যবসা-বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও অর্থনৈতিক উন্নয়নে অধিক গুরুত্ব দিয়ে থাকে। আগামী ২০২৬ সালে বাংলাদেশের এলডিসি গ্রাজুয়েশনের পরও জাপান বাংলাদেশের পাশে থাকবে। জাপানের অনেক বিনিয়োগ আছে এখানে, বাংলাদেশের সঙ্গে অর্থনৈতিক সম্পর্ক আরও বাড়াতে আগ্রহী জাপান। জাপান-বাংলাদেশ ‘ইকোনমিক পার্টনারশিপ এগ্রিমেন্ট’ (ইপিএ) স্বাক্ষরের জন্য করণীয় নির্ধারণে সরকারি কর্মকর্তা ও সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞদের নিয়ে একটি ‘জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রæপ’ গঠন করছে জাপান। বাংলাদেশও একই ধরনের দক্ষ কর্মকর্তা ও বিশেষজ্ঞদের নিয়ে গ্রæপ গঠন করলে কাজ অনেক সহজ হবে। এতে দক্ষ এবং অভিজ্ঞতা সম্পন্ন প্রতিনিধি থাকবে। যাতে করে সঠিকভাবে এবিষয়ে এগিয়ে যাওয়া যায়।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ সঠিক সময়েই এলডিসি গ্রাজুয়েশন-পরবর্তী চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার প্রস্তুতি শুরু করেছে। বাংলাদেশের উন্নয়নে জাপানের সব ধরনের সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে।
জাপানের রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে বৈঠকের পর বাণিজ্যমন্ত্রী ‘জাপান-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি’-এর নবনির্বাচিত পরিচালনা পর্ষদের সদস্যদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। এর আগে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে বিভিন্ন বাণিজ্য সংগঠনকে লাইসেন্স হস্তান্তর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন তিনি।