ডিএসইতে ৩১ কোম্পানির শেয়ারের দর বেড়েছে টানা তিন কার্যদিবস ধরে পতনে শেয়ারবাজার
মাসুদ মিয়া: দেশের শেয়ারবাজার আগের দুই কার্যদিবসের ধারাবাহিকতায় গতকাল সপ্তাহের তৃতীয় কার্যদিবস মঙ্গলবারও দর পতনের মধ্যে দিয়ে লেনদেন শেষ হয়েছে। এদিন প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) সবকটি মূল্যসূচক কমেছে। সেই সঙ্গে কমেছে লেনদেনে অংশ নেওয়া বেশি সংখ্যক প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম কমেছে। এর মাধ্যমে টানা তিন কার্যদিবসেই দরপতন দেখতে হলো বিনিয়োগকারীদের।
অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) সবকটি মূল্যসূচক কমেছে। পাশাপাশি লেনদেনে অংশ নেওয়া যে কয়টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম বেড়েছে তার থেকে বেশি কমেছে। সেই সঙ্গে এ বাজারটিতে লেনদেনের পরিমাণও কমেছে। এবিষয়ে বাজার সংশ্লিষ্ট বলেছেন, শেয়ারবাজারে বিনিয়োগকারীদের সক্রিয় অংশগ্রহণ কমে যাওয়ায় দরপতন হচ্ছে। প্রাতিষ্ঠানিক ও বড় বিনিয়োগকারীদের একটি অংশও বাজারে নিস্ক্রিয় ভূমিকা পালন করছে। বাজার সংশ্লিষ্টরা আরও বলেন, সরকারবিরোধী একটি চক্রের পাঁয়তারায় এসব বিনিয়োগকারী নিস্ক্রিয় অবস্থায় রয়েছে বলে অভিযোগ উঠছে। গতকাল শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরু হয় অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম বাড়ার মাধ্যমে। এতে লেনদেন শুরু হতেই ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ৭ পয়েন্ট বেড়ে যায়। লেনদেনের শুরুতে দেখা দেওয়া এ ঊর্ধ্বমূখী প্রবণতা বেশি সময় স্থায়ী হয়নি। লেনদেনের সময় ১০ মিনিট হওয়ার আগেই সূচক ঋণাত্মক হয়ে পড়ে।
এরপর সূচক কিছুটা ঊর্ধ্বমুখী হলেও সাড়ে ১০টার পর থেকে টানা নিচের দিকে নামে সূচক। লেনদেনের সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে বড় হতে থাকে দরপতনের তালিকা। সেই সঙ্গে বড় হয় সূচকের পতন প্রবণতা। ফলে দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে যে কয়টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম বেড়েছে, কমেছে তার চারগুণের বেশি। গতকাল লেনদেন শেষে ডিএসইতে মাত্র ৩১টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১৩৫টির। আর ১৬১টির দাম অপরবর্তিত রয়েছে। এতে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ১১ পয়েন্ট কমে ৬ হাজার ২৬৭ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।
অন্য দুই সূচকের মধ্যে বাছাই করা ভালো ৩০টি কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় ৬ পয়েন্ট কমে ২ হাজার ২১৯ পয়েন্টে অবস্থান করছে। আর ডিএসই শরিয়াহ্ আগের দিনের তুলনায় ৪ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ৩৬৬ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।
দিনভর ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৫৭৩ কোটি ৯ লাখ টাকা। আগের দিন লেনদেন হয় ৫০৯ কোটি ৪৮ লাখ টাকা। সে হিসেবে লেনদেন বেড়েছে ৬৩ কোটি ৬১ লাখ টাকা।
ডিএসইতে টাকার অঙ্কে সব থেকে বেশি লেনদেন হয়েছে জেনেক্স ইনফোসিসের শেয়ার। কোম্পানিটির ৫৭ কোটি ৯২ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছ। দ্বিতীয় স্থানে থাকা সি পার্ল বিচ রিসোর্টের ৩৪ কোটি ৩৮ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে। ২৮ কোটি ১৬ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে বসুন্ধরা পেপার।
এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ দশ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে-ইস্টার্ন হাউজিং, অলেম্পিক, আমরা নেটওয়ার্ক, বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন, ওরিয়ন ফার্মা, জেমিনি সি ফুড এবং মেঘনা লাইফ। দর বৃদ্ধির শীর্ষে প্রধান ১০টি কো¤পানি হলো:- সোনালী আঁশ ইন্ডাস্ট্রিজ, ইস্টার্ন লুব্রিকেন্টস, পপুলার লাইফ ইন্স্যুরেন্স, অলিম্পিক ইন্ডাস্ট্রিজ, ওরিয়ন ফার্মা, লুব-রেফ, প্রগতী ইন্স্যুরেন্স, এডভেন্ট ফার্মা, যমুনা ওয়েল ও ইস্টার্ন হাউজিং।
দর কমার শীর্ষে প্রধান ১০টি কো¤পানি হলো:- সী পার্ল বীচ, বসুন্ধরা পেপার, জেএমআই হসপিটাল, মেট্রো স্পিনিং, সামিট অ্যারায়েন্স পোর্ট, জেনেক্স ইনফোসিস, অরিয়ন ইনফিউশন, বীকন ফার্মা, বিএসসি ও আমরা টেকনোলজি।
অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই কমেছে ১৯ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ১২ কোটি ১১ লাখ টাকা। লেনদেন অংশ নেওয়া ১৫৫টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ২৭টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৬৫টির এবং ৬৩টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।