বিশ্বের সবচেয়ে বড় ৪৭০টি বিমান ক্রয়ের এভিয়েশন চুক্তি করলো এয়ার ইন্ডিয়া
বিশ্বজিৎ দত্ত : ভারতের টাটা কোম্পানির ৪৬০টি বিমানক্রয়ের চুক্তিকে ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে ঐতিহাসিক বাণিজ্য চুক্তি বলে অভিহিত করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। একইসঙ্গে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক ও ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁ এই চুক্তিকে বলেছেন তাদের দেশের কর্মসংস্থানের মাইল ফলক। গত মঙ্গলবার ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাক্রোঁর ‘উপস্থিতিতে’ ভারতীয় কোম্পানি টাটার সঙ্গে ইউরোপিয় ব্রিটিশ বিমান স্ংস্থা ও আমেরিকান বোয়িংয়ের সঙ্গে ৪৭০টি বিমান ক্রয়ের চুক্তি করে এয়ার ইন্ডিয়া। এটি বিশ্বের এভিয়েশান ক্রয় চুক্তির মধ্যে সবচেয়ে বড় চুক্তি। ভারতের টাটা কোম্পানির মালিকানাধীন এয়ার ইন্ডিয়া ২৫০টি এয়ারবাস ও ২২০টি বোয়িং ও ১০০ রোলস রয়েস ইঞ্জিন ক্রয়ের জন্য চুক্তি করে। সব মিলিয়ে বিমানের মোট সংখ্যা হলো ৪৭০টি।
প্রেসিডেন্ট বাইডেন এক শুভেচ্ছা বার্তায় ভারতের প্রধানমন্ত্রীকে লিখেন, এই ক্রয় যুক্তরাষ্ট্র ও ভারতের মধ্যে অর্থনৈতিক সম্পর্কের মাইলফলক। ২২০টি বোয়িং ক্রয়ের ফলে যুক্তরাষ্ট্রের ৪৫টি রাজ্যে ১০ লাখ লোকের কর্মসংস্থান হবে। ঋষি সুনাক শুভেচ্ছা বার্তায় লিখেন, ২০৫০ সালে ভারত যে বিশ্বের তৃতীয় অর্থনৈতিক শক্তি হবে এই চুক্তি তারই সক্ষমতা প্রমাণ করেছে। ২৫০টি এয়ারবাস ক্রয়ের ফলে ১১ লাখ লোকের কর্মসংস্থান হবে যুক্তরাজ্যে। ফ্রান্সের প্রেসিডেন্টে ম্যাক্রোঁ বলেছেন ক্রয় চুক্তির কারণে ফ্রান্সের অর্থনীতিতে ভারত একটি যুগান্তকারী অবদান রেখেছে। যা ফ্রান্সে ১০ লক্ষাধিক লোকের কর্মস্ংস্থান সৃষ্টি করবে।
টাটা সন্সের চেয়ারম্যান এন চন্দ্রশেখরন জানিয়েছেন, চুক্তির অংশ হিসাবে এয়ার ইন্ডিয়া মোট ২৫০টি বিমান আমদানি করবে। এর মধ্যে ৪০টি এ৩৫০ ওয়াইড-বডি ও ২১০টি এ৩২০নিও ন্যারো-বডি বিমান।
দি ওয়ালের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এয়ার ইন্ডিয়ার ব্যবসায়িক বৃদ্ধি পরিকল্পনামাফিক হলে বিমানের সংখ্যা আরও বাড়ানো হতে পারে বলেও জানিয়েছেন টাটা সন্সের চেয়ারম্যান। তিনি আরও জানান, ভবিষ্যতে ভারতের মাটিতেই বাণিজ্যিক বিমান উৎপাদন করার প্রকল্প হাতে নেয়া যেতে পারে।
বর্তমানে বেঙ্গালুরুতে এরো ইন্ডিয়া ২০২৩ প্রদর্শনী চলছে। প্রদর্শনীতে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নিরাপত্তা উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব)তারেক আহমেদ সিদ্দিকীসহ ৩২টি দেশের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী উপস্থিত ছিলেন। সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী মোদি বলেন, এই চুক্তি ভারতের ইতিহাসে একটি মাইলফলক। এটি ভারত ও ফ্রান্সের বন্ধুত্বের প্রতিফলন। এর পাশাপাশি ভারতের বিমান চালনা ক্ষেত্রের সাফল্যেরও ইঙ্গিতবাহী।
তিনি উল্লেখ করেন, গত কয়েক বছরে ভারতে মোট বিমানবন্দরের সংখ্যা ৭৪ থেকে বেড়ে ১৪৭টি হয়েছে। ধীরে ধীরে বিমান পরিবহনের ক্ষেত্রে ভারত বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম বাজার হয়ে উঠছে। আগামী ১৫ বছরে ভারতের ২ হাজারেরও বেশি বিমানের প্রয়োজন হবে। এই চাহিদা যাতে ভারত নিজেই মেটাতে পারে, সেদিকে জোর দেয়ার আহŸান জানান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তিনি বলেন, ভারতের মেক ইন ইন্ডিয়া-মেক ফর দ্য ওয়ার্ল্ড’ ভিশনের অধীনে উৎপাদনখাতে অনেক নতুন নতুন সুযোগ আসছে।