
মোদিকে চরমপন্থী হিসেবে দেখাতে বিবিসির তথ্যচিত্র : জয়শঙ্কর

রাশিদুল ইসলাম: গুজরাট দাঙ্গা নিয়ে তৈরি বিবিসির তথ্যচিত্রের পেছনে অনেক ভাবনাচিন্তা কাজ করেছে বলে দাবি করেছেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। এএনআইকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘তথ্যচিত্র স¤প্রচারের টাইমিংটা দেখতে হবে। আমি সবকিছুর মধ্যে ষড়যন্ত্র খুঁজি না। কিন্তু এটুকু বুঝি, বিদেশি কিছু মতাদর্শ ও রাজনৈতিক শক্তি দেশের একাংশের সঙ্গে হাত মিলিয়েছে। ভারতকে, ভারত সরকারকে, প্রধানমন্ত্রী মোদিকে তারা চরমপন্থী হিসেবে দেখাতে চাইছে। চেষ্টাটা অনেক দিন ধরেই চলছে।’
জয়শঙ্কর বলেন, ‘ভারতে নির্বাচনী হাওয়া শুরু হয়েছে কি না জানি না, তবে লন্ডন-নিউইয়র্কে শুরু হয়ে গেছে। সেই হিসাব করেই ওই তথ্যচিত্র ছাড়া হয়েছে। এই রাজনীতি তারাই করছেন, যাদের প্রকাশ্যে ময়দানে নামার সাহস নেই।’ তিনি বলেন, কথায় বলে, অন্যভাবে যুদ্ধ করো। এটা সেই অন্য যুদ্ধ। অন্য লড়াই। অন্য রাজনীতি। চীন সম্পর্কে রাহুল গান্ধীর ভালো জ্ঞানতথ্য থাকলে শুনতে আমি রাজি। শেখা জীবনের অঙ্গ। কিন্তু মনে হয়, তাদের চীন নিয়ে কোনো সমস্যা আছে। ইচ্ছে করে ভ্রান্তি ছড়াচ্ছেন।
সাক্ষাৎকারে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বিবিসির তথ্যচিত্র, লাদাখে চীনা আগ্রাসন নিয়ে কংগ্রেসসহ বিরোধীদের রাজনৈতিক সমালোচনার জবাব দেওয়ার পাশাপাশি পারিবারিক বিষয় নিয়েও কথা বলেন। ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী কীভাবে তার বাবা কে সুব্রহ্মনিয়মকে প্রতিরক্ষা উৎপাদন সচিব পদ থেকে সরিয়ে দিয়েছিলেন এবং রাজীব গান্ধী তার চেয়ে কম বয়সী একজনকে মন্ত্রিপরিষদ সচিব করেছিলেন, তাও উল্লেখ করেন।
বিবিসির তথ্যচিত্র, লাদাখে চীনের জমি দখল কিংবা আদানি গোষ্ঠীসম্পর্কিত হিনডেনবার্গ রিসার্চের প্রতিবেদন নিয়ে বিরোধীরা বারবার সংসদে আলোচনার দাবি জানালেও ভারত সরকার তা মানেনি। সংসদে এ নিয়ে বিরোধীদের কোনো প্রশ্নের উত্তর দেয়নি। পূর্ব লাদাখে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর বিভিন্ন অঞ্চলে চীনা আগ্রাসন ও জমি দখলের অভিযোগ নিয়ে কংগ্রেস, বিশেষ করে রাহুল গান্ধী অনেক দিন ধরেই সরব। তাদের অভিযোগ, ২০২০ সালের জুনে গলওয়ানে সংঘর্ষের আগেই ভারতের বিস্তীর্ণ (প্রায় ২ হাজার বর্গকিলোমিটার) এলাকা চীন দখল করে নিয়েছে। একই অভিযোগে সরব লাদাখের বিজেপি নেতৃত্বও। বিরোধীরা এ নিয়ে সংসদে আলোচনার দাবি জানালেও সরকার রাজি হয়নি। প্রতিরক্ষাসম্পর্কিত সংসদীয় কমিটিকে লাদাখের উপদ্রæত এলাকা পরিদর্শনেও যেতে দেওয়া হয়নি। মৌখিকভাবে শুধু বলা হয়েছে, ভারতের কোনো জমি চীন দখল করেনি।
