তুলনা নেই অনন্য উচ্চতার বাংলাদেশ ও ভারত বন্ধুত্বের
আনু মুহাম্মদ
ভারত সরকার আর বাংলাদেশ সরকারের মধ্যকার বন্ধুত্ব এখন “অনন্য উচ্চতায়”। এই বন্ধুত্ব “সমান সমান”, কারণ ভারত সরকার যা চায় বাংলাদেশের সরকারও তাই চায়। তারা যা চায় না এরাও তা চায় না। যেখানে ভারতের সরকার নাই সেখানে বাংলাদেশের সরকারও থাকতে চায় না।
আরও দেখেন, যখন বাংলাদেশের মানুষ কোনো অন্যায় নিয়ে ভারত সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করে তখন তার জবাব দেবার পরিশ্রম ভারত সরকারের কোনো দফতরের করতে হয় না। বাংলাদেশের মন্ত্রী- উপদেষ্টা- আমলারা হাসিমুখে সেই দায়িত্ব পালন করেন।
যেমন অভিন্ন নদীর পানি আটকে বাঁধ করার সমালোচনা করলে বাংলাদেশের মন্ত্রীরাই বলেন এতে আমাদের খুব উপকার হবে। টিপাইমুখ বাঁধের কথা সবার মনে আছে। নদীর পানি বন্টন নিয়ে বছরের পর বছর হাওয়া প্রতিশ্রæতি দিয়ে ভারত সরকার খুশি, খুশি বাংলাদেশের সরকারও। যখন ট্রানজিটের কথা আসে, বাংলাদেশের প্রাপ্য ফির কথা উঠে, উপদেষ্টা বলেন ছি ছি তা কী করে হয়। কাঁটাতারের বেড়া দিয়ে বাংলাদেশকে ঘিরে ভারত সরকার প্রসন্ন, বাংলাদেশের সরকারের মধ্যেও এ নিয়ে কোনো অপ্রসন্ন ভাব নেই। যখন অবিরাম সীমান্ত হত্যার বিরুদ্ধে কথা হয় তখন বাংলাদেশের মন্ত্রীরাই বলেন, যারা গুলি খাচ্ছে তারা চোরাচালানী, ওদের হাতে অস্ত্র থাকে বোমা থাকে! তা তো বটেই, ভাত না পেলেও অস্ত্র নিয়ে তো চলতেই পারে শখ করে খুন হওয়া কিশোরীসহ গরীব কৃষক মজুর মানুষেরা!!
আর ঋণকে তারা বলে “সাহায্য”! বেশি দামে হলেও শতকরা ৭৫ ভাগ জিনিষ ভারত থেকে কেনার শর্ত দিয়ে ভারতের ঋণ যখন আসে, তখন বাংলাদেশের মন্ত্রীরা গলে পড়েন কৃতজ্ঞতায়! ভারতের ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে যখন সুন্দরবন বিনাশের আয়োজন করে ভারতের কোম্পানি তখন উন্নয়নের গন্ধে আত্মহারা হয়ে উঠেন কর্তারা, বাহবা বাহবা আওয়াজ হতে থাকে।
শুধু মন্ত্রী উপদেষ্টারাই নয় এসব কোরাসে যোগ দেবার মতো বুদ্ধিজীবী আর মিডিয়াও কম নাই, তারাও হাত তুলে খুশি খুশি খেলতে থাকে। আবার ভারতের জনগণ যখন তাদের সরকারের নিপীড়ন, স্বৈরতন্ত্র, বৈষম্যের বিরুদ্ধে লড়াই করে তখন শুনশান নীরবতা এদের। সত্যি তুলনা নেই এই “সমান সমান“ বন্ধুত্বের!