ভিয়েতনাম কীভাবে এগিয়ে গেলো?
খাজা নিজাম উদ্দিন
প্রবাসীরা আগামী ২ মাসে বেশি ডলার পাঠাবেন (ঈদ উপলক্ষ্যে), সেই আশায় শিক্ষিতরা খুব খুশি। একজন এতো খুশি হয়েছেন, রিপোর্টই করে ফেলেছেন, ‘রিজার্ভ ঘুরে দাঁড়াচ্ছে’। রেমিট্যান্স কিছু বাড়ছে, তার মানে কি রিজার্ভ বেড়ে গেছে? রিজার্ভ কত বাড়লো, সেই খবর আর সেখানে নাই। আদৌ কি বেড়েছে রিজার্ভ? ৫২ বছর হয়ে গেলো দেশটার। শিক্ষাখাতে লাখ লাখ কোটি টাকা খরচ হয়েছে। তারা কি দেশের জন্য ডলার আনতে পারে না? এত লাখ লাখ কোটি টাকা খরচ হয়েছে, এখন ৫০-৬০ বিলিয়ন ডলার তো এই শিক্ষিতদেরই আনার কথা। বেগমপাড়া, দুবাই পড়া কি প্রবাসীরা বানিয়েছে? নাকি আমাদের শিক্ষিতরা বানিয়েছে? প্রবাসীরা ঘুষ খায়? দুর্নীতি করে? লুটপাট করে? কারা করে?
প্রবাসীদের টাকা অনেকটা দয়ার মতো। তারা পাঠালে পাঠাতে পারে, না পাঠালে নাই। তারা সে দেশে সেটলড হয়ে যেতে পারে। এটা তাদের ইচ্ছা। আসল আয় তো আসার কথা ছিলো, রফতানি থেকে। শিক্ষিতদের কাজটা তো সেখানেই। গত ৫২ বছরে তো ১০-১৫টা রফতানি পণ্য হওয়ার কথা, যেখান থেকে ৫০০ থেকে হাজার বিলিয়ন ডলার রফতানি হওয়ার কথা। ভিয়েতনাম যখন আমাদের বহু বহু পরে এবং পরাশক্তির সঙ্গে ২০ বছরের বেশি লড়াই করে একটা বিধ্বস্ত দেশ থেকে আজ প্রায় ১৩টি পণ্য রফতানি করে প্রায় ৪০০ বিলিয়ন ডলার আয় করছে।
আমরা করছি ৪৫-৫০ বিলিয়ন এবং তা প্রধানত ১টি পণ্য থেকেই। ১৭ কোটি মানুষের দেশে মাত্র ৪৫-৫০ বিলিয়ন ডলার রফতানি, ৫২ বছর শেষে, এটা কতটা ভালো খবর? ভিয়েতনাম কীভাবে এগিয়ে গেলো? এটা জানতে শুধু তাদের প্রাথমিক শিক্ষার পরিকল্পনাটা জানলেই পুরো চিত্র পরিষ্কার হবে। একটা দেশ কতটা দূরদর্শী। নিজেরা খেতে না পারলেও প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক এনেছে সারা দুনিয়া থেকে এবং তাদের বেতন দিয়েছে বিদেশের সমতুল্য। আজ মানবসম্পদে ভিয়েতনাম এগিয়েছে বলেই বিশ্বের সবচেয়ে নামি-দামি প্রতিষ্ঠান ভিয়েতনামে বিনিয়োগ করে যাচ্ছে গত দুই দশক যাবৎ। চিন্তার কিছু নাই, প্রবাসীদের রক্ত পানি করা ডলার তো আছেই আমাদের। সেই আশায় খুশ থাকি! ফেসবুক থেকে