চারটি দেশি জাহাজ দিয়ে ৭০০-৮০০ মিলিয়ন ডলার বছরে সাশ্রয় আদৌ সম্ভব?
কাজী এম মোরশেদ
মেঘনা গ্রæপ চারটা পণ্যবাহী জাহাজ নামিয়েছে। খবর ভালো নিঃসন্দেহে। আরও কর্পোরেট এগিয়ে আসতে পারে, এতে সবচেয়ে বড় সুবিধা হবে দেশীয় আমদানি ও রফতানিকারকদের, কারণ জাহাজ ভাড়া টাকায় পরিশোধ করতে পারবে। একদিকে বিদেশি কোম্পানিকে ডলারে দেওয়া লাগতো, অন্যদিকে বিদেশি জাহাজ আউটার এ্যাংকরেজে অপেক্ষায় থাকলে অতিরিক্ত চার্জ দেওয়া লাগতো, সেটাও হয়তো কমানো যাবে। ধন্যবাদ দিতে কার্পণ্য করবো না, কিন্তু প্রশ্ন আছে। আমি কাছাকাছি কিছু ডেটা দিই। গত বছর মোট আমদানি ছিলো ৯৩ বিলিয়ন ডলার, মোট রফতানী ছিলো ৬০ বিলিয়ন। মোট বাণিজ্যের পরিমাণ ১৫৩ বিলিয়ন ডলার। এবার আসেন মোট বাণিজ্যের একটা হাইপোথেটিক্যাল হিসাব ধরি। চারভাবে আমদানি রফতানি হয়, এক সাগর পথে, দুই আকাশ পথে, তিন স্থল পথে এবং চার ই-ডেলিভারী যেটা সফটওয়ার লাইসেন্সে হয়। স্থলপথে প্রায় ১৪ বিলিয়নের মতো বাণিজ্য হয়, আকাশ পথে প্রায় ১০ বিলিয়নের মতো, ই-ডেলিভারী ধরলাম প্রায় ৫০০ মিলিয়ন ডলার হলে সাগর পথে মোট আমদানির পরিমাণ প্রায় ১২৮.৫ বিলিয়ন ডলারের মতো। এইবার আসেন মেঘনা গ্রæপের বক্তব্য কী ছিলো। মেঘনা বলছে, এটা শুধু মেঘনার না, বাংলাদেশের সম্পদ হিসাবে ব্যবহার হবে। এই কথা আমিও মানি। মেঘনা বলছে, জাহাজ পথে ভাড়া দেওয়া লাগে প্রায় ১০ বিলিয়ন ডলার, এখান থেকে ৭০০-৮০০ মিলিয়ন ডলার সাশ্রয় হবে। প্রশ্ন এখানেই, সাগরে জাহাজ ভাড়া যদি ১০ বিলিয়ন ডলার হয়, সেটা প্রায় ৭.৭৮২ শতাংশ, অর্থাৎ এফওবি মূল্য যদি ১০০ ডলার হয়, ফ্রেইট আসে ৭.৭৮ ডলার। উদাহরণ নেন, তৈরি পোশাকের একটা এক মিলিয়ন ডলারের কনসাইনমেন্টে ৭৭ হাজার ৮০০ ডলার ফ্রেইট। আপনাদের কি মনে হয় পাটিগণিত ঠিক আছে? পাটিগণিত ঠিক থাকলে ফ্রেইট এর এমাউন্ট অনেক বেশি হয়ে যায় না? যেই টাকা বাঁচাবে পাটিগণিত অনুযায়ী ৭২ হাজার ডলার বা ৭.১৯৮ শতাংশ। এখনো কি মনে হয় না ফ্রেইট এমাউন্ট বেশি হয়ে যাচ্ছে?
অন্য উত্তর হলো, মাননীয় প্রতিমন্ত্রীকে খুশি করবার জন্য যে সংখ্যা বলা হয়েছে সেটা বাড়িয়ে বলা। আরেকটা কারণ মেঘনা গ্রæপ একাত্তর টিভির মালিক, তারা যা বলে, সেটা বিটিভির মতো সরকারের গণমাধ্যম হিসাবেই বলে। শুধু চারটা দেশি জাহাজ দিয়ে ৭০০-৮০০ মিলিয়ন ডলার বছরে সাশ্রয় করা কি আদৌ সম্ভব? প্রশ্ন রেখে গেলাম, লজিক দিয়ে হিসাব করে দেখেন। ফেসবুক থেকে