পাকিস্তানে ৫০ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ মূল্যস্ফীতি
মো. আখতারুজ্জামান : ভোক্তা মূল্য সূচকে (সিপিআই) পরিমাপ করা পাকিস্তানের মূল্যস্ফীতি আগের সব রেকর্ড ভেঙে নতুন রেকর্ড গড়েছে। দেশটিতে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য তীব্র বৃদ্ধির কারণে ফেব্রæয়ারিতে মূল্যস্ফীতি ৩১ দশমিক ৫ শতাংশে পৌঁছেছে। বুধবার পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম জিও নিউজের প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
জিও নিউজের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ১৯৬৫ সালের জুলাই থেকে তথ্য সংরক্ষণ শুরুর পর চলতি বছরের ফেব্রæয়ারিতে পাকিস্তানের মূল্যস্ফীতি ৩১ দশমিক ৫ শতাংশ হয়েছে। এর আগে, ১৯৭৫ সালের এপ্রিলে দেশটির মূল্যস্ফীতি ২৯ শতাংশের সামান্য বেশি রেকর্ড করা হয়েছিল। খবর- ডেইলি স্টার বাংলা অলাইন। চলতি বছরের জানুয়ারির তুলনায় ফেব্রæয়ারিতে মাসিক মূল্যস্ফীতির হার বেড়েছে ৪ দশমিক ৩ শতাংশ।
জিও নিউজের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পাকিস্তানের জ্বালানি ও খাদ্যের দাম বাদ দিয়ে গণনা করা মূল মূল্যস্ফীতিও গত মাসে শহরাঞ্চলে ১৭ দশমিক ১ শতাংশ এবং গ্রামাঞ্চলে ২১ দশমিক ৫ শতাংশে পৌঁছেছে। অর্থাৎ, বেশিরভাগ পণ্য ও সেবার মূল্য বৃদ্ধি পাচ্ছে। কোনো বন্ধুদেশের কাছ থেকে পাকিস্তান সহজ শর্তে সাহায্য পাবে, এমন সম্ভাবনা কম। আবার সা¤প্রতিক সময়ে দেশটির দেউলিয়া হওয়ার আশঙ্কাও তৈরি হয়েছে। তাই আইএমএফের নানা শর্তে ইসলামাবাদ মাথা নত করতে শুরু করেছে।
কালোবাজারে রুপির বিপরীতে ডলারের দাম হুহু করে বাড়ছিল। তাই বিনিময় হারের ওপর সরকারের যেসব নিয়ন্ত্রণ ছিল, পাকিস্তান তা শিথিল করার পর রুপির দামে রেকর্ড পরিমাণ পতন হয়েছে। অন্যদিকে দীর্ঘদিন ধরে কৃত্রিমভাবে পেট্রোলের দাম কমিয়ে রাখার পর এখন এর মূল্যবৃদ্ধি করা হয়েছে।
দেশটির ব্যাংক প্রয়োজনীয় খাদ্য ও ওষুধ আমদানি ব্যতীত অন্য কোনো ঋণপত্র খুলছে না। এ জন্য ডলার না পাওয়ায় বাকিতে নিয়ে আসা হাজার হাজার কনটেইনার–বোঝাই পণ্য করাচি বন্দর থেকে ছাড় করাতে পারছেন না ব্যবসায়ীরা।
রাজনৈতিক সংঘাত, হত্যা, অর্থনৈতিক সংকট পাকিস্তান মূলত এসব কারণেই বিশ্ব গণমাধ্যমে স্থান পায়। দেশটি দীর্ঘদিন সামরিক শাসনের অধীন ছিল। এখন সামরিক বাহিনী ক্ষমতায় না থাকলেও পেছন থেকে কলকাঠি নাড়ে। আর এ সবকিছুর সম্মিলিত ফল হলো, এখনকার অর্থনৈতিক সংকট।