• প্রচ্ছদ
  • আমার দেশ
  • আমাদের বিশ্ব
  • খেলা
  • ইসলামি চিন্তা
  • অমৃত কথা
  • বিনোদন
  • আজকের পএিকা
    • প্রথম পাতা
    • শেষ পাতা
  • নগর সংস্করণ
  • মিনি কলাম
  • খ্রিস্টীয় দর্পণ
  • প্রবারণা পূর্ণিমা

মিনি কলাম

জনগণের উন্নয়ন নয়, সরকার প্রকল্প নেয় পয়সা ও ক্ষমতায় থাকার জন্য: বি.ডি রহমতউল্লাহ, সাবেক মহাপরিচালক, পাওয়ার সেল

প্রকাশের সময় : March 2, 2023, 12:50 pm

আপডেট সময় : March 2, 2023 at 12:50 pm

ভূঁইয়া আশিক রহমান: পাওয়ার সেলের সাবেক মহাপরিচালক বিডি রহমতউল্লাহ বলেছেন, আইএমএফের শর্ত আছে, বিদ্যুতে ভর্তুকি দেওয়া যাবে না। ভর্তুকি না দিলে সেসব ক্যাপাসিটি চার্জ দিতে হচ্ছে চুক্তি অনুযায়ী সরকারকে, সেসব টাকা কোথা থেকে আসছে? পাবলিকের কাছ থেকে। আন্তর্জাতিক বাজারে কয়লার বেড়ে যাচ্ছে। ডলারের দামও অনেক বৃদ্ধি পাচ্ছে। আদানির বিদ্যুতের জন্য ২৫০-৪০০ ডলার প্রতি টন, দেশে যারা কয়লা আনবেন দেশের বাইরে থেকে, ডলার আসবে কোথা থেকে? কীভাবে সবকিছু সমন্বয় করা হবে?

তিনি বলেন, এখন যে চুক্তিগুলো আছে, ক্যাপাসিটি চার্জ তো বিদ্যৎ কেনার জন্যই দিতে হচ্ছে। বিদ্যুতের দাম ১৫ থেকে ১৭ টাকা করে হচ্ছে প্রতি ইউনিট। সরকার দিচ্ছে সাড়ে এগারো টাকার হিসাব, ক্যাপাসিটির চার্জ ছাড়া। ক্যাপাসিটি চার্জও দিচ্ছি আমরা। যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, তা থেকে রক্ষা পাওয়া খুব কঠিন। বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য আদানির মতো যেসব প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি করেছি আমরা তা বাতিল করা উচিত। নতুন করে শুরু না করলে সেসব চুক্তি আমাদের মানতেই হবে এবং প্রতি মাসে বিদ্যুতের দাম সমন্বয় করতেই হবে।

পাওয়ার সেলের সাবেক এই মহাপরিচালক বলেন, আদানির মতো প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে করা চুক্তি বাতিলের জন্য আমাদের প্রতিবাদ করতে হবে। এই সমস্ত চুক্তি বাতিল করতে হলে তীব্র আন্দোলন লাগবে। আন্দোলন বা চাপ না থাকলে সরকার কি এই চুক্তি বাতিল করবে? করবে না। কিন্তু আমাদের তো বাঁচতে হবে। বাঁচতে হলে কী করতে হবে? জাগতে হবে। সরকারকে বলতে হবে, যেসব চুক্তি ক্ষতিকারক, জনস্বার্থবিরোধী তা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। কারণ এমনিতেই করোনা মহামারি, তার পরবর্তী ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধে বিপর্যস্ত সকলে। আর্থিকভাবে খুব কঠিন পরিস্থিতির মধ্যদিয়ে যাচ্ছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম প্রতিনিয়তই বাড়ছে। ফলে যেকোনো ধরনের অনিয়ম অগ্রহণযোগ্য। জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করা দরকার।

সরকার যদি মানুষের স্বার্থ বুঝতো, তাহলে আদানির মতো চুক্তি করতো না। ক্ষমতায় থাকতে হলে কী করতে হবে? ক্ষমতাবানদের কী করে পয়সা দিতে হবে, সেটাও সরকারের হিসাবে আছে। ব্যবসায়িক সিন্ডিকেটের সঙ্গে যারা আছেন তাদের হাজার কোটি টাকা কামাই করতে হবে! তা না হলে তাদের চলে না। যদি তাদের কামাই করতে হয়, তাহলে তো সরকারকে চলমান পলিসিতেই যেতে হবে।

আদানির সঙ্গে মোদির ভালো সম্পর্ক, এটাই সবাই জানে। সাংবাদিকেরাও জানেন। সাধারণ মানুষও জানেন। আদানি কার বন্ধু? অনেকেরই বন্ধু আছে ভারতে। কিন্তু এটা তো বলার অপেক্ষা রাখে না, আদানি ভারতের প্রধানমন্ত্রীর বন্ধু। নির্বাচনের সময় আদানির প্লেন দিয়ে ঘুরে বেরিয়েছেন, নির্বাচী ক্যাম্পেইনও তো করেছিলেন মোদি। খাতির না থাকলে তো এ ধরনের প্রকল্প কেউ পায় না। আদানিকে সন্তুষ্ট করলে মোদি সন্তুষ্ট হবেন। মোদি সন্তুষ্ট হলে এখানকার সরকারের কী লাভ, এটার তো ব্যাখ্যার দরকার নেই।

সরকার মানুষকে ইম্পর্ট্যান্ট মনে করে বলে মনে না হয়। মানুষকে গুরুত্ব দিলে যা ইচ্ছা তাই করতো না। সরকারকে তো ক্ষমতায় থাকার জন্য ভোট নেওয়ার দরকার পড়ে না। আমাদের মতামত নেওয়ার দরকার নেই। তাহলে কেন জনগণের কথা ভাববে সরকার? সরকার যদি মনে করে মোদিকে খুশি করলে ক্ষমতায় থাকা যাবে, তাহলে মোদিকেই খুশি করবে, জনগণকে নয়।
জনগণকে মারতে না চাইলে অবিলম্বে আদানির মতো চুক্তিগুলো বাতিল করতে হবে। নতুন করে কী করা যায়, কীভাবে করা যায়, যাতে ন্যায্য দামে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা যায়, সেসব চুক্তির পয়েন্ট সামনে আনতে হবে। জাতির কাছে চুক্তির পয়েন্টগুলো উন্মুক্ত করে দিতে হবে। বলতে হবে, কোন চুক্তিতে কী লেখা আছে। কতো দাম পড়বে, জানিয়ে দিতে হবে। আর জনগণের মতামত নেওয়ার জন্য নিরপেক্ষ, দক্ষ ও বিচক্ষণ বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে আলাপ করতে হবে। তাদের পরামর্শ গ্রহণ করতে হবে। প্রয়োজনীয় কার্যকর ব্যবস্থাটিই গ্রহণ করতে হবে।

[৯] আমাদের সামনে অনেক চ্যালেঞ্জ আছে। সেসব চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় স্বচ্ছ হতে হবে। সরকার জনবান্ধব হলে জনবান্ধব জ¦ালানি নীতিও বাস্তবায়ন করবে। আমার ক্ষমতা থাকলে উচ্চমূল্যের পাওয়ার স্টেশন বন্ধ করে দিতাম। সোলার প্যানেল দিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন বৃদ্ধিকরতাম। তাতে দেড় থেকে দুই টাকা খরচ হতো। পরিবেশের উপরও বিরূপ প্রভাব পড়তো না। বিদ্যুৎ ও জ¦ালানির জন্য বাইরের দেশের উপর আমাদের নির্ভর করতে হতো না। এসব তো জনবান্ধব সরকার ছাড়া হবে না।

আন্তর্জাতিক কনভেনশন অনুযায়ী আমরা যা দেখছি, চাহিদার চেয়ে টোয়েন্টি পার্সেন্ট রিজার্ভ থাকলে হয়। অর্থাৎ আমাদের বিদ্যুতের চাহিদা যদি ১৩ হাজার মেগাওয়াট হয় প্রতিদিন, টোয়েন্টি পার্সেন্টের হিসাবে বাড়তি ২ হাজার বা তিন হাজার মেগাওয়াট রিজার্ভ থাকলেই হয় যেকোনো আকর্ষিক সংকট মোকাবেলায়। কোনো কেন্দ্রের ক্রুটি, বন্ধ বা অন্য কোনো সংকট হলে এই পরিমাণ বিদ্যুৎ হলেই হয়ে যাওয়ার কথা। যেকোনো পাওয়ার স্টেশন ফেলিউর হলে যাতে বসে থাকতে না হয়। যেখানে ১৫ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ হলেই আমাদের চলে, সেখানে আমরা বানিয়ে রেখেছি ২৪ হাজার বা তারও বেশি। কেন করেছি এসব আমরা? কারণ কাউকে পয়সা দিতে হবে। বড় বড় ঠিকাদার যারা, তারা পাওয়ার স্টেশন বানাতেই পছন্দ করেন। কয়েকটি জায়গা সাবস্টেশন বানালে বহু পয়সা আসে। আমাদের আড়াই-তিনগুন বেশি পয়সা দিতে হয়।

জনগণ কি চায় ১৪-১৫ টাকা ট্যারিফ দিতে? কেন আমাদের ২৫-২৬ হাজার মেগাওয়াট উৎপাদন সক্ষমতার বিদ্যুৎ স্টেশন বানাতে হবে? কোনো দরকার আছে এতো হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ? আমার দরকার ১৫-১৬ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ। এতে ৫ থেকে ৬ ট্যারিফে বিদ্যুৎ দেওয়া যেতো। আমাদের দুটি সরকারই পয়সার জন্য এসব জনস্বার্থবিরোধী চুক্তি করে থাকে। দুই সরকারের আমলেই আমি চাকরি করেছি। আমি দেখেছি। সরকারগুলো জনগণের উন্নয়নের জন্য কোনো প্রকল্প নেয় না, প্রকল্প নেয় পয়সার জন্য। ক্ষমতায় থাকার জন্য।

সম্পাদক

নাসিমা খান মন্টি

09617175101, 01708156820

[email protected]

১৩২৭, তেজগাঁও শিল্প এলাকা (তৃতীয় তলা) ঢাকা ১২০৮, বাংলাদেশ। ( প্রগতির মোড় থেকে উত্তর দিকে)