জাফর খান: নির্বাচন কমিশন নিয়ে ভারতের সুপ্রীমকোর্টের রায়ের বিষয়ে বাংলাদেশের একজন নির্বাচন পর্যবেক্ষণ বিশেষজ্ঞ ড. নাজমুল আহসান কলিম উল্লাহ জানিয়েছেন, নির্বাচন কমিশন নিয়ে জনদাবি উঠলে ভারতের মতো আমাদের দেশেও নির্বাচন কমিশন সংস্কার সম্ভব। তিনি বলেন, ভারত একটি উন্নত গণতান্ত্রিক দেশ। সেখানে নির্বাচনকে আরো স্বচ্ছ ও গতীশীল করার জন্য সরকার ও বিরোধীদের মধ্যে কোন দ্বিমত নেই। তারা যে কোন সংস্কার করতে পারে। দক্ষিণ এশিয়ায় ভারত হলো একমাত্র দেশ যেখানে কখনো সামরিক শাসন জারী হয়নি। কিন্তু আমাদের মতো দেশে নির্বাচন সুষ্ঠু করার জন্য জনগণকেই এগিয়ে আসতে হবে । রাজনীতির উপর চাপ সৃষ্টি করতে হবে।
উল্লেখ্য, ভারতে নির্বাচন প্রক্রিয়ায় ‘স্বচ্ছতা বজায় রাখতে’ দেশের প্রধান বিচারপতি, প্রধানমন্ত্রী এবং বিরোধী দলনেতার সমন্বয়ে তিন সদস্য বিশিষ্ট কমিটির মাধ্যমে নির্বাচন কমিশনারদের (ইসি) নিয়োগ দেয়ার বিষয়ে হাইকোর্ট একটি রায় দিয়েছে। সূত্র এনডিটিভি
বৃহস্পতিবার সুপ্রিমকোর্টের ৫ সদস্যের সাংবিধানিক বেঞ্চ এ রায়ে বলেন, সারা দেশে নির্বাচন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার জন্য নির্বাচন কমিশনারদের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে এমন সিদ্ধান্তের আদেশ দেওয়া হল। আর এ কমিটির সুপারিশে কমিশনারদের নিযুক্ত করবেন রাষ্ট্রপতি।বর্তমান ব্যবস্থায় প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শে নির্বাচন কমিশনারদের নিযুক্ত করে থাকেন রাষ্ট্রপতি। কার্যকালের মেয়াদ থাকে ৬ বছর।সাধারণত দেশটির সাবেক আমলাদের এ পদে বেছে নেওয়া হলেও মনোনয়ন নিয়ে প্রশ্ন ছিল বরাবরই। হোক কংগ্রেস কিংবা বিজেপি, সব আমলেই বিরোধী দলগুলোর দাবি— সরকারের ঘনিষ্ঠ আমলাদেরকেই নির্বাচন কমিশনার করা হয়েছিল।
রায়ের পর কংগ্রেসের সূর্যেওয়ালা এক টুইটে এটিকে স্বাগত জানিয়ে লিখেন, ভারতের গণতন্ত্রকে দুর্বল করতে বিজেপির কোনো ষড়যন্ত্রই কাজে আসবেনা। আদালতের এ রায় অত্যন্ত তাৎপর্য বহন করে। দলটির এম পি মানিশ তিওয়ারি সংবিধানের ৩২৪ আর্টিকেলটি সংশোধনের প্রস্তাব করেন। এছাড়াও তৃনমূল কংগ্রেসের এম পি ডেরেক ওব্রিয়েন এ রায়কে অভিবাদন জানিয়ে বলেন, এটি নির্বাচন কমিশনকে শক্তিশালী করতে সাহায্য করবে। এদিকে রায়কে স্বাগত জানিয়ে বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচন পর্যবেক্ষক পরিষদের (জানিপপ) চেয়ারম্যান ড. নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ বলেন, ভারতের মত দেশে এ রায়ের বাস্তবায়ন সম্ভব।
তিনি বিগত সেনা সমর্থিত বিতর্কিত আজিজ কমিশনের কথা উল্লেখ করে তার বক্তব্যে বলেন, আজিজ কমিশন গঠনে কোনো রকমের স্বচ্ছতার আশ্রয় নেওয়া হয়নি। এমনকি দেড় কোটি ভুয়া ভোটার তালিকাও যুক্ত করে বিতর্কিত ওই কমিশন। তিনি আরও বলেন, আমি বিশ্বাস করি সব সম্ভবের দেশ বাংলাদেশ তবে এ কথাকে আমি নেতিবাচক নয় বরং ইতিবাচক দিক থেকেই সবসময় ভাবি। আর তাই সরকারের সদিচ্ছা, জনদাবি আর সময়ের চাহিদার সমন্বয়ে ভারতের রায়ের আদলে এমন পদক্ষেপ আমাদের দেশেও গ্রহণ করা সম্ভব বলে মনে করি।