সিনেমার অনুদান বাড়ানো হবে: প্রধানমন্ত্রী
এস.ইসলাম জয় : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সিনেমা নির্মাণে সরকারি অনুদান বাড়ানো হবে। বর্তমানে একটি পূর্ণদৈর্ঘ্য সিনেমার জন্য ২৫ লাখ ও স্বল্পদৈর্ঘ্য সিনেমার জন্য ২০ লাখ টাকা অনুদান দেয় সরকার। আগামী বাজেটে তা আরও বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়ার কথা জানিয়েছেন তিনি।
গতকাল বৃহস্পতিবার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার-২০২১ প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, করোনাকালীন সময়ে অর্থনৈতিক যে মন্দা এবং ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের কারণে সবকিছুর দাম বেড়ে গেছে। মূল্যস্ফীতি দারুণভাবে বেড়ে গেছে। সেখানে এই মুহূর্তে সরকার যে অনুদান দিচ্ছে, এটা একটা পূর্ণাঙ্গ চলচ্চিত্র নির্মাণের জন্য যথেষ্ট না। এই অনুদান আরও বাড়াতে হবে। আমি আগামী বাজেটে উদ্যোগ নেবো। বাস্তবতা হলো ২৫ লাখ টাকা একটা সিনেমার জন্য যথেষ্ট নয়। বর্তমানে পূর্ণদৈর্ঘ্য সিনেমার জন্য ২৫ লাখ, স্বল্পদৈর্ঘ্য সিনেমার জন্য ২০ লাখ টাকা দেওয়া হয়। এটা অনেক কম। এটা হয় না। একটা ভালো বাজেট হলে একটা ভালো সিনেমা নির্মাণ করা সম্ভব বলে আমি করি।
তিনি বলেন, মন্ত্রী হিসেবে ১৯৫৭ সালের ২৩ এপ্রিল সংসদে আমাদের এই বাংলাদেশে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান চলচ্চিত্র উন্নয়ন বিল, এই আইনটি পাশ করেন বঙ্গবন্ধু। তার উদ্যোগে আইনটি পাশ হয়। বিশেষ করে পূর্ব পাকিস্তান চলচ্চিত্র সংস্থা, বিশেষ করে এফডিসির কাজ শুরু হয়। সেখানে সিনেমা নিমার্ণও শুরু হয়েছিল।
জেলা-উপজেলা পর্যায়ে থাকা সিনেমা হলগুলো ভেঙে সিনেপ্লেক্স করা হবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, আমাদের হলগুলো পুরোনো, এগুলোর উন্নয়নে এক হাজার কোটি টাকার একটা ফান্ড আমরা তৈরি করেছি। সেখান থেকে হল মালিকদের অল্প সুদে এখান থেকে লোন দিচ্ছি। এতে করে পরিবার নিয়ে মানুষ হলে এসে সিনেমা দেখতে পরেবে। মাঝে চলচ্চিত্র শিল্প অনেকটা দুর্বল হয়েছিল। কিন্তু সা¤প্রতিক সময়ে ভালো কিছু সিনেমার মাধ্যমে আবারও মানুষ সিনেমাহল মুখি হচ্ছে। সম্প্রতি দেশে আন্তজার্তিক মানসম্পন্ন সিনেমা তৈরি হয়েছে। সীমাবদ্ধতা থাকা স্বত্বেও এ শিল্পের মানুষেরা কাজ করে যাচ্ছে এজন্য আপনাদের ধন্যবাদ। সমাজ, পরিবারকে নিয়ে দেখার মতো সিনেমা নির্মাণের আহŸান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, অশালীন ও অনুকরণমুক্ত সিনেমা বানাতে বলেন দেশের পরিচালকদের।
এ শিল্পের উন্নয়নে যখন যা প্রয়োজন তা খুঁজে বের করে সমাধানের চেষ্টা করছে সরকার। ভালো চলচ্চিত্র নির্মাণ ও এ শিল্পে মানুষকে উদ্বুদ্ধ করতে প্রতিবছর সিনেমা নির্মাণের জন্য সরকারি অনুদান দেওয়া হয়। তবে একটা পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র নির্মাণে এ টাকা যথেষ্ট নয় জানিয়ে সরকারপ্রধান বলেন, ‘একটা ভালো বাজেটে একটা ভাল সিনেমা নির্মাণ হয়। আগামী বাজেটে চলচ্চিত্রে অনুদানের পরিমাণ বাড়ানোর চিন্তা করব।’ জীবনধর্মী চলচ্চিত্র নির্মাণ বাড়ানোর কথা বলে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জীবনধর্মী চলচ্চিত্রে মানুষ আকৃষ্ট হয়। জীবনধর্মী চলচ্চিত্র নানারকম অন্যায় অপরাধ কাজ থেকে সমাজকে দুরে রাখে। কাজেই বেশি বেশি জীবনধর্মী সিনেমা বানাতে হবে।-ঢাকাটাইমস
তরুণ প্রজন্মকে উদ্দেশ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি দেখেছি সবার মাঝে আলাদা একটা মেধা ও চিন্তাশক্তি আছে। একটা আর্টিস্টিক ও শৈল্পিক মেধা আছে। তাদের মাধ্যমে জীবনধর্মী সেসব সিনেমা তৈরি হয়, সেগুলো মানুষকে আকর্ষিত করে। একটা সিনেমা একজন মানুষে জীবনকে পাল্টে দিতে পারে, একটা সমাজকে পাল্টে দিতে পারে। এ ধরনের সিনেমা তৈরিতে মনোযোগ দিতে হবে। অনেক সীমাবদ্ধতা সত্তে¡ও চলচ্চিত্র জগতের সবাই অনেক পরিশ্রম করে যাচ্ছেন, এ জন্য সবাইকে সাধুবাদ জানাই। বাংলা ট্রিবিউন, ঢাকাপোস্ট