প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক আশ্রায়ন-২ প্রকল্পের গৃহ হস্তান্তর কার্যক্রম উদ্বোধন সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে বাস্তবায়নের প্রস্তাব, ব্যয় হবে ৭ কোটি টাকা
সোহেল রহমান : প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সরাসরি তত্ত্বাবধানে আশ্রায়ন-২ প্রকল্পের আওতায় সারাদেশে খাসজমি ও ক্রয়কৃত জমিতে একক গৃহ নির্মাণের মাধ্যমে ভূমিহীন ও গৃহহীনদের পুনর্বাসনের কার্যক্রম চলমান রয়েছে। এ ধারাবাহিকতায় চলতি মার্চে কিংবা নিকটবর্তী সুবিধাজনক সময়ে আশ্রায়ন-২ প্রকল্পের তৃতীয় পর্যায়ের অবশিষ্ট গৃহ এবং চতুর্থ পর্যায়ের বরাদ্দকৃত গৃহসমূহ সরাসরি বা ভিডিও কনফারেন্স-এর মাধ্যমে উদ্বোধন বা প্রদান করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে অনুষ্ঠানটি আয়োজনে চারটি উপখাতে মিলিয়ে মোট ৭ কোটি টাকা ব্যয় হতে পারে বলে প্রাক্কলন করেছে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়। বুধবার অনুষ্ঠেয় ‘অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি’-তে এ-সংক্রান্ত একটি প্রস্তাব নীতিগত অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করা হতে পারে।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, গৃহ হস্তান্তর অনুষ্ঠানের চারটি উপখাতের মধ্যে অনুষ্ঠান/উৎসব ্উপখাতে ৫ কোটি টাকা, ভিডিও/চলচ্চিত্র নির্মাণ উপখাতে ১ কোটি টাকা, প্রকাশনা উপখাতে ৫০ লাখ টাকা এবং প্রচার ও বিজ্ঞাপন উপখাতে ৫০ লাখ টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী অনুষ্ঠানস্থল গণভবন প্রান্ত থেকে উদ্বোধনের জন্য নির্বাচিত বিভিন্ন উপজেলায় আশ্রায়ন প্রকল্পের উপকারভোগীদের সঙ্গে সরাসরি এবং সারাদেশের ৮টি বিভাগের ৬৪ জেলাসহ অন্য সকল উপজেলার সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সিং-এর মাধ্যমে সংযুক্ত হতে পারেন।
জানা যায়, আশ্রায়ন প্রকল্পের আওতায় ইতোপূর্বে মুজিববর্ষ উপলক্ষে প্রথম ও দ্বিতীয় পর্যায়ে মোট ১ লাখ ১৭ হাজার ৩২৯টি, তৃতীয় পর্যায়ের (১ম ধাপে) গত ২০২২ সালের ২৬ এপ্রিল ২৬ হাজার ২২৯টি এবং তৃতীয় পর্যায়ের (২য় ধাপে) ২০২২ সালের ২১ জুলাই ৩২ হাজার ৪০৯টি গৃহ ভূমিহীন-গৃহহীনদের অনুকূলে হস্তান্তর করেছেন প্রধানমন্ত্রী।
সূত্রমতে, মাটির কম্প্যাকশনজনিত কারণে তৃতীয় পর্যায়ের বরাদ্দকৃত অবশিষ্ট ৮ হাজার ২১০ গৃহের নির্মাণ কাজ ইতোপূর্বে সম্পাদন ও হস্তান্তর করা সম্ভব হয়নি। বর্তমানে এ গৃহসমূহ হস্তান্তরের জন্য তৈরি রয়েছে। একই সঙ্গে চতুর্থ পর্যায়ে বরাদ্দকৃত অধিকাংশ গৃহের নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। চতুর্থ পর্যায়ের আওতায় চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরে ভূমিহীন ও গৃহহীনদের জন্য ৪৯ হাজার ৫২৭টি গৃহ নির্মাণের জন্য অর্থ বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এ পর্যায়ে তৃতীয় পর্যায়ের অবশিষ্ট গৃহ এবং চতুর্থ পর্যায়ের বরাদ্দকৃত গৃহসমূহ হস্তান্তর করা হবে।
আশ্রায়ন-২ প্রকল্পের আওতায় গৃহ হস্তান্তর উদ্বোধন অনুষ্ঠানটি ‘সরাসরি ক্রয় পদ্ধতি’-তে বাস্তবায়নের বিষয়ে সূত্র জানায়, এটি অত্যন্ত জরুরি ও জনগুরুত্বপূর্ণ একটি রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠান, যার মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী দেশের পিছিয়ে পড়া ছিন্নমূল অসহায় ভূমিহীন-গৃহহীনদের জমিসহ গৃহ হস্তান্তর করেন। ইতোপূর্বে এ ধরনের অনুষ্ঠান আয়োজনের অভিজ্ঞতায় দেখা যায়, দিনক্ষণ ঠিক হওয়ার পর উদ্বোধন অনুষ্ঠান আয়োজন সংক্রান্ত সংশ্লিষ্ট সেবা, কার্য ও ভৌত সেবা ক্রয়কার্য সম্পন্ন করার জন্য খুব কম সময় পাওয়া যায়। ফলে অত্যন্ত স্বল্প সময়ের মধ্যে উদ্বোধন অনুষ্ঠান আয়োজনের লক্ষ্যে অনুষ্ঠানস্থলের সাজসজ্জাকরণ, উপজেলা প্রান্তসমূহ প্রস্তুত করা, ভিডিও কনফারেন্সিং-এর যন্ত্রপাতি স্থাপন, উপকারভোগীদের জমির কবুলিয়ত, বন্দোবস্ত খতিয়ানসহ সংশ্লিষ্ট দলিল-পত্রাদি দীর্ঘমেয়াদে সংরক্ষণের জন্য ফোল্ডার প্রস্তুতকরণ, প্রচার ও ব্র্যাডিং লিফলেট প্রণয়ন, প্রচার ও ব্র্যাডিং-এর বিভিন্ন ভিডিও চিত্র তৈরি, ডিজিটাল প্রচার পদ্ধতির নানাবিধ ব্যানার তৈরি করা, বিভিন্ন প্রকারের প্রচার ও প্রকাশনা ইত্যাদি কাজ সুষ্ঠুভাবে সম্পাদনের জন্য অভিজ্ঞ ও কর্মদক্ষতাসম্পন্ন এক বা একাধিক ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট প্রতিষ্ঠান/প্রকাশনা/ডকুমেন্টারি প্রস্তুত ও সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানকে দায়িত্ব প্রদান করা প্রয়োজন। পূর্বের অভিজ্ঞতায় দেখা গেছে, এক্ষেত্রে সরাসরি ক্রয় পদ্ধতি ছাড়া অভিজ্ঞ ও কর্মদক্ষতাসম্পন্ন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান থেকে উদ্বোধন অনুষ্ঠান আয়োজনের জন্য বিশেষায়িত প্রকৃতির পণ্য, সংশ্লিষ্ট সেবা, কার্য ও ভৌত সেবা ক্রয় করা সম্ভব হয় না। এমতাবস্থায়, উদ্বোধন অনুষ্ঠান সুষ্ঠুভাবে আয়োজনের লক্ষ্যে জরুরি প্রয়োজন বিবেচনায় এবং স্বল্প সময়ের মধ্যে উল্লেখিত বিশেষায়িত বিশেষায়িত প্রকৃতির পণ্য, সংশ্লিষ্ট সেবা, কার্য ও ভৌত সেবাÑ যা কেবল অভিজ্ঞ ও কর্মদক্ষতাসম্পন্ন ঠিকাদার বা সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান থেকে সরাসরি ক্রয় করা প্রয়োজন।