• প্রচ্ছদ
  • আমার দেশ
  • আমাদের বিশ্ব
  • খেলা
  • ইসলামি চিন্তা
  • অমৃত কথা
  • বিনোদন
  • আজকের পএিকা
    • প্রথম পাতা
    • শেষ পাতা
  • নগর সংস্করণ
  • মিনি কলাম
  • খ্রিস্টীয় দর্পণ
  • প্রবারণা পূর্ণিমা

আমার দেশ

স্মার্ট কৃষিতেই বাস্তব, স্বপ্নের স্মার্ট বাংলাদেশ

প্রকাশের সময় : March 17, 2023, 7:58 pm

আপডেট সময় : March 17, 2023 at 7:58 pm

মতিনুজ্জামান মিটু : স্মার্ট ব্যবস্থায় রুপান্তর ছাড়া বাংলাদেশের কৃষিকে কাংখিত লক্ষে এগিয়ে নেওয়া যাবেনা। আর কৃষি স্মার্ট না হলে, স্মার্ট বাংলাদেশের স্বপ্ন স্বপ্নই থেকে যাবে। বছরব্যাপী ফল উৎপাদনের মাধ্যমে পুষ্টি উন্নয়ন প্রকল্প(২য় সংশোধনী) এর প্রকল্প পরিচালক কৃষিবিদ ড. মো. মেহেদী মাসুদ জানান, স্মার্ট কৃষিকে হতে হবে; বিশেষ, মিজারেবল (যাকে মাপা যাবে), রিয়েলস্টিক(অবাস্তব কিছু না হয়), টাইম বাউন্ড( কত সময়ে করা হবে) এসবগুলোকে যে ব্যবস্থা সন্তুষ্ট করতে পারবে তাকে বলা যাবে স্মার্ট কৃষি। স্মার্ট কৃষিতে রুপান্তরে বাংলাদেশের ফল ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজানো হচ্ছে। এলক্ষ্যে কর্ম পরিকল্পণা নেওয়া হচ্ছে। স্মার্ট কৃষি ব্যবস্থায় পাহাড় ও দেশের দক্ষিণে ইরি চাষ ও ফল উৎপাদন বাড়ানোসহ নানা উদ্যোগ বাস্তবায়ন করা হবে।
স্মার্ট কৃষি ব্যবস্থা গড়ে তোলা প্রসঙ্গে নির্ভরযোগ্য একটি সুত্র জানান, বর্তমানে দেশের মানুষ এমন এক যুগসন্ধিক্ষণে অবস্থান করছে, যাকে সহজেই ‘চতুর্থ শিল্পবিপ্লব’ বা ‘ফোর্থ ইন্ডািিস্ট্রয়াল রেভল্যুশন’ বা ‘ফোর আইআর’ বা ‘ইন্ডাস্ট্রি ফোর পয়েন্ট জিরো’র শুরুর লগ্ন বলা যেতে পারে। এমন পরিস্থিতিতে কৃষি খাতে, বিশেষত বাংলাদেশের কৃষিতে ফোর আইআরের প্রভাব, সম্ভাবনা, চ্যালেঞ্জ এবং তা মোকাবেলায় করণীয় কী?
কৃষি খাতের আঙ্গিকে বলা যায়, এপ্রযুক্তি পরিবেশের ওপর ন্যূনতম প্রভাব ফেলে কম খরচে বেশি ফলন ও পুষ্টি নিশ্চিত করে। সে বিবেচনায় উন্নত বিশ্বের কৃষি ব্যবস্থা চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের পথে অনেকটা এগিয়ে গেছে, এ কথা নির্দ্বিধায় বলা যায়।
বরাবরই এদেশের কৃষিতে কিছু প্রচলিত চ্যালেঞ্জ রয়েছে, যেমন কৃষিজমি হ্রাস, আবহাওয়া ও জলবায়ু পরিবর্তন, কৃষিজমির ক্ষুদ্রায়তন, কৃষিশ্রমিক-সংকট, ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যা ইত্যাদি। পাশাপাশি ফোর আইআর বাস্তবায়নে বেশ কিছু নতুন চ্যালেঞ্জ আবির্ভূত হয়েছে। এরমধ্যে রয়েছে; প্রশিক্ষিত জনবলের অভাব, নলেজ গ্যাপ, ধীরগতির ইন্টারনেট, দেশীয় হার্ডওয়্যার ও সফটওয়্যারের অভাব, কৃষক পর্যায়ে ট্যাব বা স্মার্টফোনের অভাব, আইনগত জটিলতা ও মোটিভেশনের অভাব ইত্যাদি।
সুত্র আরও জানান; কৃষি মন্ত্রণালয় ইতোমধ্যে চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি কর্মপরিকল্পনা তৈরীর কাজ হাতে নিয়েছে। এটুআইয়ের সহযোগিতায় বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের তত্ত¡াবধানে কৃষি মন্ত্রণালয়াধীন সব দপ্তর বা সংস্থা থেকে তিন ক্যাটাগরিতে প্রস্তাবিত কার্যক্রম যাচাই-বাছাই করে কর্মপরিকল্পনা চূড়ান্তকরণের কাজ চলছে। ২০৫০ সালে বিশ্বে জনসংখ্যা হবে প্রায় ৯৭০ কোটি এবং বাংলাদেশে হবে প্রায় ২২ কোটি; কাজেই এবিশাল জনগোষ্ঠীর খাদ্য ও পুষ্টি নিশ্চিতে, এসডিজিকে সামনে নিয়ে দেশের ইন্ডাস্ট্রি ফোর পয়েন্ট জিরোর কর্মপরিকল্পনা ঢেলে সাজাতে হবে। আশা করা যায়, চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় বাংলাদেশের কৃষি খাত স্পষ্টত এগিয়ে থাকবে।
বহুমুখী কৃষিপণ্য উৎপাদন ও রপ্তানির জন্য বহির্বিশ্বের কাছে বাংলাদেশ উল্লেখযোগ্য একটি বৈচিত্র্যময় কৃষিপণ্যেরও হাব(কেন্দ্র) হয়ে উঠতে পারে। তার জন্য দরকার স্মার্ট কৃষি ও তার সফল বাস্তবায়ন। কৃষি বাংলাদেশের উন্নয়নের ভিত্তিমূল। কৃষির ওপর ভিত্তি করেই বহু দেশে শিল্পবিপ্লব ঘটেছে। এদেশেও তা-ই হয়েছে। স্মার্ট এগ্রিকালচার বা ক্লাইমেট স্মার্ট এগ্রিকালচার অনেকের কাছে বেশ পরিচিত টার্ম হলেও কৃষক পর্যায়ে এটির ধারণা এখনো বেশ অস্বচ্ছ। এটিকে পরিচিতি করানোর দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলোর।
কৃষিতে চতুর্থ শিল্পবিপ্লব তথা ডিজিটাল প্রযুক্তির ছোঁয়া লেগেছে বেশ আগেই। এসব প্রযুক্তিগত সুফল স¤প্রতি কৃষিতে জাগরণ সৃষ্টি করেছে। ধীরে ধীরে এর ব্যাপকতা আরও বাড়বে। বর্তমানে বহু অনলাইন পরিষেবা বাড়ছে। এসবের প্রভাবে কৃষি অর্থনীতিতে ব্যাপক পরিবর্তন আসতে শুরু করেছে। বিপুলসংখ্যক প্রযুক্তিপ্রেমী তরুণ-যুবক কৃষি ব্যবসায় উদ্যোক্তা হচ্ছে। ডিজিটাল প্রযুক্তি তথা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, রোবোটিক্স, কোয়ান্টাম কম্পিউটিং ইত্যাদির মতো অত্যাধুনিক প্রযুক্তির আবির্ভাবের কারণে ভবিষ্যতে এর প্রভাব কৃষিতেও পড়বে। সব স্তরের কৃষক ডিজিটাল জীবনধারায় অভ্যস্ত হয়ে উঠবে একসময়। আর তখনই স্মার্ট কৃষিই ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ গড়ার নিয়ামক হিসেবে কাজ করবে।
‘স্মার্ট ফার্মিং বা কৃষি’ কী? বিদ্যমান কৃষিব্যবস্থার সঙ্গে এর পার্থক্যই-বা কী? স্মার্ট কৃষির উপকারিতাই-বা কী? ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ গড়তে ‘স্মার্ট কৃষি’ কতটুকু অবদান রাখবে? স্মার্ট এগ্রিকালচার একটি মোটামুটি নতুন শব্দ। ‘স্মার্ট’ হলো সুনির্দিষ্ট, পরিমাপযোগ্য, অর্জনযোগ্য, প্রাসঙ্গিক এবং সময়ভিত্তিক লক্ষ্যগুলোর পাঁচটি উপাদানের সংক্ষিপ্ত রূপ। স্মার্ট ফার্মিং বিশেষজ্ঞ অ্যাঞ্জেলা শুস্টারের মতে, বিশ্ব জনসংখ্যার ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার জন্য কম পরিমাণে বেশি খাদ্যোত্পাদনে স্মার্ট ফার্মিংয়ের গুরুত্ব রয়েছে। বিশেষ করে, স্মার্ট ফার্মিং প্রাকৃতিক সম্পদ ও ইনপুটগুলোর আরও দক্ষ ব্যবহার, জমির উত্তম ব্যবহার এবং পরিবেশ ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে ফলন বাড়াতে সক্ষম করে তোলে। স্মার্ট এগ্রিকালচার শব্দটি খামারে ইন্টারনেট অব থিংস, সেন্সর, লোকেশন সিস্টেম, রোবট এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মতো প্রযুক্তির ব্যবহারকে বোঝায়। চূড়ান্ত লক্ষ্য; শস্যের গুণমানের পরিমাণ বাড়ানো ও ব্যবহৃত মানবশ্রমকে অপটিমাইজ করা।
স্মার্ট এগ্রিকালচারের তিনটি প্রধান উদ্দেশ্য হলও, টেকসই কৃষি উৎপাদনশীলতা এবং আয় বাড়ানো; জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে খাপ খাওয়ানো এবং স্থিতিস্থাপকতা তৈরি করা; এবং যেখানে সম্ভব গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমন কমানো বা অপসারণ করা। স্মার্ট ফার্মিং স্প্রে অপচয় কমানো থেকে জ্বালানি অর্থনীতির উন্নতি করতে পারে। স্মার্ট কৃষিতে ব্যবহৃত প্রযুক্তির উদাহরণ হলও- যথার্থ সেচ এবং সুনির্দিষ্ট উদ্ভিদ পুষ্টি; গ্রিনহাউসে জলবায়ু ব্যবস্থাপনা এবং নিয়ন্ত্রণ, সেন্সর-মাটি, জল, আলো, আর্দ্রতা, তাপমাত্রা ব্যবস্থাপনার জন্য সফটওয়্যার প্ল্যাটফরম; অবস্থান সিস্টেম-জিপিএস, স্যাটেলাইট, যোগাযোগ ব্যবস্থা- মোবাইল সংযোগ; রোবট; বিশ্লেষণ এবং অপটিমাইজেশান প্ল্যাটফরম আর এসব প্রযুক্তির মধ্যে সংযোগ হলো ইন্টারনেট অব থিংস। আর এটি সেন্সর এবং মেশিনের মধ্যে সংযোগের জন্য একটি প্রক্রিয়া, যার ফলে একটি সিস্টেম, যা প্রাপ্ত ডেটার ওপর ভিত্তি করে খামার পরিচালনা করে থাকে। এসব ব্যবস্থায় কৃষকরা তাদের খামারের প্রক্রিয়াগুলো নিরীক্ষণ করতে এবং দূর থেকে কৌশলগত সিদ্ধান্ত নিতে পারেন।
স্মার্ট ফার্মিংয়ের আরও সুবিধার মধ্যে রয়েছে স্যাটেলাইট অটোগাইডেন্স সিস্টেম ব্যবহার করে উন্নত নির্ভুলতা, কাজের দক্ষতা ও জ্বালানি দক্ষতা বাড়ানো, ভোগ্যপণ্য হ্রাস, ফলন বৃদ্ধি, চালকের চাপ কম, ব্যবহারের সহজতা; সহজ রেকর্ডিং এবং রিপোর্টিং; সহজ আর্থিক পূর্বাভাস; টেকসই উন্নত ব্যবস্থাপনা; গ্রিনহাউস অটোমেশন, শস্য ব্যবস্থাপনা, গবাদিপশু পর্যবেক্ষণ এবং ব্যবস্থাপনা, যথার্থ চাষ, কৃষিতে ড্রোনের ব্যবহার, স্মার্ট ফার্মিংয়ের জন্য ভবিষ্যদ্বাণীমূলক বিশ্লেষণ,অ্যান্ড-টু-অ্যান্ড ফার্ম ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম ইত্যাদি।
প্রচলিত পদ্ধতির তুলনায় স্মার্ট ফার্মিং অন্য কোন কোন সুবিধা আনতে পারে? প্রচলিত সাপ্লাই চেইনগুলো কৃষকদের গ্রাহকের প্রয়োজনীয়তার চেয়ে তাদের পণ্য কীভাবে কাজ করে, সে সম্পর্কে তাদের কাছে কম তথ্যই থাকে; কিন্তু স্মার্ট ফার্মিংয়ে তথ্যের দক্ষ ও ন্যায়সংগত প্রবাহকে সক্ষম করে তোলে এবং আরও ভালো সিদ্ধান্ত নেওয়ার সুবিধার্থে সরবরাহ-শৃঙ্খলের সব অ্যাক্টরের মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ সংযোগ তৈরি করে দেয়। এতে অ্যাক্টরদের ক্ষমতার ভারসাম্য বজায় থাকে এবং পুরো সরবরাহ-শৃঙ্খলজুড়ে লাভকে আরও সুষমভাবে পুনর্বণ্টন করার সুযোগ দিয়ে একটি উইন-উইন পরিবেশ সৃষ্টি করে দেয়। সাপ্লাই চেইন ( যেমন- প্রসেসর এবং ভোক্তাদের) তাদের গ্রাহকদের চাহিদা মেটাতে উৎপাদন ব্যবস্থা পরিবর্তন করার সুযোগ চিহ্নিত করতে পারে। যার ফলে তাদের পণ্যের মূল্য বাড়ে।
গ্রাহকদের ক্রমবর্ধমান চাহিদা পূরণ করা কৃষি ব্যবসায়ের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, যা ভবিষ্যতে টেকসই ক্ষমতা পাবে এবং স্মার্ট ফার্মিং এটির অনুঘটক হিসেবে কাজ করবে। স্মার্ট ফার্মিং কৃষকদের পানি, ভৌগোলিক অবস্থা, দৃষ্টিভঙ্গি, গাছপালা এবং মাটির প্রকারের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো ভালোভাবে বুঝতে সাহায্য করে। এটি কৃষকদের তাদের উৎপাদন পরিবেশের মধ্যে দুষ্প্রপ্য সম্পদের সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিত করতে এবং পরিবেশগত ও অর্থনৈতিকভাবে টেকসই পদ্ধতিতে এগুলো পরিচালনা করতে সাহায্য করে। এটি কৃষকদের সময়মতো তাদের পণ্যের পরিমাণ ও গুণমান নিরীক্ষণ করতে এবং প্রয়োজনে তাদের উৎপাদন কৌশলগুলো সামঞ্জস্যে সক্ষমতা দেয়।

 

সম্পাদক

নাসিমা খান মন্টি

09617175101, 01708156820

[email protected]

১৩২৭, তেজগাঁও শিল্প এলাকা (তৃতীয় তলা) ঢাকা ১২০৮, বাংলাদেশ। ( প্রগতির মোড় থেকে উত্তর দিকে)