
বেসরকারি খাতের বিনিয়োগ বাড়াতে না পারলে মেগা প্রকল্পগুলো আর্থিক উদ্বেগ সৃষ্টি করবে : মাহবুব আলম

আমিনুল ইসলাম : বাংলাদেশে নিযুক্ত মালয়েশিয়ার হাই কমিশনার হাজনাহ মো. হাশিম বলেন-আমি বিশ্বাস করি দু’টি ভ্রাতৃপ্রতীম দেশের মধ্যে স্বাধীনতার পর থেকেই ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বিদ্যমান। উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে মালয়েশিয়া সবসময় বাংলাদেশের উন্নয়ন সহযোগী। বাংলাদেশ মালয়েশিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম ব্যবসায়িক অংশীদার উল্লেখ করে ২০৪১ সালের মধ্যে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে মালয়েশিয়া সরকার বাংলাদেশে বিনিয়োগ বৃদ্ধির মাধ্যমে সহযোগিতা করতে চায়। গতকাল শনিবার দি চিটাগাং চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাষ্ট্রি (সিসিসিআই) ও বাংলাদেশ-মালয়েশিয়া চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাষ্ট্রির (বিএমসিসিআই) যৌথ উদ্যোগে ক্যাটালাইজিং প্রাইভেট ইনভেস্টমেন্ট ফর ভিশন ২০৪১: অপরচুনিটিজ ফর প্রাইভেট সেক্টর ইন এ স্মার্ট বাংলাদেশ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠক প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি। চট্টগ্রাস্থ ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের বঙ্গবন্ধু কনফারেন্স হলে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এতে অন্যান্যদের মধ্যে চিটাগাং চেম্বার সভাপতি মাহবুবুল আলম, বিএমসিসিআই সভাপতি সৈয়দ আলমাস কবির, চেম্বার সহ-সভাপতি সৈয়দ মোহাম্মদ তানভীর, চেম্বারের প্রাক্তন সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার আলী আহমেদ ও পরিচালক মাহফুজুল হক শাহ, পিএইচপি’র অটোমোবাইলস’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক আক্তার পারভেজ বক্তব্য রাখেন। এ সময় অন্যান্যদের মধ্যে চেম্বার পরিচালকদ্বয় মো. অহীদ সিরাজ চৌধুরী (স্বপন) ও মোহাম্মদ নাসিরুল আলম (ফাহিম), বাংলাদেশ হাউস বিল্ডিং ফাইন্যান্স কর্পোরেশন’র চেয়ারম্যান প্রফেসর মো. সেলিম উদ্দিন উপস্থিত ছিলেন। গোলটেবিল বৈঠকে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন পলিসি এক্সচেঞ্জ বাংলাদেশ’র চেয়ারম্যান ড. এম. মাসরুর রিয়াজ।
চট্টগ্রাম চেম্বার সভাপতি মাহবুবুল আলম বলেন-রূপকল্প ২০৪১-এর মূল উদ্দেশ্য হল বাংলাদেশের অর্থনীতিকে একটি স্বনির্ভর এবং টেকসই অর্থনীতিতে রূপান্তর করা। যেখানে আমাদের জনগণের জন্য যথেষ্ট কর্মসংস্থানের সুযোগ থাকবে। এই লক্ষ্য অর্জনে বেসরকারি বিনিয়োগ বাড়ানোর কোন বিকল্প নেই। এই জন্য সরকার অবকাঠামো নির্মাণে ব্যাপক বিনিয়োগ করেছে। বিশেষ করে লজিস্টিক ও ইউটিলিটি খাতে। এই মেগা অবকাঠামো উন্নয়নের সবচেয়ে বড় সুবিধাভোগী হবে বেসরকারি খাত। তাই বেসরকারি খাতের বিনিয়োগ বাড়াতে না পারলে এই অবকাঠামোগুলি আমাদের দেশের জন্য গুরুতর আর্থিক উদ্বেগ সৃষ্টি করবে।
বিএমসিসিআই সভাপতি সৈয়দ আলমাস কবির বলেন-বর্তমানে আমরা তৈরিপোশাক, শাক-সবজি এবং চামড়াজাত পণ্য রপ্তানি করি। বিএমসিসিআই ও সিসিসিআই যৌথভাবে দু’দেশের মধ্যে ব্যবসা বৃদ্ধির চেষ্টা চালাচ্ছে। ডিজিটাল বাংলাদেশ আমাদের গন্তব্য নয় উল্লেখ করে তিনি বলেন-ডিজিটাল বাংলাদেশ এখন প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। আমাদেরকে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে হলে স্মার্ট জনবল তৈরি করা ও দাপ্তরিক কার্যক্রম স্মার্ট হতে হবে।
চট্টগ্রাম চেম্বারের সহসভাপতি সৈয়দ মোহাম্মদ তানভীর বলেন-আমাদের দেশে তৈরি পোশাক শিল্পের বেশিরভাগই কটন বেইজড ইন্ডাস্ট্রি। কিন্তু উচ্চমূল্যে পণ্য তৈরি করতে হলে ম্যান মেইড ফাইবার পণ্য তৈরি করে রপ্তানি আয় বাড়াতে হবে। ভেল্যুএডেড পণ্য এবং পণ্য বহুমূখীকরণ করতে পারলে আমাদের রপ্তানি আয় দ্বিগুণ হবে।
চেম্বারের সাবেক সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার আলী আহমেদ বলেন- মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্র বন্দর হবে বাংলাদেশের গেইম চেঞ্জার। ভিশন ২০৪১ বাস্তবায়নে লজিস্টিকস হবে প্রধান গুরুত্বপূর্ণ খাত। চেম্বারের প্রাক্তন পরিচালক মাহফুজুল হক শাহ বলেন-মালয়েশিয়ার বিনিয়োগকারীদের জন্য আলাদা ইকোনমিক জোন এবং চট্টগ্রাম থেকে সরাসরি মালয়েশিয়া ফ্লাইট চালু করার প্রস্তাব করেন।
পিএইচপি’র অটোমোবাইলস’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক আক্তার পারভেজ বলেন-একটি ইন্ডাষ্ট্রি করতে গেলে সবকিছু ঢাকা কেন্দ্রিক। চট্টগ্রাম-ঢাকা যাতায়াত করতে গেলে অনেক সময় নষ্ট হয়। তাই বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের কার্যক্রম বিকেন্দ্রীকরণের মাধ্যমে ব্যবসা সহজীকরণ করা গেলে বিনিয়োগ উৎসাহিত হবে এবং বর্তমানে মালয়েশিয়া থেকে প্রোটন গাড়ীর পার্টস এনে বাংলাদেশে সংযোজন করে নেপালে রপ্তানি করি। কারণ নেপালে প্রোটন গাড়ীর যথেষ্ট চাহিদা রয়েছে। তাই তিনি একটি অটোমোবাইল পলিসি করার উপর গুরুত্বারোপ করেন।
