নিজস্ব প্রতিবেদক : নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের চাহিদা বেড়ে যায়। স্বাভাবিকভাবে এসব ভোগ্যপণ্যের দামও ওঠা-নামা করে। রমজান ঘিরে পণ্যের দাম সহনীয় রাখতে সরকার নানামুখী উদ্যোগ নিয়েছে। পণ্য আমদানির ক্ষেত্রে পরিবহন, জাহাজ ও ডলারের সংকট এবং এলসি খোলার জটিলতাও ইতোমধ্যে নিরসন হয়েছে। তাই ভোগ্যপণ্যের দাম ভোক্তাদের নাগালের মধ্যে থাকবেই বলে আশাবাদ আমদানিকারকদের।
দেশে বছরে ভোজ্যতেলের চাহিদার প্রায় ২২ লাখ টনের মধ্যে রমজানে সারাদেশে ভোজ্যতেলের চাহিদা প্রায় ৩ লাখ টনের মতো। এ চাহিদার প্রায় ৬৫ শতাংশই হচ্ছে পাম অয়েল এবং বাকি ৩৫ শতাংশ সয়াবিন তেল। রমজানে ভোজ্যতেলের যোগান স্বাভাবিক রাখতে আমদানিকারকরা পাম অয়েল ও সয়াবিন তেল আমদানি শুরু করেছেন। দেশের অন্যতম শীর্ষ আমদানিকারক এস আলম গ্রæপ রমজান উপলক্ষে ফেব্রæয়ারি, মার্চ ও এপ্রিল এই তিন মাসে ১ লাখ ২০ হাজার টন অপরিশোধিত পাম অয়েল আমদানি করছে।
এছাড়া চাহিদার কথা মাথায় রেখে প্রতিষ্ঠানটি ফেব্রæয়ারি ও মার্চ মাসে আমদানি করছে অতিরিক্ত আরও ১৫ হাজার ৮৬ টন অপরিশোধিত সয়াবিন তেল যা দেশের চাহিদার প্রায় ৫০ শতাংশ এবং রমজানে তেলের সরবরাহ ও বাজার মূল্য সহনীয় রাখতে সাহায্য করবে। এছাড়া, দেশের বাজারে বছরে প্রায় ৬৩ লাখ মেট্রিক টন (দেশীয় উৎপাদন ব্যতীত) গমের চাহিদা রয়েছে। প্রতিমাসে ভোক্তাদের প্রয়োজন পড়ে প্রায় ৫ লাখ ২৮ হাজার মেট্রিক টন গম। রমজানে স্বাভাবিকভাবেই বিভিন্ন খাদ্যপণ্যের চাহিদা বেড়ে যায়। এস আলম গ্রæপ রমজান উপলক্ষে ৩ লাখ ৬২ হাজার মেট্রিক টন গম আমদানি করছে, যা মোট চাহিদার প্রায় ৬৮ শতাংশ। এছাড়া ২০ মার্চের মধ্যে দুইটি জাহাজের মাধ্যমে ১ লাখ ১৫ হাজার টন গম দেশে প্রবেশ করবে। দেশে চিনির বার্ষিক চাহিদা প্রায় ২৪ লাখ টন, এর মধ্যে রমজানে চাহিদা থাকে প্রায় ২ লাখ ৭২ হাজার টনের মতো। এস আলম গ্রæপ রমজানে বাজার স্থিতিশীল রাখতে আমদানি করছে প্রায় ৩ লাখ ৩০ হাজার টন চিনি অর্থ্যাৎ চাহিদার প্রায় সম্পূর্ণ অংশ। বর্তমানে ৫০ হাজার টন চিনি নিয়ে ডেনসা টাইগার নামে একটি জাহাজ চট্টগ্রাম বন্দরে খালাসরত অবস্থায় আছে। আমিরা মিরো নামে আরও একটি জাহাজ এস আলম গ্রæপের চট্টগ্রাম বন্দরের অভিমুখে আছে। যা শিগগির বন্দরে পৌঁছাবে। একইভাবে বছরে ভোক্তাদের ছোলার চাহিদা ১ লাখ ৩৬ হাজার টন। এর মধ্যে রমজানেই ছোলার চাহিদা থাকে প্রায় ৯১ হাজার মেট্রিক টনের মতো। এস আলম গ্রæপ রমজানে ৪৫ হাজার টন ছোলা আমদানি করছে, যা মোট চাহিদার ৫০ শতাংশ।
রমজানে নিত্যপ্রয়োজনীয় এসব পণ্যের আমদানি প্রসঙ্গে এস আলম গ্রæপের মোহাম্মদ আকতার হাসান ও মোহাম্মদ রফিক যথাক্রমে আন্তর্জাতিক ক্রয় বিভাগ চিনি, গম, ছোলা এবং ভোজ্যতেল বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বলেন, পবিত্র রমজানে প্রয়োজনীয় পণ্যের অধিকাংশই আমাদের আমদানি করতে হয়। ডলার সংকট, এলসি জটিলতা, ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ এসব নানা চ্যালেঞ্জের মধ্যেও সরকারি সহযোগিতায় আমরা বেশিরভাগ পণ্যেরই আমদানি স্বাভাবিকভাবেই করতে সক্ষম হয়েছি। আশা করি, দেশের মানুষ রমজানে বাড়তি কোনো ভোগান্তিতে পড়বেন না। সহনীয় দামেই তেল, গম, ছোলা, চিনি পণ্যগুলো কিনতে পারবেন। এস আলম গ্রæপ সর্বদাই দেশের মানুষের ভোগান্তি নিরসনে পাশে থাকবে।