
উভয় দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য আরও সহজতর হবে : বাণিজ্যমন্ত্রী
সোহেল রহমান : বাংলাদেশ ও ভূটানের মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্য সহজতর করার লক্ষ্যে এগ্রিমেন্ট অন দ্য মুভমেন্ট অব ট্রাফিক-ইন-ট্রানজিট অ্যান্ড প্রটোকল সই করা হয়েছে। চুক্তিতে বাংলাদেশের পক্ষে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুন্শি এবং ভুটানের পক্ষে সে দেশের শিল্প, বাণিজ্য ও কর্মসংস্থান মন্ত্রী কর্মা দর্জি সই করেন। বুধবার ভুটানের রাজধানী থিম্পুতে এই চুক্তি সই করা হয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় জানায়, তিন দফা দ্বি-পাক্ষিক আলোচনার মাধ্যমে উক্ত চুক্তি এবং এর আওতায় প্রোটোকল চ‚ড়ান্ত করা হয়। গত ১৩ মার্চ এটি মন্ত্রিসভায় অনুমোদিত হয়। ইতোপূর্বে স্বাক্ষরিত বাংলাদেশ-ভুটান অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য চুক্তি (পিটিএ)-কে বর্তমান সম্পাদিত চুক্তি ও প্রোটোকল অধিকতর কার্যকর করবে। স্বাক্ষরিত চুক্তিটি উভয় দেশ কর্তৃক রেটিফিকেশনের পরে কার্যকর হবে।
চুক্তি সই উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন, যুগান্তকারী এই চুক্তি সইয়ের মধ্য দিয়ে দুই দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য আরও সহজতর হওয়ার পাশাপাশি বাণিজ্য সম্পর্ক নতুন মাত্রা পাবে। এই চুক্তি দেশের জন্য কূটনৈতিক, অর্থনৈতিক, সংযোগ এবং কৌশলগত সুবিধা বয়ে আনবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, প্রতিবেশী রাষ্ট্রসমূহের মধ্যে বাংলাদেশ আন্ত:যোগাযোগ বৃদ্ধি ও আঞ্চলিক ভ্যালুচেইন সমৃদ্ধ করার মাধ্যমে ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসার ঘটাতে চায়। এর অংশ হিসেবে চারিদিকে স্থলভাগবেষ্টিত ভূটানকে বাংলাদেশ ট্রানজিট চুক্তির আওতায় বিমান, রেল, স্থল, নৌবন্দর ও সমুদ্রবন্দর ব্যবহারের সুযোগ প্রদান করছে।
এ চুক্তির ফলে উভয় দেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক এবং আঞ্চলিক যোগাযোগের ব্যাপক প্রসার ঘটবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, বাংলাদেশ ও ভূটানের মধ্যে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্পর্ক উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং দ্বি-পাক্ষিক এই সহযোগিতা ও অংশীদারিত্ব ভবিষ্যতে আরও স¤প্রসারিত ও শক্তিশালী করতে উভয় রাষ্ট্র প্রতিশ্রæতিবদ্ধ। বাংলাদেশের মধ্যে দিয়ে ভূটানের পণ্য রপ্তানি ও আমদানি করলে বাংলাদেশ বিভিন্ন ফি ও চার্জ লাভ করবে। এছাড়া অবকাঠামোগত উন্নয়ন ঘটবে। ট্রানজিট এগ্রিমেন্ট বাস্তবায়িত হলে বাংলাদেশের সমুদ্র বন্দরসমূহ অধিকতর কর্মক্ষম হবে এবং রাজস্ব আয় বাড়বে। অধিকন্তু কর্মসংস্থান বৃদ্ধিসহ বন্দরসমূহের সার্বিক কার্যক্রমে গতিশীলতা আনায়ন করবে। এছাড়া কৃষি খাতে দ্বি-পাক্ষিক সহযোগিতা বিশেষ করে মাশরুমসহ কৃষি পণ্যের বাণিজ্য বৃদ্ধির বিষয়ের ওপর গুরুত্বারোপ করেন তিনি।
প্রসঙ্গক্রমে বাণিজ্যমন্ত্রী আরও বলেন, বর্তমান সরকারের গতিশীল নেতৃত্বে গত এক দশকে অর্থ-বাণিজ্য, স্বাস্থ্য-শিক্ষা এবং যোগাযোগ ও অবকাঠামোসহ সকল খাতে বাংলাদেশ অসাধারণ সাফল্য অর্জন করেছে। যার ফলে বাংলাদেশ এখন বিশ্বের ৩৫তম বৃহত্তম অর্থনীতি দেশে রূপান্তরিত হয়েছে, পরিচিতি পেয়েছে উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে। বিগত বছরগুলোর ন্যায় সমস্ত আঞ্চলিক এবং বহুপাক্ষিক ফোরামে বাংলাদেশকে সমর্থন প্রদান অব্যাহত রাখা ছাড়াও জলবিদ্যুৎ উৎপাদনে সহযোগিতার মাধ্যমে বাংলাদেশের ট্রিলিয়ন ডলারের যাত্রায় ভ‚টানকে উন্নয়ন অংশীদার হওয়ার আহবান জানান তিনি।
