
মতবিনিময় সভায় এফবিসিসিআই সভাপতি জসিম উদ্দিন বলেন নুষ ন্যায্যমূল্যে পণ্য কিনতে না পারলে ইন্ডাস্ট্রির প্রটেকশনের কথা চিন্তা করে লাভ নেই মা

আমিনুল ইসলাম : মানুষ ন্যায্যমূল্যে পণ্য কিনতে না পারলে ইন্ডাস্ট্রির প্রটেকশনের কথা চিন্তা করে লাভ নেই। প্রয়োজন হলে আমদানির অনুমোদন দেয়ার কথা বলবো। কারোর লোভের কারণে ইন্ডাস্ট্রি ক্ষতিগ্রস্থ হলে আমাদের কিছু করার থাকবে না। দেশিয় শিল্প সুরক্ষার কথা বিবেচনা করে আমরা ট্যাক্স সুরক্ষা দেয়া কথা বলেছি। কিন্তু সেই সুযোগে ভোক্তাকে জিম্মি করে অযৌতিকভাবে পণ্যমূল্য বাড়ানো কোনভাবেই ঠিক হবে না। গতকাল বৃহস্পতিবার পবিত্র রমজান মাস উপলক্ষ্যে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের আমদানি, মজুত, সরবরাহ, বাজার পরিস্থিতি ও বাজার মনিটরিং ব্যবস্থা জোরদার করতে সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীদের নিয়ে অনুষ্ঠিত এক মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
সভায় গরুর মাংসের দাম নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন। আমদানি করার পরও দুবাইয়ে গরুর মাংসের কেজি ৫০০ টাকা, তাহলে আমাদের কেন ৭৫০ টাকায় কিনতে হবে? এ অবস্থা চলতে থাকলে ব্রয়লার মুরগি ও গরুর মাংসের দাম কমাতে সরকারকে আমদানির অনুমোদন দেয়ার কথা বলবো।এফবিসিসিআই সভাপতি বলেন, ব্রয়লার মুরগি এখন ২৮০ টাকা। এখন যদি সরকার মনে করে আমদানি করলে দাম কম পড়বে, তাহলে আমদানি করবে। তিনি বলেন, দুবাইয়ে প্রতি কেজি গরুর মাংস ৫০০ টাকা। কিন্তু দুবাইয়ে গরু উৎপাদন হয় না। তারা আমদানি করে যদি ৫০০ টাকা দিতে পারে তাহলে আমারা উৎপাদন করে কেন এত দামে কিনব? এফবিসিসিআই সভাপতি জানান, এখন গরু ও পোল্ট্রির দাম অস্বাভাবিকভাবে বেড়েছে। দেশীয় এ খাত বাঁচাতে এতদিন মাংস আমদানি বন্ধ ছিল। এখন যদি তারা সঠিক মূল্যে গরুর মাংস ও ব্রয়লার মুরগি দিতে না পারে তাহলে আমরা বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে বলব, বাজার ঠিক রাখতে আমদানির অনুমতি দেওয়ার জন্য। আমদানি করলে যদি বাজারে দাম কমে যায়, তাহলে আমদানি করতে হবে। মানুষ যদি ন্যায্যমূল্যে পণ্য কিনতে না পারে, তাহলে ইন্ডাস্ট্রির কথা চিন্তা করে লাভ নেই। সভায় চিনির দাম নিয়ে প্রশ্ন উঠায় এফবিসিসিআই সভাপতি বলেন, সরকার যে রেট নির্ধারণ করেছে সে দামেই বিক্রি কতে হবে। এছাড়া ফিনিসড চিনি আমদানির উপর ৬০ শতাংশ ডিউটি আরোপ করা হয়েছে। এটাকি বিলাসী পণ্য, কার স্বার্থে এতো বেশি ডিউটি আরোপ করা হয়েছে? এবিষয়গুলোও দেখা দরকার।
এবার রোজায় সরকার বাজার মনিটরিংয়ে কঠোর রয়েছে জানিয়ে এফবিসিসিআই সভাপতি বলেন, কোনো বাজারে বেশি মূল্য রাখা হলেই কিন্তু বাজার কমিটি বাতিল করবে সরকার। একইসঙ্গে দাম বেশি নেওয়া প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্সও বাতিল করা হবে। আমরা চাই না রোজায় দাম বেশি নেওয়ার কারণে কোনো ব্যবসায়ীর লাইসেন্স বাতিল হোক বা কাউকে আটক করা হোক। ব্যবসায়ীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, আপনাদের সমস্যা থাকতে পারে, তবে সমস্যাটি আমাদের জানাবেন। আশা করব, আপনারা কেউ বেশি মুনাফা করবেন না।
এফবিসিসিআইয়ের সিনিয়র সহসভাপতি মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বাবু, এম এ মোমেন, বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির সভাপতি মো. হেলাল উদ্দিন ও নিত্যপণ্যের ব্যবসা সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সংগঠনের নেতাসহ বাজার কমিটির সভাপতিরা সভায় উপস্থিত ছিলেন।
সভায় মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বাবু বলেন, বর্তমানে পণ্যমূল্য যা হবার হয়েছে। বর্তমানে পণ্যের দাম যে অবস্থায় আছে সে অবস্থায় যেন থাকে সেটাই আমাদের কাম্য। বাজারে অযৌতিকভাবে কোন পণ্যের দাম বৃদ্ধি হলে সংশ্লিষ্ট বাজার কমিটি তা দেখবে। তারা যদি সফল না হয় তাহলে তাদের লাইসেন্স বাতিল করবে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। আমরা আগের যে কোনরমজানের চেয়ে বেশি স্বস্তিতে থাকতে চাই। বর্তমানে ডিম ও পোল্টি মুরগীর দাম যেভাবে বৃদ্ধি হয়েছে তা চলতে থাকলে আমদানির অনুমোদন দেবে সরকার। কাজেই সতর্ক হয়ে যান। অযৌতিকভাবে দাম বাড়ালে কাউকে প্রটেকশন দেয়া হবে না। তবে বাজারে সরকার নির্ধারিত রেটের চেয়ে বেশি দামে চিনি বিক্রি হচ্ছে এ কথা মানতে চান না দোকান মালিক সমিতির সভাপতি হেলাল উদ্দিন। পরে কোন বাজারে ১০৭ টাকা কেজি দরে চিনি পাওয়া যায় সাংবাদিকরা তা জানতে চাইলে তিনি নিরব হয়ে যান।
সভায় সিটি গ্রæপের বিশ^জিত শাহা বলেন, এবারে যতেষ্ট পরিমান চিনি মজুদ আছে। মেঘনা, সিটি এবং এসআলম মিলে প্রায় ৩ লাখ টন চিনি মজুদ আছে। কাজেই রোজায় আর দাম বাড়বে না।
