নদীতীর অধিবাসীদের দুর্যোগ ঝুঁকি কমাতে ৪ হাজার ৩২৩ কোটি টাকা ব্যয়ে নতুন
প্রকল্পসোহেল রহমান : নদীতীর অধিবাসীদের অভিযোজন ক্ষমতা বৃদ্ধি ও দুর্যোগ ঝুঁকি কমিয়ে আনতে অভিযোজন বৃদ্ধি ও দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাসকল্পে টেকসই অবকাঠামো (নদী) শীর্ষক একটি প্রকল্প গ্রহণ করেছে সরকার। বিশ^ব্যাংকের আইডিএ ঋণের আওতায় এ প্রকল্পটি বাস্তবায়নে ব্যয় ধরা হয়েছে ৪ হাজার ৩২৩ কোটি ৪৭ লাখ টাকা। এর মধ্যে আইডিএ ঋণের পরিমাণ ৪ হাজার ২৭৫ কোটি টাকা এবং সরকারের অর্থায়নের লক্ষ্যমাত্রা ৪৮ কোটি ৪৭ লাখ টাকা। স্থানীয় সরকার বিভাগ-এর আওতাধীন স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে।
এলজিইডি সূত্রে জানা যায়, প্রকল্পটি বাস্তবায়নের মেয়াদকাল ধরা হয়েছে সাড়ে ৫ বছর। চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে ২০২৮ সালের জুন পর্যন্ত। প্রকল্পের আওতায় রয়েছে দেশের ১৪টি জেলার ৭৮টি উপজেলা। নদীতীরবাসী ও আকস্মিক বন্যা কবলিত এলাকার জনগোষ্ঠীর বন্যার ঝুঁকি হ্রাস করা এবং দুর্যোগ প্রস্তুতি ও সাড়া প্রদানে সক্ষমতা বৃদ্ধি করা এই প্রকল্পের প্রধান উদ্দেশ্য। বৈদেশিক সাহায্য প্রাপ্তির সুবিধার্থে প্রকল্পটি চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচী (এডিপি)-তে অননুমোদিত নতুন প্রকল্প তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
প্রকল্পের আওতায় উল্লেখযোগ্য কার্যক্রমের মধ্যে রয়েছেÑ ৫০০টি প্রাথমিক বিদ্যালয় কাম বন্যা আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণ; ১০০টি সৌর শক্তিতে চালিত ক্ষুদ্রকার গ্রীড স্থাপন; ২৫০টি মাঠ উঁচুকরণ; ২৭৫ কিলোমিটার বন্যা আশ্রয়কেন্দ্র সংযোগ সড়ক উন্নয়ন; ৫০০ মিটার ব্রীজ নির্মাণ; ১ হাজার ৩৩০ মিটার কালভার্ট নির্মাণ; ১১০ কিলোমিটার কমিউনিটি ইনফ্রাস্ট্রাকচার সংযোগ সড়ক উন্নয়ন; ১৫টি ল্যান্ডিং স্টেজ (নৌ-ঘাট) নির্মাণ; ৬ হাজার ৬০০টি সড়কে সৌরবাতি স্থাপন এবং ১ হাজার ৪০০টি বজ্রপাত নিরোধক যন্ত্র স্থাপন ইত্যাদি।
এলজিইডি সূত্র জানায়, প্রকল্পটি ৮ম পঞ্চবার্ষিক (জুলাই ২০২০-জুন ২০২৫) পরিকল্পনায় উল্লেখিত বিভিন্ন লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। প্রকল্পটি বন্যাজনিত দুর্যোগের ঝুঁকি হ্রাস এবং ব্যবস্থাপনার প্রস্তুতিতে সরাসরি অবদান রাখবে। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কৌশলের অংশ হিসেবে এ প্রকল্পের অধীনে প্রাসঙ্গিক প্রযুক্তি গ্রহণের/আত্তীকরণের মাধ্যমে আগাম সতর্কতা ব্যবস্থার উন্নয়ন, দুর্যোগ আশ্রয়কেন্দ্রসমূহের ব্যবস্থাপনার জন্য নির্দেশিকা উন্নত করা এবং জলবায়ু সম্পর্কিত চরম ঘটনাসমূহ মোকাবেলায় জরুরি সাড়া প্রদানকারীদের প্রশিক্ষণে বিনিয়োগ করা হবে। একই সঙ্গে প্রকল্প এলাকায় দারিদ্র্য হ্রাসকল্পে অন্তর্ভুক্তিমূলক কাজের সুযোগ সৃষ্টি করা হবে। প্রকল্পে উদ্ভাবনকে গুরুত্ব দিয়ে প্রকল্প ব্যবস্থাপনার অংশ হিসেবে আইসিটিভিত্তিক দক্ষ পরিবীক্ষণ ব্যবস্থার প্রবর্তন করা হবে, যা প্রকল্পের কার্যক্রম স্বচ্ছতা ও সুশাসন নিশ্চিত করার লক্ষ্যে প্রকল্পটির সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে বন্যা অধিকতর ঝুঁকিপূর্ণ ৪টি বিভাগের ১৪টি জেলার ৭৮টি উপজেলায় অধিক সহনশীল ও টেকসই অবকাঠামো (বন্যায় আশ্রকেন্দ্র) নির্মাণের মাধ্যমে বন্যা/দুর্যোগে ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠী বন্যার ক্ষয়ক্ষতি হতে রক্ষা পাবে। এছাড়া অবকাঠামো নির্মাণ কাজে দরিদ্র জনগোষ্ঠীকে সম্পৃক্ত করার মাধ্যমে স্বল্প ও দীর্ঘ মেয়াদি কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে।