মনোয়ার সুলতান
আমাদের ছোট বেলায় যতোদূর মনে পড়ে রোজা হতো বৈশাখ জৈষ্ঠ্যমাসে। বেশ লম্বা দিন, বেজায় গরম। গ্রামে গ্রামে তখন ব্যাপক পাট চাষ হতো। পুরুষেরা তখন পাট ক্ষেত নিড়ানি আর বোর ধান ( শাইল ধান) কাটায় ব্যস্ত দিন পার করতো। তখন উন্নত জাতের ধান চাষের প্রসার ঘটেনি। রোজার প্রথম দিন ছিলো বাড়ির বৌ ঝি দের জন্য চরম আতংকের। পুরুষদের মেজাজ কখন কোন কারণে বিগরে যায় এনিয়ে থাকতো তটস্থ। রোজদার পুরুষের মেজাজ থাকতো ভীষন রকম চড়া। বিকেল হতেই এ বাড়ি ও বাড়ি শোনা যেতো পুরুষের চড়া গলার চিৎকার, গালি গালাজ সাথে মেয়েলী কন্ঠের আর্তচিৎকার আর কান্নার আওয়াজ। রোজার প্রথমদিন লাঠির বাড়ি, লাত্থি মুড়া খাননি এমন মহিলা খুবই কমই ছিল আমাদের গ্রামে। সন্ধ্যায় এখনকার মতো ইফতারির কোন আয়োজনই ছিল না, বেশির ভাগ মানুষ এক গøাাশ পানি খেয়ে রোজা ভাংতেন। তারপরে নিয়মিত খাবার যা হয় তাই খেতেন।
কোন কোন বাড়িতে একগøাস পানিতে একমুষ্টি আতপ চালের সাথে কুচি কুচি করে আদার টুকরা ভিজিয়ে রাখতেন, তা দিয়েই ইফতার সারতেন। খুব অবস্থাপন্য বাড়িতে কেউ কেউ খিচুরি রান্না করতেন। তখনকার দিনে ইফতারির এমন বাহারি আয়োজন ছিলনা, ছিলনা মাছ, মাংশ, ডিম কেনার এমন অসুস্থ প্রতিযোগিতা।