তিস্তার পানি প্রত্যাহারে ভারতের সর্বনাশা চক্রান্ত বন্ধের দাবি
দিনাজপুর প্রতিনিধি : তিস্তার উজানে গজলডোবায় বাঁধ দিয়ে পানি সরিয়ে নেওয়ার কারণে আমাদের উত্তরবঙ্গ মরুভ‚মির পথে। ভারতের পানি আগ্রাসনের কারণে আমাদের প্রাণ-প্রকৃতি-প্রতিবেশ আজ বিপন্ন।
প্রমত্তা তিস্তা ধু-ধু বালুচরে পরিণত হয়েছে। হাজার হাজার মৎস্যজীবী ও মাঝি বেকার হয়ে পথে বসেছেন। তিস্তায় পানি না থাকায় কৃষি উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। এরমধ্যে আবার ভারত নতুন দুটি খাল খনন করে তিস্তার পানি প্রত্যাহারের পাঁয়তারা করছে, যা সর্বনাশা চক্রান্ত। শনিবার তিস্তা বাঁচাও আন্দোলনের উদ্যোগে রংপুর প্রেসক্লাব চত্বরে আয়োজিত মানববন্ধন ও সমাবেশে বক্তারা এসব কথা বলেন।
সমাবেশে বক্তারা আরও বলেন, ভারত আন্তর্জাতিক নদী আইন লঙ্ঘন করে একতরফাভাবে তিস্তাসহ অভিন্ন ৫৪ নদীর পানি প্রত্যাহার করছে। ভারতের জলপাইগুড়ি ও কোচবিহারে নতুন খাল খনন করে পানি প্রত্যাহারের যে ব্যবস্থা নিয়েছে, তা বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলের কয়েকটি জেলার জন্য ভয়ানক বিপদ ডেকে আনবে।
ভারতের এই নতুন খাল খননের মাধ্যমে তিস্তার পানি প্রত্যাহারের সর্বনাশা চক্রান্ত বন্ধ ও তিস্তাসহ অভিন্ন ৫৪ নদীর পানির ন্যায্য হিস্যা আদায়ে সরকারের কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান বক্তারা। সংগঠনের আহŸায়ক অ্যাডভোকেট পলাশ কান্তি নাগের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য দেন অধ্যাপক মোজাহার আলী, অধ্যাপক আব্দুস সোবহান, মুক্তিযোদ্ধা মোজাফফর হোসেন চাঁদ,সাংবাদিক বাবলু নাগ, শ্রমিক নেতা সবুজ রায়, মসিউর রহমান এবং নারীনেত্রী সানজিদা আক্তারসহ অন্যরা।
২৫ মার্চকে আন্তর্জাতিক গণহত্যা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার আহŸান প্রধানমন্ত্রীর
মাসুদ মিয়া: প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চকে আন্তর্জাতিক গণহত্যা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি দিতে জাতিসংঘসহ আর্ন্তাতিক স¤প্রদায়ের প্রতি আহŸান জানিয়েছেন। গতকাল শনিবার প্রধানমন্ত্রী গণভবনে আওয়ামী লীগের সংসদীয় বোর্ডের সভায় সভাপতিত্বকালে এই আহŸান জানান।
তিনি বলেন, পাকিস্তানী দখলদার বাহিনী এই দিন থেকেই (১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ) হত্যাযজ্ঞ শুরু করে। আমরা ২৫ মার্চকে আর্ন্তজাতিক গণহত্যা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি চাই। তাই আমি জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক স¤প্রদায়ের প্রতি এ ব্যাপারে পদক্ষেপ নেয়ার আহŸান জানাচ্ছি।
শেখ হাসিনা বলেন, ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চের ভয়াল রাতে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী নিরস্ত্র বাঙালিদের ওপর হামলা চালায়। তারা নয় মাস ধরে হত্যাকা- চালিয়েছিল। শেখ হাসিনা বলেন, সেসময় ৩০ লাখ মানুষকে হত্যা এবং ঘরবাড়ি পুড়িয়ে ছাই করে দেওয়ায় আরো ৩ কোটি মানুষ গৃহহীন হয়ে পড়ে।
তিনি আরো বলেন, ‘মোট ৭ কোটি মানুষের মধ্যে ৩ কোটি মানুষ গৃহহীন হয়ে পড়ে ও ১ কোটি মানুষ শরণার্থী হিসেবে ভারতে আশ্রয় নেয়। শেখ হাসিনা বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ধ্বংসস্তুপ থেকেই রাষ্ট্র পরিচালনা শুরু করেছিলেন এবং যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশটিকে গড়ে তুলেছিলেন।
তিনি আরো বলেন, জাতির পিতা তাঁর ক্ষমতায় থাকার তিন বছর সাত মাসের মধ্যে বাংলাদেশকে একটি উন্নয়নশীল দেশে পরিণত করেছিলেন। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট তাঁকে (বঙ্গবন্ধু) নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। প্রধানমন্ত্রী বলেন, শুধু জাতির জনককেই নয়, ১৯৭৫ সালের ৩ নভেম্বর ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের অভ্যন্তরে, তাঁর সহযোগী ও জাতীয় চার নেতাকেও নির্মমভাবে হত্যা করা হয়।
তিনি বলেন, আমি বলতে চাই যে শহীদদের রক্ত কখনো বৃথা যায় না। আমরা স্বাধীনতা অর্জন করেছি এবং আজ আমরা একটি উন্নয়নশীল জাতির মর্যাদা অর্জন করেছি। বাসস
সকল শহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশকে একটি উন্নত ও সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে তাঁর সরকার জাতির পিতাসহ শহীদদের প্রতি অঙ্গীকারাবদ্ধ।
বৈঠকে আওয়ামী লীগের সংসদীয় বোর্ডের সদস্যগণ উপস্থিত ছিলেন।