বৈদেশিক ঋণের প্রতিশ্রুতি ও অর্থছাড় কমেছে, কী প্রভাব পড়বে অর্থনীতিতে?
ড. জামাল উদ্দিন আহমেদ : একটা দেশের রিসোর্স যখন ইনফ্লো হয়, দেশে ঢুকে এবং আমরা যখন তা খরচ করি, তখন প্রতিশ্রæতি অনুযায়ী এই ঋণের ফ্লো যদি কমে আসে, তাহলে এটি বাজেটরি ম্যানেজমেন্টের জন্য একটা বিশাল সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। কারণ নির্দিষ্ট একটা সময়ে ভেতরে যদি ঋণের যে ছাড়, তা না হয়Ñ তাহলে এখানকার পরিকল্পিত প্রোগ্রাম তা ঠিকমতো ক্যারি-আউট করা সম্ভব হয় না। রেমিট্যান্স এবং এক্সপোর্ট যদি ইনক্রিজিং থাকে, তাহলে এই ক্যারি-আউট করা আর সম্ভব হবে না। কিন্তু এখনকার যে পরিস্তিতি তাতে একটা সংকটের সৃষ্টি হতে পারে। সেটা যেন না হয় তার জন্য আমাদের সতর্ক থাকতে হবে এবং আগে থেকে পকিল্পনা করে রাখতে হবে, এই টার্মে আমাদের কতো ঋণ ফ্লো ঢুকবে এবং আউট হবে। এটাতে যদি একটা ব্যালেন্স ধরে রাখা না যায়, তাহলেই এ সমস্যার সৃষ্টি হবে।
তবে বৈদেশিক ঋণ কমে গেলেও সরকার যদি লোকাল বন্ড ইস্যু করে তাহলেও টিকে থাকা সম্ভব। তবে এটি দীর্ঘ মেয়াদী বন্ড ইস্যু করার প্রয়োজন। তবে আগে থেকেই পরিকল্পিতভাবে এই বিকল্প ব্যবস্থাটা রাখা উচিত। বৈদেশিক ঋণের বিষয়টা হলো, যতোক্ষণ পর্যন্ত টাকাটা আমরা হাতে না পায়, আমরা এটি এক্সপান্ড করতে পারবো না। সুতারাং এ ক্ষেত্রে আগে নিশ্চিত হতে কতো পরিমাণ মানি আমরা হাতে পাচ্ছি এবং এক্সপোর্টের যে সোর্সগুলো তাদের সঙ্গে ভালো রিলেশান বজায় রাখতে হবে এবং আমাদের ইন্টারনাল রেভিনিউ সোর্সটাকে ঠিক রাখতে হবে। তাছাড়া প্রতিবছর ১০ শতাংশ বৃদ্ধির টার্গেট রাখতে হবে। তা না হলে এই পরনির্ভশীলতা যুগ যুগ ধরে চলতে থাকবে। কেউই চায় না এই পরনির্ভরশীলতার মধ্যে পড়তে। তাই আামাদের অভ্যন্তরীণ যে সোর্সগুলো আছে, এগুলোকে কাজে লাগাতে হবে। প্রতি মাসেই আমাদের একটা টার্গেট সামনে রেখে চলতে হবে, তাহলেই উন্নতি করা সম্ভব। বৈদেশিক ঋণ তহবিল যদি কমে যায়, সেক্ষেত্রে আমাদের করণীয় হলোÑ রেমিট্যান্স আরও ২০ থেকে ২৫ শতাংশ বৃদ্ধি করা। এছাড়া ফরেন লোনের যে পেমেন্ট থাকে, তা আগে থেকেই ক্যালকুলেশন করে সতর্ক থাকতে হবে। তাহলেই আর ঝুঁকিতে পড়ার শঙ্কা থাকবে না।
পরিচিতি: অর্থনীতিবিদ। অনুলিখন : খসরুল আলম। অর্থযোগ, একাত্তর টিভি