রমজানের শুরুতে পণ্যের দামে অস্বস্তি থাকলেও এখন অনেকটা কেটে গেছে
মাসুদ মিয়া : রমজানের শুরুর দিকে নিত্যেপণ্যের দামে যে অস্বস্তি শুরু হয়েছিলো, তা এখন অনেকটা কেটে গেছে। সপ্তাহের ব্যবধানে রাজধানীর বাজারে কমেছে সব ধরনের ডিম, সবজি ও মাছের দাম। গতকাল শুক্রবার রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে এ চিত্র।
মতিঝিল বাজারে ব্যবসায়ীরা বলেন, বাজারে মাছের দামও প্রথম রোজার তুলনায় কেজিপ্রতি ২০-৫০ টাকা কম দেখা গেছে। এছাড়া সরবরাহ বেশি হওয়ায় মাছের দরও কিছুটা কমেছে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। একই বাজারের মাছ ব্যবসায়ীরা বলেন, প্রথম রোজায় সবকিছুর দাম তরতর করে বেড়েছে। মানুষ কিনেছেও বেশি।
তারা বলেন, এখন যে চাহিদা তার চেয়ে বাজারে প্রচুর মাছ এসেছে। যে কারণে দাম আগের চেয়ে কিছুটা কমেছে। যতদিন যাবে মাছের চাহিদা কমবে বলে জানান ব্যবসায়ীরা। ঈদের মধ্যে রাজধানীতে মাছের চাহিদা প্রায় থাকেই না। সে কারণে এখন অনেকে মাছ বিক্রি করে দিচ্ছে। একইভাবে বড় রুই, কাতলা, মৃগেল ও কার্ফু মাছ ২২০-৩০০ টাকা কেজি দরে পাওয়া যাচ্ছে। যেগুলোর দাম গত সপ্তাহে আরও ২০-৫০ টাকা বেশি ছিল।
বাজারে ইলিশ মাছের সরবরাহও রয়েছে ভালো। এছাড়া বড় বড় পাঙাশ ও তেলাপিয়া মাছ দেখা গেছে দোকানে দোকানে। এগুলো বিক্রি হচ্ছে ১৮০-২০০ াকা দরে। অন্যদিকে কলতাবাজারের সবজি বিক্রয়তা সাদ্দাম বলেন, সপ্তাহের ব্যবধানে সবজির দামও ১০-৩০ টাকা কমেছে। ভালো মানের বেগুণ রোজার প্রথম দিকে ১০০ টাকা বিক্রি করেছি। এখন সেটা ৬০ টাকা। এর কমেও বিক্রি হচ্ছে কোথাও কোথাও। আবার ৮০ টাকার শসা এখন ৫০ টাকা হয়েছে। ৬০ টাকা লেবুর হালি এখন ৩০ টাকায় বিক্রি করছি। রমজানের প্রথমদিন বেগুন, লেবু, শসার মতো ইফতারে প্রয়োজনীয় পদগুলোর দাম অস্বাভাবিক বেড়েছিল। এখন সেগুলোর দাম কিছুটা কমলেও বাজারে বেশ চড়া অন্যান্য পদের সবজির দাম।
খোদ বিক্রেতারাই বলছেন, এক সপ্তাহের ব্যবধানে দাম কিছুটা কমলেও স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে দাম এখনো বেশি। পেঁপে আর আলু ছাড়া বাজারে ৫০-৬০ টাকার নিচে কোনো সবজি নেই। অনেক পদের দাম ১০০ টাকায় আটকে রয়েছে। বাজার ঘুরে দেখা গেলো, এখন সজিনা, বরবটি ও কচুর লতি বিক্রি হচ্ছে ৮০-১০০ টাকায়। পটোল, ভেন্ডি, ঝিঙা, চিচিংগা, বেগুন, শসার দাম ৬০-৭০ টাকা। আর শিম, মুলা ও টমেটো প্রতিকেজি ৫০-৬০ টাকা।
সবচেয়ে কম দামের সবজি কোনটা জানতে চাইলে রামপুরা বাজারে বিক্রেতা আবদুল হানিফ বলেন, দাম অনেক বেশি ছিল, এখন কমতে শুরু করেছে। রোজার শেষে একদম কমে আসবে। কারণ ঈদে সবজির চাহিদা থাকে না। এদিকে বাজারে অপরিবর্তিত দেখা গেছে, গরুর মাংসের দাম। বিক্রি হচ্ছে ৭৫০ টাকা কেজি দরে। তবে বাজারে কিছুটা কমে ফার্মের ডিম প্রতি ডজন ১৩০-১৩৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। যা শেষ সপ্তাহে ১৪০-১৫০ টাকা উঠেছিল।
বাজারভেদে সরু মিনিকেট চাল ৬৮ থেকে ৭৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। মাঝারি মানের বিআর২৮ বিক্রি হচ্ছে ৬০-৬২ টাকা। ভালো মানের নাজিরশাইল চালের কেজি ৭৫ থেকে ৮৫ টাকা। আর মোটা চাল ৫৪-৫৫ টাকা কেজি। এদিকে শ্লিষ্টরা বলছেন, ডলার সংকট ও পণ্য আমদানি বন্ধসহ নানা অজুহাতে রমজানে চাহিদার শীর্ষে থাকা খাদ্যদ্রব্যের দাম কয়েক দফায় বাড়িয়ে দেওয়া হয়। এদিকে বাড়তি দামের বোঝা বইতে গিয়ে হিমশিম খেতে হয় নিম্নআয়ের মানুষদের।