ফাতেমা বেগম:ধরা যাক, কাঠাল অর্থাৎ কাঁচা কাঠালকে মাংসের বিকল্প হিসাবে চালু করা হলো। নিরামিষাশী হিসাবে আমার জন্য এটা খুব ভালো খবর।
তবে ব্যাপারটা কি এত সোজাসাপ্টা ? দাম, সরবরাহের সংকট মোকাবেলায় বিকল্প হিসাবে কাঠালকে খাদ্য হিসাবে প্রথম সারিতে রাখার জন্য সুপারিশ করা হলো।
উন্নত দেশগুলিতে নাকি মাংস খেতে চাচ্ছে না মানুষ। খুব ভুল একটা কথা। এসব দেশে শাকসব্জী র চাইতে মুরগীর মাংসের দাম কম পড়ে। গরীবরা মুরগীর মাংসের উপর বেশী নির্ভরশীল। আর নিরামিষভোজীর সংখ্যা এখনো নগন্য। নইলে, ম্যাকডোনাল্ডস সব্জী বার্গার বানাতো অবশ্যই।
এরপর আসি দেশে । কাবাব, বার্গার ইত্যাদি মাংসজাত খাদ্যে মাংসের বদলে কাঠালের ব্যবহার করে খাদ্য সংকটের সমাধান করার জন্য উচুঁ মহলের নির্দেশের ব্যাপারে। তাইলে প্রচুর কাঠাল উৎপাদন করতে হবে। অবশ্যই তা কাঁচা রাখতে হবে এবং তা ১২ মাস করতে হবে। ঋতুকালীন পর্যায়ে আর রাখা যাবে না। এই চক্করে মানুষের পাঁকা কাঠাল খাওয়ার সংকট হলেও হতে পারে। কোল্ড স্টোরেজে গুদামজাত করে কাঁচা কাঠালের সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে। কোনভাবে তাদের পাঁকতে দেয়া যাবে না।
তো অর্থনীতির ব্যাখ্যায় চাহিদা- সরবরাহের ক্ষেত্রে কাঁচা কাঠালের চাহিদা বাড়বে। দাম বাড়বে। সরবরাহ যদি বাড়ানো হয় তাহলে কি দাম কমে যাবে? তাহলে তো মুনাফা সংকটে পড়ে যাবে। তখন বø্যাক মার্কেট করার একটা সম্ভাবনা তৈরী হবে।
পুঁজিবাদের আদর্শে অতিফলনের জিনিষ প্রয়োজনে পঁচানো হয়,কিন্তু দাম কমতে দেয়া হয় না। তখন কি আবার কাঁচা কাঠালের আরেক বিকল্প বলা হবে?মোট কথা, আম, জাম, কাঠাল, কুমড়া যে কোন কিছুকে বিকল্প খাদ্য হিসাবে ভাবানো কোন সমাধান নয়। এরা কোন বিকল্পও নয়।
মূল সমস্যা হলো অনিয়ন্ত্রিত- বাজার ব্যবস্থা। মানুষকে তা না ভাবতে দিতেই এই সব কাল্পনিক বৈকল্পিক সমাধান প্রচার করা হয়।মানুষ বিনোদিত হয়। (লেখকের ফেইসবুক স্ট্যাটাস থেকে নেয়া)