মোংলা বন্দর চ্যানেলের ইনার বারে ড্রেজিংয়ে ২০০ কোটি টাকা ব্যয় বাড়ছে
সোহেল রহমান : মোংলা বন্দর চ্যানেলের ইনার বারে ড্রেজিং প্রকল্পে প্রায় ২০০ কোটি টাকা ব্যয় বাড়ছে। একই সঙ্গে প্রকল্পের মেয়াদও বাড়ছে ২ বছর। মূল প্রকল্পে ব্যয় ধরা হয়েছিল ৭৯৩ কোটি ৭৩ লাখ টাকা। এটি এখন বেড়ে দাঁড়াচ্ছে ৯৯২ কোটি ২৭ লাখ টাকা। অন্যদিকে মূল প্রকল্পে প্রকল্প বাস্তবায়নের সময়কাল ধরা হয়েছিল দুই বছর (২০২০ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২২ সালের জুন পর্যন্ত)। এটি আরও দুই বছর বাড়িয়ে প্রকল্প বাস্তবায়নের মোট সময়কাল দাঁড়াচ্ছে সাড়ে চার বছর (২০২০ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত)। সম্পূর্ণ সরকারি অর্থায়নে বাস্তবায়নাধীন এ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ। নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, ড্রেজিং এলাকা বৃদ্ধিসহ পাঁচটি কারণে প্রকল্প ব্যয় বাড়ছে। অন্যান্য কারণগুলো হচ্ছেÑ ডাইকের পরিমাণ বৃদ্ধি; জমি অধিগ্রহণ বাবদ ক্ষতিপূরণ বৃদ্ধি; জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধি এবং আয়কর বাবদ ব্যয় বৃদ্ধি। প্রকল্প এলাকা হচ্ছে বাগেরহাট জেলার মোংলা উপজেলা। প্রকল্পটি বাস্তবায়নে চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি)-তে ৩০০ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয় জানায়, প্রকল্পটির উদ্দেশ্য হচ্ছেÑ মোংলা বন্দরের জেটিতে ৯.৫-১০ মিটার ড্রাফটের জাহাজ হ্যান্ডলিং করা এবং জাহাজ হ্যান্ডলিং-এর জন্য পশুর চ্যানেলের গভীরতা ৮.৫ মিটার (ক্লিয়ার ড্রাফট) অর্জনের লক্ষ্যে ২৩৭.৫৫ লাখ ঘনমিটার ড্রেজিং সম্পন্ন করা। প্রকল্পের আওতায় উল্লেখযোগ্য কার্যক্রমের মধ্যে রয়েছেÑ ১ হাজার ৬০০ একর জমি অধিগ্রহণের জন্য ক্ষতিপূরণ প্রদান; ১৭৭.৩৭ লাখ ঘনমিটার এলাকা ড্রেজিং করা (কাটার সাকশান ড্রেজার দ্বারা); ৬০.১৮ লাখ ঘনমিটার এলাকা ড্রেজিং করা (ট্রেইলিং সাকশান হপার দ্বারা); ৩০.৭০ লাখ ঘনমিটার ডাইক নির্মাণ এবং ১ লাখ ঘনমিটার জিয়োটিউব ডাইক নির্মাণ। নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয় জানায়, প্রকল্পটি পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ। অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় নদী ও সমুদ্র বন্দর আধুনিকীকরণ ও উন্নত করা, অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন সেবার মান উন্নয়নের বিষয়ে উল্লেখ রয়েছে। এছাড়া এসডিজি’র ৯ম লক্ষ্যমাত্রার (মানসম্মত, নির্ভরযোগ্য, টেকসই ও জলবায়ু অভিঘাত সহনশীল অবকাঠামো নির্মাণ) সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। বর্ণিত প্রকল্পটির কার্যক্রম ৮ম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা ও এসডিজি’র উদ্দেশ্য ও লক্ষ্যের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে মোংলা বন্দরের জেটিতে ৯.৫-১০ মিটার ড্রাফটের জাহাজ হ্যান্ডলিং-এর জন্য প্রয়োজনীয় গভীরতা অর্জন করা সম্ভব হবে। এর ফলে বার্ষিক অতিরিক্ত ১০০টির মত জাহাজ হ্যান্ডলিংয়ের মাধ্যমে অধিক পরিমাণ রাজস্ব অর্জিত হবে। এছাড়া মোংলা বন্দরের বর্ধিত চাহিদা সুষ্ঠুভাবে মোকাবিলা করার জন্য মোংলা বন্দরের সক্ষমতা বৃদ্ধিতে উল্লেখযোগ্য ভ‚মিকা রাখবে।