নয় মাসে ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে ৫২ হাজার ৩৬০ কোটি টাকা ঋণ নিয়েছে সরকার
সোহেল রহমান : চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রথম নয় মাসে (জুলাই ২০২২- মার্চ ২০২৩) ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে ৫২ হাজার ৩৬০ কোটি টাকা ঋণ নিয়েছে সরকার। এর মধ্যে কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকেই নিয়েছে ৫০ হাজার ৩৮০ কোটি টাকা। এটি মোট ঋণের ৯৬ দশমিক ২১ শতাংশ।
বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাব অনুযায়ী, গত ফেব্রæয়ারিতে ব্যাংক খাত থেকে প্রায় ৬ হাজার ৮০৩ কোটি টাকা এবং মার্চে প্রায় ১১ হাজার কোটি টাকা ঋণ নিয়েছে সরকার। অন্যদিকে ব্যাংক-বহির্ভূত খাত থেকে ঋণ নেয়া হয়েছে মাত্র ১ হাজার ৪০৯ কোটি টাকা। প্রসঙ্গত: চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেটের ঘাটতি মেটাতে ব্যাংক খাত থেকে সরকারের ঋণ গ্রহণের লক্ষ্যমাত্রা হচ্ছে ১ লাখ ০৬ হাজার ৩৩৪ কোটি টাকা। এর বিপরীতে সরকার তফসিলি ব্যাংকগুলো থেকে গত ২০২২ এর ডিসেম্বর পর্যন্ত ঋণ না নিয়ে উল্টো আগের ঋণ বেশি পরিশোধ করেছে। ডিসেম্বরে সরকারের পরিশোধের পরিমাণ ছিল প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকা। ব্যাংক খাত সূত্রগুলো মতে, কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে ঋণ নিলে মানি সার্কুলেশন বেড়ে যায়। আর টাকার প্রচলন যত বাড়বে, মুদ্রাস্ফীতি তত বাড়বে। তবে তফসিল ব্যাংকগুলো থেকে ঋণ নিলে মানি সার্কুলেশন নতুন করে বাড়ে না। এ প্রেক্ষিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে সরকারের ঋণ গ্রহণ কমিয়ে ব্যাংক-বহির্ভূত খাত থেকে সরকারের অধিক ঋণ নেয়া দরকার বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। কারণ এর মাধ্যমে সাধারণ মানুষের টাকা সরাসরি সরকারের কাছে যাবে, এতে অর্থের সঞ্চালন কমবে এবং একইসঙ্গে মূল্যস্ফীতিও কমবে। জানা যায়, বর্তমানে ব্যাংকগুলোর তারল্য ব্যবস্থা কিছুটা স্বাভাবিক রয়েছে। ব্যাংকগুলো ২০২৩ এর জানুয়ারিতে সরকারের (ট্রেজারি বিল-বন্ড) কিনে ঋণ দিয়েছে ৫৭২২ কোটি টাকা। ফেব্রæয়ারিতে কিনেছে ৭৮৪৪ কোটি টাকা এবং মার্চে ৬ হাজার ২৪ কোটি টাকা।
এদিকে গ্রাহকরা সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ না করে বরং ব্যাংকিং ব্যবস্থা থেকে বেশি টাকা তুলে নিচ্ছেন। বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের জুলাই-ফেব্রæয়ারি মেয়াদে গ্রাহকরা সঞ্চয়পত্রে ৫৫ হাজার ৮৬২ কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছেন, কিন্তু উত্তোলন করেছেন ৫৯ হাজার ৩৭২ কোটি টাকা। অর্থাৎ, সঞ্চয়ের তুলনায় ৩ হাজার ৫১০ কোটি টাকা বেশি তুলে নিয়েছেন তারা।