বেজা ও ডিবিসিসিআই’র মধ্যে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর
মো. আখতারুজ্জামান : বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ এবং ডাচ-বাংলা চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ (ডিবিসিসিআই)এর গতকাল সোমবার একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর হয়েছে। এ সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের মূল উদ্দেশ্য অর্থনৈতিক অঞ্চলে বিদেশি বিশেষ করে নেদারল্যান্ড ও বেলজিয়ামের বিনিয়োগ আকৃষ্ট করার লক্ষ্যে যৌথভাবে কাজ করা। এজন্য ডিবিসিসিআই বেজাকে নীতিগত সহযোগিতা, দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য সম্পর্কে উন্নয়নে পলিসি ডায়লগ আয়োজনসহ সম্ভাব্য নেদারল্যান্ড ও বেলজিয়ামের বিনিয়োগকারী আনয়নে প্রয়োজনীয় সহায়তা দেবে। বেজার পক্ষে সমঝোতা স্মারকটি স্বাক্ষর করেন সরকারের যুগ্ম সচিব এবং বেজা’র মহাব্যবস্থাপক (বিনিয়োগ উন্নয়ন) মো. মনিরুজ্জামান এবং ডিবিসিসিআই’র পক্ষে স্বাক্ষর করেন প্রতিষ্ঠানের সভাপতি মো. আনোয়ার শওকত আফসার। এ সময় বেজা ও ডিবিসিসিআই’র উর্দ্ধতন নির্বাহীরা উপস্থিত ছিলেন। সভায় সভাপতিত্ব করেন বেজার নির্বাহী চেয়ারম্যান শেখ ইউসুফ হারুন। অনুষ্ঠানে ডিবিসিসিআই’র সভাপতি বলেন, বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চলের হাত ধরে বাংলাদেশ বিনিয়োগ-বান্ধব সুস্থ পরিবেশ গড়ে তুলতে সমর্থ হয়েছে। বিশ্বের কাছে উন্নয়নের একটি রোল মডেল হিসেবে স্থান পেয়েছে। তিনি আশা করেন এই সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের ফলে বাংলাদেশে নেদারল্যান্ড ও বেলজিয়ামের বিনিয়োগের ক্ষেত্র আরো প্রসারিত হবে। দেশে প্রতিষ্ঠিত প্রথম দ্বিপাক্ষিক চেম্বার অফ কমার্স হিসেবে ডিবিসিসিআই ১৯৯৯ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে তিন দেশের ব্যবসায়িক সম্পর্ক উন্নয়নের লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে। তিনি জানান, প্রায় প্রতিবছর বেলজিয়াম ও নেদারল্যান্ড এ বিনিয়োগ উন্নয়ন সম্পর্কে বিভিন্ন সভা-সেমিনারের আয়োজন করে থাকে ডিবিসিসিআই। জিটুজি অর্থনৈতিক অঞ্চলের মত একটি ইউরোপীয় অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তুলতে বেজার সাথে যৌথভাবে কাজ করতে আগ্রহ প্রকাশ করেন তিনি। সভাপতির বক্তব্যে বেজার নির্বাহী চেয়ারম্যান শেখ ইউসুফ হারুন বেজা’র সাথে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের জন্য ডিবিসিসিআই-কে অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, বিনিয়োগকারীদের জন্য নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচনে বেজা বিনিয়োগ বান্ধব পরিবেশ সৃষ্টির পাশাপাশি পরিকল্পিত শিল্পায়নের জন্য প্রতিযোগিতামূলক মূল্যে জমি প্রদান করছে।
তিনি বলেন, দেশি ও বৈদেশিক বিনিয়োগ আকর্ষণের মাধ্যমে সরবরাহ ব্যবস্থা ঠিক রাখার পাশাপাশি দেশিয় চাহিদা পূরণ ও রপ্তানির ধারা অব্যাহত রাখার জন্য বেজা কাজ করে যাচ্ছে। তিনি উল্লেখ করেন, জাতীয় স্বার্থ রক্ষা করে জি টু জি ভিত্তিতে বিভিন্ন অর্থনৈতিক অঞ্চল (ভারত, জাপান এবং চীনের সাথে) গড়ে তুলছে বেজা। এছাড়াও তিনি উল্লেখ করেন, বর্তমানে বেজা’র আওতাধীন যে সকল সরকারি ও বেসরকারি অর্থনৈতিক অঞ্চলে জমি বরাদ্দ চলমান রয়েছে। সকল অঞ্চলে ডাচ বিনিয়োগকারীরা উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বিনিয়োগ করছেন। তিনি বেজা কর্তৃক স্থাপিত ট্যুরিজম পার্কসমূহ এ বিনিয়োগের জন্য ডাচ বিনিয়োগকারীদের প্রতি আহŸান জানান। তিনি আরো বলেন, সকল বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ রক্ষায় বেজাতে বাংলাদেশের প্রথম ওয়ান স্টপ সার্ভিস সেন্টার (ওএসএসসি) চালু করা হয়। এর মাধ্যমে বর্তমানে বেজা এবং অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের ১২৫টি সেবা প্রদান করা হচ্ছে। যার মধ্যে ৫১টি সেবা অনলাইনে প্রদান করা হচ্ছে।
অন্যান্য সেবাগুলো অনলাইনে অন্তর্ভুক্তকরণের লক্ষ্যে বেজা কাজ করে যাচ্ছে। এ সকল সেবা প্রদানের জন্য বেজা সরকারের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সাথে প্রয়োজনীয় সমন্বয় করে থাকে। এ প্রসঙ্গে তিনি ডিবিসিসিআই’র সরব ভ‚মিকা কামনা করেন।
বেজার নির্বাহী চেয়ারম্যান আশাবাদ ব্যক্ত করেন, ডিবিসিসিআই’র সহায়তায় বেজা অর্থনৈতিক অঞ্চলে ডাচ বিনিয়োগে উদ্বুদ্ধ করার লক্ষ্যে যৌথভাবে কাজ করবে। সকল দেশের মধ্যে বাণিজ্যিক সম্পর্ক আরও বৃদ্ধি পাবে। সভায় অন্যান্যদের মধ্যে বেজা’র নির্বাহী সদস্যরা মো. ইরফান শরীফ ও মো. আলী আহসান এবং ডিবিসিসিআই’র মো. শাখাওয়াত হোসেন মামুন, সাহিদ আলম, মো. রিসালাত সিদ্দিক, নাজমুল হকসহ অন্যান্য প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।