ঈদের ছুটিতে বিমানবন্দরে প্রবাসীদের বিশেষ সেবাদানের অনুরোধ জনশক্তি ব্যুরোর
এস.ইসলাম জয় : ঈদ উপলক্ষে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে দেশে আসছেন প্রবাসীরা। এ সময়ে বেশির ভাগ ফ্লাইটের যাত্রী প্রবাসীরা। ঈদকে কেন্দ্র করে বিমানবন্দরে রয়েছে ভাড়তি চাপ। এই সময়ে প্রবাসীকর্মীরা বিমানবন্দরে যাতে কোনও দুর্ভোগে না পড়েন সে বিষয়ে আন্তরিক হয়ে বিশেষ সেবা দিতে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ জানিয়েছে জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো (বিএমইটি)।
অভিবাসী কর্মীদের পাঠানো রেমিট্যান্স দেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভ‚মিকা রাখছে। প্রবাসীরাও প্রত্যাশা করেন মাতৃভ‚মিতে এসে বিমানবন্দরে যথাযথ সেবা ও মর্যাদা পাবেন। ঈদের ছুটিতে প্রতিদিনই প্রায় চার হাজারের মতো প্রবাসী দেশে ফিরছেন। দীর্ঘদিন পর দেশে ফেরার কারণে তারা থাকেন অনেক বেশি আবেগপ্রবণ। এ বিষয়গুলো বিবেচনা করে প্রবাসী কর্মীদের বিমানবন্দরের সব কাজ যেন সহজে সম্পন্ন হয়, তারা যাতে আনন্দের সঙ্গে বাড়ি যেতে পারে সেজন্য সব সেবা সহজ করতে অনুরোধ করেছে জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো (বিএমইটি)।
গতকাল সোমবার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালককে এ ব্যাপারে অনুরোধ জানিয়ে চিঠি দিয়েছে বিএমইটি। এছাড়া, হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ইমিগ্রেশন পুলিশ, কাস্টমসকেও চিঠি দেওয়া হয়েছে। বিএমইটির অতিরিক্ত মহাপরিচালক এ এইচ এম আনোয়ার পাশা স্বাক্ষরিত ওই চিঠিতে বলা হয়, আপনজনদের সঙ্গে উৎসব পালন করতে মাতৃভ‚মিতে ফেরার সময় কর্মীদের মনে বিশেষ আবেগ ও যতœ প্রাপ্তির প্রত্যাশা থাকে। এজন্য প্রবাসী কর্মীদের নিরাপদে বাড়ি ফিরতে পারার আনন্দ দিতে বিমানবন্দর থেকে দেওয়া সব সেবা সহজ করার মাধ্যমে দায়িত্বে নিয়োজিত সবাইকে বিশেষ সেবাদানের অনুরোধ করা হচ্ছে। বিমানবন্দরে প্রবাসী কল্যাণ ডেস্কের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের এ বিষয়ে ইতোমধ্যে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
সাম্প্রতিক সময়ে যারা দেশে ফিরছেন তাদের কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলেছে। বেশিরভাগ প্রবাসী কর্মী বিমানবন্দরের সেবার মান আগের চেয়ে বেড়েছে বলে মত দিয়েছেন। তবে কাস্টমস রুলস, কাস্টমস কর্মকর্তাদের আচরণ নিয়ে মনক্ষুণ্ন তাদের অনেকেই। বিমানবন্দরের শৃঙ্খলা নিয়েও কেউ কেউ অসন্তুষ্ট।
বাহরাইন থেকে ১৩ এপ্রিল দেশে এসেছেন প্রবাসী রায়হান আহমেদ। তিনি বলেন, এবার সব খুব দ্রæত কাজ হতে দেখলাম। আমার ইমিগ্রেশনে এক মিনিটও সময় লাগেনি। অনেক ভালো লেগেছে।
সৌদি আরব থেকে আসা প্রবাসী মাহমুদুল হাসানের অভিজ্ঞতাও ভালো। তিনি বলেন, সৌদি থেকে বাংলাদেশ এ আসলাম কোনও প্রকার হয়রানি হয়নি। ঠিক সময়ে মালামালসহ এবং ঝামেলা ছাড়াই বের হয়েছি। মোহামম্দ গোফরান বাহরাইন প্রবাসী। তিনি ১৭ এপ্রিল দেশে এসেছেন। মোহাম্মদ গোফরান বলেন, বিমানবন্দর আগের চেয়ে ভালো সেবা পেয়েছি। তবে আমাকে একটি সমস্যার মুখোমুখি হতে হয়। আমি লাগেজ খুজে পাচ্ছিলাম না। পরে দেখলাম, দুই বেল্টে আমার দুটো লাগেজ। একই বেল্টে দুটি লাগেজ আসলে আমাকে খুঁজতে হতো না।
বিমানবন্দরের পার্কিং নিয়ে অভিযোগ যুক্তরাজ্য প্রবাসী মনসুর আহমেদের। তিনি বলেন, এয়ারপোর্টে পার্কিং এ কিছু লোক থাকে, তারা জোর করে লাগেজ নিয়ে গাড়িতে উঠিয়ে বৈদেশি মুদ্রার জন্য জোর জবরদস্তি শুরু করে। ৫০০ টাকা দিলে তাদের মন ভরে না, একটা ট্রলি ৩/৪ জন মিলে নিয়ে এসে ১৫০০/২০০০ হাজার টাকা চায়। দেশের মাঠিতে নেমেই যদি আমাদের এরকম খারাপ অভিজ্ঞতার মুখামুখি হতে হয় তাহলে কেমন।
হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক গ্রæপ ক্যাপ্টেন মোহাম্মদ কামরুল ইসলাম বলেন, ঈদে যাত্রীদের চাপ বেশি থাকে। সেটি মাথায় রেখেই বিমানবন্দরে কায্ক্রম পরিচালিত হচ্ছে। আমরা সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছি লাগেজ যেন ঠিকমতো পান যাত্রীরা। কোনও এয়ারলাইন যেন লেফট বিহাইন্ড (লাগেজ রেখে যাত্রী নিয়ে চলে আসা, পরে অন্য ফ্লাইটে লাগেজ আনা) না করে সে বিষয়ে জোর দিয়েছি। বিমানবন্দরের অন্যান্য সংস্থার সঙ্গেও সমন্বয় করা হচ্ছে যাতে যাত্রীরা নিবিঘেœ সেবা পান। সূত্র : বাংলা ট্রিবিউন