আর্থিক প্রতিষ্ঠানে যুক্ত বেশি খুলনার মানুষ, পিছিয়ে ময়মনসিংহ
মো. আখতারুজ্জামান : দেশের বিভাগগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশিসংখ্যক প্রাপ্তবয়স্ক জনগোষ্ঠী আর্থিক অন্তর্ভুক্তির আওতায় আছে খুলনা বিভাগে। এ বিভাগে প্রাপ্তবয়স্কদের ৫২ দশমিক ৪ শতাংশ মানুষ আর্থিক অন্তর্ভুক্তির আওতায় আছেন। অন্যদিকে আর্থিক অন্তর্ভুক্তিতে সবচেয়ে পিছিয়ে ময়মনসিংহ বিভাগ। এ বিভাগে ব্যাংকিং বা আর্থিক পরিষেবা অভিগম্যতার আওতায় এসেছেন মাত্র ৪১ দশমিক ৮২ শতাংশ প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ।
মনিটরিং দ্য সিচুয়েশন অব ভাইটাল স্ট্যাটিস্টিকস অব বাংলাদেশ শীর্ষক জরিপের ফলাফল থেকে এ তথ্য জানা গেছে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) ২০২১ সালে এ জরিপ করেছে। গত ১২ মাসের মধ্যে প্রাপ্তবয়স্কদের (১৫ বছরের বেশি বয়সী) মধ্যে যাদের ব্যাংক বা অন্য কোনো আর্থিক প্রতিষ্ঠানে হিসাব (নিজের নামে হিসাব অথবা অন্যের সঙ্গে যৌথ নামে হিসাব) বা ব্যক্তিগত মোবাইল ফোনের মাধ্যমে কোনো আর্থিক সেবা প্রতিষ্ঠানে অ্যাকাউন্ট আছে, তারা আর্থিক অন্তর্ভুক্তিতে যুক্ত হয়েছেন বলে জরিপে উল্লেখ করা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, একজন ব্যক্তি অ্যাকাউন্টের মালিকানা বলতে যথাযথ কর্তৃপক্ষ কর্তৃক কোনো নিয়ন্ত্রিত আর্থিক প্রতিষ্ঠান, যেমন ব্যাংক, ঋণদানকারী সংস্থা (ক্রেডিট ইউনিয়ন), ক্ষুদ্রঋণ প্রতিষ্ঠান, পোস্ট অফিস অথবা মোবাইল আর্থিক সেবাদাতা (এমএফএস) প্রতিষ্ঠানে একটি ব্যক্তিগত বা যৌথ মালিকানাধীন হিসাবকে বোঝানো হয়েছে।
২০২১ সালের বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর স্যাম্পল ভাইটাল স্ট্যাটিসটিক্স (এসভিআরএস) জরিপে দেখা গেছে, দেশের প্রায় অর্ধেক জনগোষ্ঠীর (৪৮ দশমিক ০২ শতাংশ) কোনো না কোনো ব্যাংক বা অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠান বা মোবাইল আর্থিক পরিষেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানে অ্যাকাউন্ট আছে। তবে সব পর্যায়ে নারীরা আর্থিক অন্তর্ভুক্তির অভিগম্যতার ক্ষেত্রে পুরুষের তুলনায় পিছিয়ে রয়েছেন।
জরিপে আরও উঠে এসেছে, শিক্ষা, কর্মসংস্থান বা প্রশিক্ষণের বাইরে থাকা (নিট) জনগোষ্ঠী বলতে জনসংখ্যার সেই প্রাপ্তবয়স্ক অংশকে বোঝায় (১৫ থেকে ২৪ বছরের মধ্যে), যারা শিক্ষা, কর্মসংস্থান বা প্রশিক্ষণ কোনো কিছুতে নেই। যুব নিট জনগোষ্ঠীর হিসাবটি বর্তমান বিশ্বে যুব শ্রমশক্তির নিষ্ক্রিয় অংশের সংখ্যা জানার ক্ষেত্রে সহায়ক ভ‚মিকা পালন করে। পরে এর সহায়তায় তাদের চিহ্নিত করে শ্রমশক্তিতে নিয়োগ, শিক্ষায় প্রবেশ এবং দক্ষতা উন্নয়ন কার্যক্রমে অন্তর্ভুক্ত করা সহজ হয়। এটি শ্রমবাজারে নিযুক্ত ও শ্রমবাজারের বাইরে থাকা সম্ভাবনাময় শ্রমশক্তির বিষয়ে ধারণা দিয়ে থাকে।
২০২১ সালের এসভিআরএস জরিপে উঠে এসেছে, দেশের মোট যুব জনশক্তির দুই-পঞ্চমাংশ বা ৩৯ দশমিক ৬ শতাংশ কর্ম, শিক্ষা বা দক্ষতা উন্নয়নের জন্য কোনো আনুষ্ঠানিক কর্মসূচিতে বর্তমানে নেই। মেয়েদের মধ্যে এ হার ৫৯ দশমিক ২ শতাংশ, যা পুরুষের তুলনায় উল্লেখযোগ্যভাবে বেশি।
জরিপে দেখানো হয়েছে, দেশের সব বিভাগ এবং পল্লি ও শহরাঞ্চলে নিট জনগোষ্ঠীর উপস্থিতি প্রায় একই রকম। এর মধ্যে সিলেট বিভাগে সর্বাধিক সংখ্যক নিট ৪৩ দশমিক ৫ শতাংশ যুব জনশক্তির উপস্থিতি মিলেছে। যেখানে বরিশাল বিভাগে নিট জনসংখ্যার হার সর্বনি¤œ ৩৮ দশমিক ২ শতাংশ।