কুমিল্লা প্রতিনিধি : চলছে বোরো মৌসুম। সোনালি ধান ছড়িয়ে পড়েছে বিস্তীর্ণ মাঠে, তবে কৃষিশ্রমিকের অস্বাভাবিক মজুরি বৃদ্ধির কারণে সেই ধান গোলায় তোলা নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছেন জমির মালিকরা।
কুমিল্লা কৃষি স¤প্রসারণ অধিদপ্তরে উপপরিচালক মিজানুর রহমান জানান, এ বছর বোরো মৌসুমে কুমিল্লায় জেলায় ১ লাখ ৬০ হাজার ৮০০ হেক্টর জমিতে চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছিল, তবে অর্জন হয়েছে ১ লাখ ৬১ হাজার ৪৫৩ হেক্টর জমি। এ বছর ধানের উৎপাদন ভালো হয়েছে। এরই মধ্যে মোট আবাদের ২৫ শতাংশ সংগ্রহ করা হয়েছে। আবহাওয়া অনুক‚লে এলে আগামী সপ্তাহ শেষে সিংহভাগ ধান সংগ্রহ হয়ে যাবে।
একাধিক জমির মালিক জানান, এ বছর কুমিল্লা জেলায় ধান কেটে বাড়ি পৌঁছে দিতে একজন কৃষিশ্রমিককে দিতে হচ্ছে ৯০০ থেকে ১ হাজার টাকা। পাশাপাশি তিন বেলা খাবার দিতে হচ্ছে।
এ ছাড়া যারা চুক্তিতে ধান কেটে বাড়ি পৌঁছে দিচ্ছেন, সেসব শ্রমিককে দিনপ্রতি ১ হাজার ২০০ থেকে ১ হাজার ৪০০ টাকা দিতে হচ্ছে। আদর্শ সদর উপজেলার রামপুর গ্রামের কৃষক রিপন মিয়া জানান, ৪০ শতক বা এক কানি জমির জন্য বীজতলা তৈরি, সেচ, সার, চারা রোপণ ও ধান কেটে বাড়ি আনা পর্যন্ত অন্তত ১২ হাজার টাকা খরচ হয়।
৪০ শতক জমিতে গড়ে ১৮ মণ ধান হয়। তিনি বলেন, প্রতি মণ ধান ১ হাজার করে বিক্রি করলে ১৮ হাজার টাকা হয়। ১২ হাজার টাকা খরচ বাদ দিলে ৬ হাজার টাকা থাকে। ছয় মাসে একজন কৃষক মাত্র ৬ হাজার টাকা উপার্জন করে কীভাবে ভালো থাকে?
জেলার বুড়িচং উপজেলার আবুল কাশেম, সুরুজ মিয়াও একই কথা বলেন। তাদের দাবি, ধান উৎপাদনে কৃষকের খরচ যদি কমানো না যায়, তাহলে আগামী বছরগুলোতে কৃষকরা ধান বাদ দিয়ে মাছ চাষ কিংবা শাকসবজিতে ঝুঁকবেন। অনেকে কৃষি বাদ দিয়ে দেশের বাইরে চলে যাচ্ছেন।
কুমিল্লা জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক সুবীর নাথ চৌধুরী বলেন, এ বছর এখনও কী পরিমাণ ধান সংগ্রহ করতে হবে, তা নিয়ে কোনো নির্দেশনা আসে নাই। আশা করি মে মাসের প্রথম সপ্তাহে কত টাকা মণ দরে কী পরিমাণ ধান সংগ্রহ করতে হবে, সেই নির্দেশনা আসবে। তখন কৃষকদের কাছ থেকে নায্য মূল্যে ধান সংগ্রহ করব।