
প্রধানত বৌদ্ধ ও আদিবাসী ধর্মের লোকেরাই বাঙালি মুসলমানের পূর্বপুরুষ!

ফয়েজ আলম
কিছুদিন থাইকা দেখতেছি অনেকে কোনো একটা উপলক্ষে পাইলেই লেখেন, ‘বাংলাদেশ হিন্দু স¤প্রদায়ের মানুষদের দেশ ছিলো। হিন্দু থাইকা সবাই মুসলমান হইছে। তাই হিন্দু সংস্কৃতির চিহ্ন থাকতেই পারে।’ এই আজগুবি কথা তারা কোথায় পাইলেন তার কোনো তথ্যসূত্র কেউ দেন না। এই কথাগুলা আসলে একটা বড় মাপের মিথ্যা!
প্রাচীন আমলে বাংলা ছিলো বৌদ্ধদের দেশ, পরে মুসলমান শাসনে আসে। বাংলাদেশের মুসলমানরা আসছে প্রধানত অস্ট্রিক গোষ্ঠীর বৌদ্ধ ও আদিবাসী ধর্মের মানুষদের থাইকা ধর্মান্তরিত হয়া। সেই তুলনায় হিন্দু, জৈন, আজিবীক স¤প্রদায়ের মানুষ মুসলমান হইছে খুব কম। উপনিবেশি শক্তির উস্কানিতে উনিশ শতকে সা¤প্রদায়িক আবেগের তাড়নায় ইতিহাস নাম দিয়া যে বানোয়াট কাহিনী লেখা হইছে ‘হিন্দু থাইকা সকল মুসলমান আসা’র এই গল্প তারই অংশ, যার না আছে কোনো ঐতিহাসিক তথ্যসমর্থন না যৌক্তিক ভিত্তি। এইটাই নীরব ধারণা আকারে পুরা সমাজে ছড়ায়া ছিল। এখন নানা উপলক্ষে সরবে উপরে আসতেছে।
আমরা এইখানে ছোট আকারে তথ্যভিত্তিক ইতিহাসের কথা তুইলা ধরব। জানা ইতিহাসের শুরু থাইকা ১১৩০ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত বাংলাদেশ ছিলো বৌদ্ধ শাসনে। এরপর আশি বছরের (১১২৫-১২০৫ খ্রি.) মতো বহিরাগত হিন্দু সেনদের সময়। পরে আবার ১২০৪ থাইকা ১৭৫৭ পর্যন্ত বহিরাগত মুসলমানদের শাসন। অর্থাৎ বাংলার প্রায় আড়াই হাজার বছরের ইতিহাসে হিন্দুধর্মীয় সম্রাটদের শাসন আশি বছরের। এই পুরা সময়টায় বাংলায় ধর্মীয় দিক থাইকা প্রথমে বৌদ্ধরা, পরে মুসলমানরা ছিলো সংখ্যাগুরু। সেনদের আগে বাংলায় আর্যরা তেমন বসতি করে নাই, সুযোগও ছিলো না, কেবল সংখ্যাল্প কিছু বৌদ্ধ শ্রমণ ও ব্রাহ্মণ ছাড়া। এরও বহু আগে আসা কিছু দাবিড়ভাষী, মঙ্গোলয়েড আর আলপাইন মানুষদের মিশ্রণ বাদে পুরা জনগোষ্ঠীই ছিলো অস্ট্রিক।
বিভিন্ন সময় সীমানায় হেরফের হওয়া সত্তে¡ও বলা যায় গোটা ঢাকা ও বরিশাল বিভাগ, ময়মনসিংহের বেশির ভাগ, খুলনা বিভাগের দক্ষিণ দিকের একট বড় এলাকা এবং কুমিল্লার পশ্চিম দিকের কিছুটা নিয়া বঙ্গ দেশ গইড়া ওঠে। পুন্ড্রবর্ধন, বরেন্দ্র ও রাঢ বঙ্গদেশ থাইকা সবসময়ই ভিন্ন ছিলো। এইসব এলাকা এবং তার বাসিন্দারা অনেক পরে শামসুদ্দিন ইলিয়াস শাহর সময়ে (১৩৪২-৫৮) বঙ্গ ও বাঙালি জাতিত্বের পতাকাতলে আসে। কাজেই, ভারতের পশ্চিবঙ্গের মানুষেরা আমাদের তুলনায় বেশ নবীন বাঙালি।
এই বঙ্গদেশ ও তার মানুষেরা বাঙালি সংস্কৃতির মূল জমিন। বাঙালি সংস্কৃতি হিন্দু ধর্মীয় সংস্কৃতি না, ইসলাম ধর্মীয় সংস্কৃতিও না। কয়েক হাজার বছর ধইরা বাঙালি সংস্কৃতির বিকাশ হইছে। তার শুরুতে এ অঞ্চলে কোনো ধর্মমতই এ কালের মতো বিকশিত ও সংগঠিত অবস্থায় ছিলো না। ফলে প্রথম যুগে মানুষের সাংস্কৃতিক স্বভাবে ধর্মের ছাপ তেমন পড়ে নাই। প্রাচীন বাংলায় সবচেয়ে আগে বৌদ্ধধর্মই সুসংগঠিত ধর্ম হিসাবে মানুষের মধ্যে ছড়ায়, পাশাপাশি ছিলো কম সংগঠিত জৈন ও আজিবীক। আর আদিবাসী প্রকৃতি পূজারি নানা ধর্মমতের মানুষ, যারা ছিলো অস্ট্রিক এবং সংখ্যায় সবচেয়ে বেশি। সেই কারণে বাঙালি সংস্কৃতিতে ধর্মের ছাপ যতটা দেখা যায় তার মধ্যে বৌদ্ধ ধর্ম এবং আদিম প্রকৃতিপুজারি ধর্মের ছাপই প্রবল।
আলেকজান্ডারের ভারত অভিযানের (৩২৭ খ্রি.পূ.) সময় থাইকা দুই শতক পর্যন্ত সেই কালের গ্রীক ও অন্যান্য ভিনদেশি লেখক হেরোডোটাস, মেগাস্থিনিস (অহপরবহঃ ওহফরধ ধং উবংপৎরনবফ নু গবমধংঃযবহবং ধহফ অৎৎরধহ), দিওদেরাস, প্লিনী, চবৎরঢ়ষঁং ড়ভ ঃযব ঊৎুঃযৎধবধহ ঝবধ’র অজ্ঞাত লেখক, প্লæটার্ক, টলেমি (এবড়মৎঢ়যরধ), এদের মারফত জানা যায় সেই ৫০০ বছর এই অঞ্চলে গঙ্গারিডি বা গঙ্গারিড়ী নামে একটা শক্তিশালী স্বাধীন রাজ্য ছিলো। আর্য গোষ্ঠীগুলা, এমনকি আলেকজান্ডারও তাদের শক্তিশালী সেনাবাহিনীর ভয়ে এদিকে আগায় নাই। বিদেশি লেখকদের বর্ণনা অনুযায়ী স্বন্দীপ থাইকা আরম্ভ কইরা পশ্চিম দিকে আজকের গোটা দক্ষিণবঙ্গ নিয়া ছিলো গঙ্গারিড়ি বা গাঙ্গাড়ি।
পুন্ড্রবর্ধন, রাঢ়, বরেন্দ্র এলাকাগুলি গুপ্তদের শাসন (৩২০-৫৫০ খ্রি.) ভুক্ত হইছিলো। বঙ্গ এবং পাশের সমতট (কুমিল্লা) তখনো স্বাধীন। ফরিদপুরের কোটালিপাড়া, কুমিল্লা, সিলেট, ঢাকার আশরাফপুরসহ নানা জায়গায় পাওয়া সেকালের তামার পাতে লেখা বিবরণ অনুযায়ী দেখা যায় পাল শাসনের আগ পর্যন্ত এমনকি পালদের শাসনামলের বিভিন্ন যুগে বঙ্গ ও সমতটে ছোট ছোট স্বাধীন রাজ্য ছিলো। ছয় থাইকা দশ শতক পর্যন্ত সময়টায় কুমিল্লায় বৈন্যগুপ্ত, ফরিদপুরে গোপচন্দ্র, ধর্মাদিত্য ও সমাচারদেব, কুমিল্লার খড়গ বংশ, রাতবংশ, দেব বংশ ও চন্দ্র বংশ পুব ও দক্ষিণ বঙ্গে স্বাধীন ছিলেন। খড়গ, দেব ও চন্দ্রবংশ দীর্ঘদিন (সাত-এগার শতক) সমতটে শাসন করছেন। এরা সবাই বৌদ্ধ ছিলেন। এইদিকে পালেরা ৭৫০ খ্রিস্টাব্দ থাইকা ১১৩০ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত বাংলাদেশের ক্ষমতায় ছিলেন।
পাল আমলে বৌদ্ধ ধর্মের ব্যাপক প্রসার হয়। শুরুর দিকেই বৌদ্ধ সহজিয়াদের নানা ধারার উদ্ভব ঘটে। এই অঞ্চলের প্রায় সব মানুষের ভাষা ছিলো অস্ট্রোএশিয়াটিক পরিবারের মুন্ডা গোষ্ঠীর ভাষা। বৌদ্ধদের প্রায় সকলেই ছিলো স্থানীয়দের থাইকা ধর্মান্তরিত। ৬-৮ শতকে মুন্ডা গোষ্ঠীর ভাষা আর বৌদ্ধ সাধকদের দাপ্তরিক প্রাকৃত ভাষার সংযোগ মাইনা এদের দ্বারা বাংলা ভাষা বিকশিত হইতে শুরু করে, লেখা হইতে থাকে চর্যাপদের মত বইপত্র। অবশ্য সেই আলোচনার জায়গা এইটা না।
৬৩৮ খ্রিস্টাব্দের দিকে হিউয়েন সাঙ কর্ণসুবর্ণ, পুÐবর্ধন, সমতট ও তমলুক ভ্রমণ আইসা লেখছেন (ঝও-ণঁ-কর), তখন বাংলায় বৌদ্ধ ধর্মের পসার সবচেয়ে বেশি, এরপর জৈন ধর্ম, তিন নম্বরে হিন্দু ধর্ম। [তার প্রায় দুইশ চল্লিশ বছর আগে চীনা পরিব্রাজক ফা হিয়েন ভারত ভ্রমণের সময় (জবপড়ৎফ ড়ভ ইঁফফযরংঃরপ করহমফড়সং) তমলুকে আসেন এবং এইখানে বৌদ্ধদের প্রাধান্যের কথা লেখেন।] হিউয়েন সাঙ লেখেন বৌদ্ধ-জৈন-হিন্দুদের বাইরে বহু ধর্মের অসংখ্য অনুসারী আছে যারা স্থানীয় আদিবাসী ধর্মের অনুসারী। এরাই ছিলো জনসংখ্যার বড় অংশ।
১১২৫ খ্রিস্টাব্দে কর্নাটকের সেনেরা বাংলায় ক্ষমতায় আসে। মূলত সেনদের মাধ্যমেই বাংলায় হিন্দু ধর্মরে সুসংগঠিত ধর্মমত হিসাবে প্রসারের চেষ্টা চলে এবং সংস্কৃত সাহিত্য চর্চা শুরু হয়। ভারত থাইকা প্রচুর সংখ্যক ব্রাহ্মণ আইনা দেশের বিভিন্ন জায়গায় টোল খোলানো হয়। রাজার উস্কানি পায়া বাঙালি হিন্দু কবিরা বাংলা ভাষা বাদ দিয়া সংস্কৃতে কবিতা লেখতে শুরু করেন। যেমন আমাদের অনেকের অতি প্রিয়ভাজন জয়দেব (গীতগোবিন্দ)। বৌদ্ধ, জৈন ও প্রকৃতি ধর্মের অনুসারীদের উপর রাজকীয় নির্যাতন নাইমা আসে। মধ্যযুগের সাহিত্যসহ চর্যাপদের বেশ কিছু চর্যায়ও তার ইঙ্গিত আছে। রাষ্ট্রীয় নির্যাতনে বৌদ্ধ ও জৈনদের একটা অংশের মনোবল ভাইঙ্গা পড়ে এবং তারা শ্রেণিবহির্ভূত অবস্থান স্বীকার কইরা বিভিন্ সহজিয়া ধর্মের ছদ্মবেশে বাঁচার চেষ্টা চালায়। বাংলা ভাষা ও বাঙালি জাতিত্বের এই চরম দু:সময়ে বৌদ্ধদের সঠিক ভ‚মিকার কারণেই বাংলা ভাষার আদি নিদর্শনগুলা সেনদের ধ্বংসকান্ড থাইকা রক্ষা পায়। বৌদ্ধদের একাংশ নেপাল তিব্বত আরাকান প্রভৃতি দেশে পাড়ি জমায়। অধিকাংশই নেপালে আশ্রয় নেয়, সাথে কইরা নিয়া যায় বাংলা সাহিত্যের প্রথম লিখিত দলিল চর্যাপদ (চর্যাচর্যবিনিশ্চয়)।
এই কারণে সেনদের শাসনের এই আশি বছর এবং তার প্রভাব হিসাবে পরের প্রায় শ’খানেক বছর বাংলা ভাষায় সাহিত্য চর্চা হয় নাই। এই সময়টাই হলো বাংলা সাহিত্যের “অন্ধকার যুগ”। আরো পরে স্থিতিশীল মুসলিম শাসন শুরু হওয়ার পরে তাদের উৎসাহে বাংলা চর্চা আরম্ভ হয়। হিউয়েন সাঙের বিবরণ থাইকা আন্দাজ করা যায় তখন কমপক্ষে অর্ধেকের মত আদিবাসী ধর্মের অনুসারী। তাহলে বাকি অর্ধেক ছিলো বৌদ্ধ, জৈন ও হিন্দু। এর মধ্যে বৌদ্ধরা সংখ্যাগরিষ্ঠ। সেই হিসাবে আমরা ধইরা নিতে পারি জনসংখ্যার অন্তত ২২-২৫% বৌদ্ধ, ১৪-১৫% জৈন ও আজিবীক, ১২-১০% হিন্দু ছিলো। পরিবর্তী ৫০০ বছরে পাল শাসনামলে বৌদ্ধদের সংখ্যা কমে নাই, বরং বাড়ছে। তবে দশ শতকের পরে জৈনদের সংখ্যা কমছে। এর মধ্যে জৈন ধর্মবদল, আদিবাসী ধর্মবদল এবং সেনদের নির্যাতনের কারণে আরও ১০-১২% লোক হিন্দু হইছে ধইরা নিলেও বখতিয়ার খিলজীর অভিযানের আগে বাংলায় হিন্দুর স্ংখ্যা কোনোমতেই ২৫%-এর বেশি থাকার কথা না।
এই পরিস্থিতিতে ১২০৪ সালে বখতিয়ার খিলজির মাধ্যমে বাংলায় মুসলিম শাসনের সূচনা হয়। এর আগেই মুসলমানরা বাংলায় বসতি স্থাপন করে। সেই নয় শতকে রীতিমত একটা মুসলমান উপশহর ছিলো চাঁটগায়ের কাছাকাছি। উত্তরবঙ্গ, নেত্রকোনা, মুন্সীগঞ্জ বগুড়া প্রভৃতি এলাকায় মুসলিম বসতির প্রমাণ রয়া গেছে। মুসলিম শাসন শুরু হওয়ার পরের একশ বছরে প্রচুর সুফি দরবেশ বাংলায় বসিত করেন। তখন একদফা এবং পরে বিশেষ করে স্বাধীন সুলতানী আমলে একদিকে মধ্যএশিয়া, ইরান, আরবদেশসমূহ ও ভারতের বিভিন্ন অঞ্চল থাইকা দলে দলে মুসলমানরা বাংলায় পাড়ি জমায়। সাড়ে পাঁচশ বছরের মুসলিম শাসনামলে দিল্লীর বিভিন্ন অপশাসনের যুগে ভারত থেকেও প্রচুর মুসলমান বাংলায় আসে।
এই সময়পর্বে নির্যাতিত বৌদ্ধ-জৈন ও প্রকৃতি ধর্মের অনুসারী ৭৫%-এর মত অস্ট্রিক গোষ্ঠীর মানুষের মধ্য থাইকা ব্যাপক হারে ইসলাম গ্রহণ করতে থাকে। তাদের ধর্মের সাম্য নীতির সাথেও ইসলামের অনেক মিল। ব্যাপক হারে ইসলাম ধর্ম গ্রহণের কারণেই বাংলায় বৌদ্ধ ও আদিবাসী ধর্মের অনুসারী কমতে থাকে। বৃটিশ আমলের আদম শুমারিতে দেখা গেছে নগরকেন্দ্রের বাইরে প্রান্তিক এলাকায় মুসলমানের সংখ্যা বেশি। আদিবাসীরাই ছিলো প্রান্তিক মানুষ। এটাও একটা প্রমাণ যে, বৌদ্ধ ও আদিবাসী ধর্মের লোকদের থাইকাই সবচেয়ে বেশি মুসলমান হইছে। এরপর হিন্দু থাইকা মুসলমান হওয়া মানুষের অবস্থান, যার মধ্যে সুবিধাবাদী উচ্চশ্রেণির প্রশাসক, জমিদার, ভুস্বামীও ছিলো অনেক। সব মিলায়া হিন্দু থাইকা মুসলমান হয় সবচেয়ে কম। যে কারণে তখন থাইকা আরম্ভ কইরা বৃটিশ আমল পর্যন্ত হিন্দু জনসংখ্যার হার কমে নাই।
বৃটিশ আমলে বাংলায় হিন্দুর সংখ্যা ছিলো ৩৭-৩৮%-এর মত। একটা সহজ হিসাবে গেলেও চলে। ১২০০ খ্রিস্টাব্দে হিন্দু ধর্মীয়দের হার ছিলো বড়জোর ২৫%। বৃটিশ আমলে ১৮৯০-এর আদম শুমারিতে বাংলায় হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের হার দাড়ায় ৩৭-৩৮%-এ। বাকী প্রায় সবই মুসলমান। এই সংখ্যাগুরু মুসলমান যদি হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের থাইকা আসতো তাইলে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সংখ্যা কমে যাওয়ার কথা, বাড়ে কি করে? কমছে বৌদ্ধ, জৈন ও আদিবাসী ধর্মাবলম্বীদের সংখ্যা। এর থেকেও সিদ্ধান্ত নেয়া যায় যে, মূলত বৌদ্ধ, জৈন ও আদিবাসী মানুষদের বেশির ভাগ মুসলমান হইছে, আর বাকিরা হিন্দু হইছে। সেইজন্য মুসলমান দ্রæত ও অনেক বাড়ছে, আর তুলনামূলকভাবে কম হইলেও বাংলাদেশে হিন্দুর সংখ্যাও বাড়ছে।
উনিশ শতকে এইসব তথ্য গোপন রাইখা, কখনো কখনো ভুলভাল ব্যাখ্যা কইরা লেখা হইছে বাংলায় হিন্দু থাইকাই মুসলমান জনগোষ্ঠীর উৎপত্তি। আর বিস্ময়করভাবে এই দেশের মুসলমানরা তা যাচাইয়ের দরকার বোধ করে নাই। ঐতিহাসিক বিবরণ ও প্রতœতাত্তি¡ক উৎসে লেখা আসল তথ্যের দিকে ফিইরাও তাকায় নাই। উনিশ শতকে ইতিহাস হিসাবে যা দেওয়া হইছে তাই দুইশ বছর ধইরা গিলছে, এখনো গিলতেছে। আর সেইসব কথাই মুখস্ত বিদ্যার মতো জপতেছে। ফেসবুকেও সেইরকমই দেখতেছি। আমি উৎসের নাম লেইখা দিছি। এইসব ‘পÐিতেরা’ চাইলে মুখস্ত নামজপ বাদ দিয়া সঠিক ইতিহাসটা জাইনা নিতে পারেন।
লেখক : কবি, প্রাবন্ধিক ও উত্তরউপনিবেশি তাত্তি¡ক
