শুল্ক ছাড় অব্যাহত রাখলে বাজারে তেল ও চিনির দাম কমতে পারে : বাণিজ্যমন্ত্রী
সোহেল রহমান : বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুন্শি বলেছেন, সয়াবিন তেল, ডাল ও চিনি এসব পণ্যগুলো আমদানি নির্ভর। দেশে চিনির চাহিদার প্রায় ৯৯ শতাংশ আমদানি করতে হয়। গত বেশ কিছুদিন ধরেই আন্তর্জাতিক বাজারে চিনির দাম বেড়েছে। এজন্য আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বাড়লে দেশের বাজারে এর প্রভাব পড়ে। যেসব পণ্য আমদানি করে দেশে বিক্রি করতে হয় সেগুলোর দাম আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে সমন্বয় করতে হয়। আমরা চেষ্টা করি আন্তর্জাতিক বাজারের সাথে সামঞ্জস্য ঠিক রাখার। তারপরও অনেক অসুদোপায়ী ব্যবসায়ী বেশি দামে বিক্রয়ের চেষ্টা করে থাকে। এ জন্য আমরা জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরসহ সংশ্লিষ্টদের দিয়ে বাজার মনিটরিংয়ের মাধ্যমে ব্যবস্থা গ্রহণ করে থাকি।
রোববার রাজধানীর বাড্ডার সিরাজ মিয়া মেমোরিয়াল স্কুল মাঠে আয়োজিত দেশব্যাপী ১ কোটি ফ্যামিলি কার্ডধারী নিম্নআয়ের পরিবারের মাঝে মে/২৩ মাসে টিসিবি’র পণ্য বিক্রয় কার্যক্রমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
ভোজ্যতেল সম্পর্কে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) গত এপ্রিল থেকে শুল্কছাড় অব্যাহত না রাখায় ভোজ্যতেলের দাম বেড়েছে, আন্তর্জাতিক বাজারে বৃদ্ধির কারণে নয়। তেলের ওপর শুল্কছাড় অব্যাহত রাখতে এনবিআর-কে চিঠি দেয়া হয়েছে। চিনির শুল্কছাড়ের মেয়াদ আগামী ৩১ মে শেষ হবে। চিনির শুল্কছাড় অব্যাহত রাখতেও চিঠি দেয়া হবে। এনবিআর যদি শুল্ক ছাড় অব্যাহত রাখে তাহলে বাজারে তেল ও চিনির দাম কমতে পারে।
তিনি বলেন, নিম্নআয়ের মানুষ যাতে কম মূল্যে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য ক্রয় করতে পারে সে জন্য টিসিবি’র মাধ্যমে তেল, চিনিসহ অন্যান্য পণ্য বিতরণের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। প্রতিমাসে ১ কোটি পরিবারকে একবার করে পণ্য দেয়া হচ্ছে। টিসিবি এসব পণ্য ক্রয় করে স্বল্প মূল্যে বিক্রয় করে থাকে। দাম বাড়লে টিসিবি-কে-ও অতিরিক্ত মূল্য দিয়ে ক্রয় করতে হয়। এ লক্ষ্যে সরকার বিশাল পরিমাণ ভর্তুকি দিচ্ছে।
বাণিজ্যমন্ত্রী জানান, আসছে নতুন বাজেটেও ১ কোটি গরীব, দুঃস্থ অসহায় মানুষের জন্য স্বল্প মূল্যে খাদ্য পণ্য বিতরণ অব্যাহত রাখার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। বর্তমান সরকারের এই মানবিক উদ্যোগকে সফল করতে জনপ্রতিনিধিসহ সবার সহযোগিতা কামনা করেন তিনি।
ডিজিটাল কার্ড কবে নাগাদ চালু হবেÑ সাংবাদিকদের এমন এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশকে ডিজিটাল দেশে রূপান্তরিত করেছেন। যার সুফল দেশের মানুষ উপভোগ করছে। আমরা স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার নিশ্চিত করতে টিসিবি’র ১ কোটি ফ্যামিলি কার্ডকে স্মার্ট কার্ডে রূপান্তরের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এজন্য আমরা সরকারী একটা প্রতিষ্ঠানকে দায়িত্ব দিয়েছি, তারা কাজ করছে। ত্রুটিমুক্ত একটি স্মাট কার্ড উপহার দেয়াই আমাদের মূল লক্ষ্য। এ জন্য একটু সময় বেশি লাগছে। আগামী ছয় মাসের মধ্যে কাজের অনেকটাই শেষ হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ। অন্যান্যের মধ্যে টিসিবি’র চেয়ারম্যান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. আরিফুল হাসান, উত্তর সিটি কর্পোরেশনের ৩৭নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. জাহাঙ্গীর আলম এ সময় উপস্থিত ছিলেন।