চার ক্যাটাগরির ২ লাখ ২০ হাজার মেট্রিক টন সার আমদানি করবে সরকার
সোহেল রহমান : দেশে সারের চাহিদা পূরণে রাষ্ট্রীয় চুক্তির আওতায় বিভিন্ন দেশ থেকে চার ক্যাটাগরির মোট ২ লাখ ২০ হাজার মেট্রিক টন সার আমদানির ছয়টিসহ মোট ৯টি প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে ‘সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি’। এতে ব্যয় হবে প্রায় ১ হাজার ১৭৯ কোটি ২৪ লাখ টাকা।
বুধবার সচিবালয়ে অনুষ্ঠিত ক্রয় কমিটির ভার্চুয়াল সভায় সভাপতিত্ব করেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।
সভাশেষে এক ভার্চুয়াল ব্রিফিং-এ মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব সাঈদ মাহবুব খান সাংবাদিকদের জানান, বৈঠকে ‘বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ কর্পোরেশন’ (বিসিআইসি) কর্তৃক ‘কর্ণফুলী ফার্টিলাইজার কোম্পানি লিমিটেড’ (কাফকো) থেকে ১৭তম লটে ৩০ হাজার মেট্রিক টন ব্যাগড গ্র্যানুলার ইউরিয়া সার ক্রয়ের একটি প্রস্তাব অনুমোদন দেয়া হয়েছে। প্রতি মেট্রিক টন ৩৭১.২৫ ডলার হিসেবে এতে ব্যয় হবে ১ কোটি ১১ লাখ ৩৭ হাজার ৫০০ ডলার। বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ১২০ কোটি ৪ লাখ টাকা।
তিনি জানান, বৈঠকে বিসিআইসি কর্তৃক সৌদি আরব-এর ‘সাবিক এগ্রি-নিউট্রিয়েন্টস কোম্পানি’ থেকে ২২তম লটে ৩০ হাজার মেট্রিক টন বাল্ক গ্র্যানুলার ইউরিয়া সার আমদানির একটি প্রস্তাব অনুমোদন দেয়া হয়েছে। প্রতি মেট্রিক টন ৩২৭.৩৩ মার্কিন ডলার হিসেবে এতে ব্যয় হবে ৯৮ লাখ ১৯ হাজার ৯০০ মার্কিন ডলার। বাংলাদেশি মুদ্রায় ১০৬ কোটি ২৫ লাখ ১৩ হাজার টাকা।
অতিরিক্ত সচিব জানান, বৈঠকে ‘বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন’ (বিএডিসি) কর্তৃক রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে চুক্তির আওতায় সৌদি আরব-এর মা’এডেন থেকে ৩য় লটে ৪০ হাজার মেট্রিক টন ডিএপি সার আমদানির একটি প্রস্তাব অনুমোদন দেয়া হয়েছে। প্রতি মেট্রিক টন ৫৩২ ডলার হিসেবে এতে ব্যয় হবে ২ কোটি ১২ লাখ ৮০ হাজার ডলার। বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ২২৯ কোটি ৩৩ লাখ ৪৫ হাজার টাকা।
তিনি জানান, বৈঠকে বিএডিসি কর্তৃক রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে চুক্তির আওতায় মরক্কো’র ‘ওসিপি এসএ’ থেকে ২য় লটে ৩০ হাজার মেট্রিক টন টিএসপি সার আমদানির একটি প্রস্তাব অনুমোদন দেয়া হয়েছে। প্রতি মেট্রিক টন টিএসপি সার ৩৯১.৫০ মার্কিন ডলার হিসাবে এতে ব্যয় হবে ১ কোটি ১৭ লাখ ৪৫ হাজার ডলার। বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ১২৬ কোটি ৫৭ লাখ ৫৮ হাজার টাকা।
অতিরিক্ত সচিব জানান, বৈঠকে বিএডিসি কর্তৃক রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে চুক্তির আওতায় মরক্কো’র ‘ওসিপি এসএ’ থেকে ৩য় লটে ৪০ হাজার মেট্রিক টন ডিএপি সার আমদানির একটি প্রস্তাব অনুমোদন দেয়া হয়েছে। প্রতি মেট্রিক টন ডিএপি সার ৫৪১.৫০ মার্কিন ডলার হিসাবে এতে ব্যয় হবে ২ কোটি ১৬ লাখ ৬০ হাজার ডলার। বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ২৩৩ কোটি ৪২ লাখ ৯৮ হাজার টাকা। ।
তিনি জানান, বৈঠকে বিএডিসি কর্তৃক রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে চুক্তির আওতায় কানাডা’র ‘কানাডিয়ান কমার্শিয়াল কর্পোরেশন’ থেকে ৪র্থ লটে ৫০ হাজার মেট্রিক টন ‘মিউরেট-অব-পটাশ’ (এমওপি) সার আমদানির একটি প্রস্তাব অনুমোদন দেয়া হয়েছে। প্রতি মেট্রিক টন এমওপি সার ৪১৮ ডলার হিসাবে এতে ব্যয় হবে ২ কোটি ৯ লাখ ডলার। বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ২২৫ কোটি ২৩ লাখ ৯৩ হাজার টাকা।
অতিরিক্ত সচিব জানান, বৈঠকে অন্যান্যের মধ্যে বিসিআইসি কর্তৃক চট্রগ্রামের টিএসপি কমপ্লেক্স লিমিটেড-এর জন্য ১০ হাজার মেট্রিক টন ফসফরিক এসিড আমদানির একটি প্রস্তাব অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এটির মূল সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান হচ্ছেÑ সংযুক্ত আরব আমিরাত-এর ‘মেসার্স সান ইন্টারন্যাশনাল এফজেডই (স্থানীয় এজেন্ট: মেসার্স এগ্রো ইন্ডাস্ট্রিয়াল ইনপুট, ঢাকা)। এতে ব্যয় হবে ৬০ কোটি ৯৫ লাখ ৫৪ হাজার টাকা।
তিনি জানান, বৈঠকে ‘ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ’ (টিসিবি) কর্তৃক আন্তর্জাতিক উন্মুক্ত দরপত্র পদ্ধতিতে ১২ হাজার ৫০০ মেট্রিক টন চিনি আমদানির একটি প্রস্তাব অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এটির মূল সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান হচ্ছেÑ যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক অ্যাকসেনচ্যুয়েট টেকনোলজি ইনকরপোরেশন (স্থানীয় এজেন্ট : ওএমসি লিমিটেড, ঢাকা)। প্রতি মেট্রিক টন ৪৯৫.৫০ ডলার হিসেবে এতে ব্যয় হবে ৬৬ কোটি ২৭ লাখ ৩১ হাজার টাকা। প্রতি কেজি চিনির দাম পড়বে ৮২ টাকা ৮৫ পয়সা।
অতিরিক্ত সচিব জানান, এছাড়া বৈঠকে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর কর্তৃক ‘বাংলাদেশের ২৩টি পৌরসভায় পানি সরবরাহ ও স্যানিটেশন (১ম সংশোধিত)’ প্রকল্পের পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের একটি ভেরিয়েশন প্রস্তাব অনুমোদন দেয়া হয়েছে। ভেরিয়েশন প্রস্তাবে প্রকল্পের পরামর্শক ব্যয় ১১ কোটি ১৩ লাখ ৮৯ হাজার টাকা বেড়েছে। প্রকল্পে পরামর্শক প্রতিষ্ঠান হিসেবে রয়েছে যৌথভাবেÑ রানহিল, ফারহাট ও ডিডিসি।