২০২৫ সাল নাগাদ এক বিলিয়ন ডলারের লক্ষ্য নির্ধারণ বিপিও খাতে আয় দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে
মাজহারুল ইসলাম মিচেল: বিজনেস প্রসেস আউটসোর্সিং (বিপিও) খাতের আয় দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। বর্তমানে প্রায় ৭০০ মিলিয়ন ডলার আয় করছে বাংলাদেশ। ২০২৫ সাল নাগাদ এই খাতের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে এক বিলিয়ন ডলার। এ আয়ের পরিমাণ আরও বাড়তে পারে বলে আমাদের অর্থনীতিকে গতকাল সোমবার জানিয়েছেন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অফ কন্ট্যাক্ট সেন্টার অ্যান্ড আউটসোর্সিংয়ের (বাক্কো) নেতৃবৃন্দ।
বাক্কোর মহাসচিব তৌহিদ হোসাইন জানান, বাংলাদেশের বিপিও ব্যবসার বাজার গত ১০ বছরে ইতোমধ্যেই বিশ^ বাজারে ব্যাপক সারা জাগিয়েছে। সেই সম্ভাবনাকে সকলের সামনে তুলে ধরা এবং তরুণ প্রজন্মের কাছে এই বার্তা পৌঁছে দেওয়ার এখনই সময়। এই খাতকে যথাযথভাবে কাজে লাগালে এটি দেশের উন্নয়নের গতিকে যে আরও ত্বরান্বিত করবে এ কথা নিশ্চিতভাবে বলা যায়।
বাক্কোর কর্পোরেট এ্যাফেয়ার্সের জৈষ্ঠ্য কর্মকর্তা কেয়া চৌধুরী জুই জানান, ২০২২ সালে বিপিও খাতে আয় হয়েছিল ৭০০ মিলিয়ন ডলার, ২০২১ সালে আয় হয়েছিল ৬০০ মিলিয়ন ডলার, ২০২০ সালে ছিল ৫০০ মিলিয়ন, ২০১৯ এ ৪০০ মিলিয়ন, ২০১৮ তে ৩০০ মিলিয়ন, ২০১৭তে ২৪০ মিলিয়ন ও ২০১৬ সালে ১৬০ মিলিয়ন ডলার আয় হয়েছিল। এ ব্রেক ডাউনে দেখা যায়, গত ২০১৬-১৭ সাল পর্যন্ত তেমন ভালো না করলেও এরপর থেকে প্রতি বছর ১০০ মিলিয়ন ডলার করে আয় বৃদ্ধি করতে পেরেছে এ খাতটি।
তিনি জানান, বাক্কর হিসাবে বিগত ২০১২ সালে এই খাত থেকে তাদের আয় ছিল মাত্র ১২ মিলিয়ন ডলার। যা পরের বছরে বেড়ে দাঁড়ায় ৫২ মিলিয়নে। এরপরের বছরগুলোতে আয় বেড়েছে খুব দ্রæত। ২০১৪ সালে ৮১ মিলিয়ন, ২০১৫ সালে ১৩০ মিলিয়ন ডলার।
বাক্কোর মেম্বারশিপ বিভাগের জৈষ্ঠ্য কর্মকর্তা তানভির আহমেদ জানান, বাংলাদেশে সব মিলিয়ে ৩১৪টির মত তাদের নিবন্ধিত আউটসোর্সিং কোম্পানি রয়েছে।
তৌহিদ হোসেন বলেন, ২০২১ সালের খাতটি থেকে এক বিলিয়ন ডলার আয়ের যে লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল সেটি তারা অর্জন করতে পেরেছিলেন। এবার ২০২৫ সালের যে লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে সেটিও খুব অচিরেই সম্ভব হবে বলে মনে করছেন বাক্কর কর্তাব্যক্তিরা।
বাক্কর পরিচালক ও স্কাই টেকের প্রধান কর্মকর্তা মুসনাদ ই আহমেদ জানান, আয়ের হিসাবে যে বাজার আমরা ধরে রেখেছি তার ৭০ শতাংশ কিন্তু অভ্যন্তরীণ। তার মানে একটা বড় সম্ভাবনাময় বাজার রয়েছে দেশেই। অন্যদিকে ৩০ শতাংশ আয় আসে আন্তর্জাতিক বাজার থেকে। আন্তর্জাতিক বাজার থেকে আয়ের পরিমাণটা আরও বাড়ানো সম্ভব বলে মনে করেন।
তিনি বলেন, দেশে কল সেন্টারের কাজ দিন দিন বাড়ছে। দেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান তাদের সেবার জন্য এখন কল সেন্টার অনেকটা বাধ্যতামূলক করছে তাদের গ্রাহকদের সেবা দেবার জন্য। আর বড় একটি খাত হিসেবে এখন পরিচিত ব্যাংকিং। ব্যাকিংয়ে এখন কল সেন্টার খুব গুরুত্বপূর্ণ ও অপরিহার্য হয়ে উঠেছে।
বাক্কর পরিচালক ডা. তানজিবা রহমান বলেন, এজন্য দরকার হবে দক্ষ কর্মীর। ইতোমধ্যে অবশ্য বাক্য, সরকারের তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগ বেশ কয়েকটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান একসঙ্গে বাজার বাড়াতে নানা ধরনের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থাও করেছে। ফলে আরও সম্ভাবনাময় খাত হিসেবে আবির্ভূত হতে যাচ্ছে বিজনেস প্রসেস আউটসোর্সিং।