মাজহারুল ইসলাম মিচেল: বাংলাদেশ-মালয়েশিয়া চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (বিএমসিসিআই) সভাপতি সৈয়দ আলমাস কবির বুধবার আমাদের অর্থনীতিকে বলেন মালয়শিয়ার সাথে বাংলাদেশের এফটিএ (ফ্রি ট্রেড এগ্রিমেন্ট) বা অবাধ বাণিজ্য চুক্তি হলে বাংলাদেশ-মালয়েশিয়ার আমদানি-রপ্তানিতে ভারসম্য আসবে।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, বর্তমানে বাংলাদেশের সঙ্গে মালয়শিয়ার বাণিজ্য ঘাটতি প্রায় ২৯৫১ দশমিক ৬৯ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। আর বাংলাদেশ থেকে সর্বোচ্চ ৪০০ মিলিয়ন ডলারের পণ্য মালয়শিয়াতে রপ্তানি করা হচ্ছে বলে তিনি জানান।
যদি বাংলাদেশ ১ বিলিয়ন ডলার রপ্তানির লক্ষ্য নির্ধারণ করতে চায় তাহলে সরকারের অবাধ বাণিজ্য চুক্তির গুরুত্ব রয়েছে বলে তিনি মন্তব্য করেন।
তিনি জানান, মালয়শিয়ার সাথে বাংলাদেশের এফটিএ (ফ্রি ট্রেড এগ্রিমেন্ট) বা অবাধ বাণিজ্য চুক্তি হলে বাংলাদেশকে শুল্ক সুবিধা পেতে সহায়তা করবে। এতে উভয় দেশের ব্যবসায়ী স¤প্রদায়েরই সুবিধা হবে। বিএমসিসিআই সভাপতি সৈয়দ আলমাস কবির জানান, বাংলাদেশ তৈরি পোশাক, পাটজাত পণ্য, প্লাস্টিক, হালকা যন্ত্রপাতি ও চামড়াজাত পণ্যসহ বিভিন্ন পণ্য মালয়েশিয়ায় রপ্তানি করছে। বাংলাদেশ ২০২০-২০২১ অর্থ বছরে ৩০৬.৫৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের পণ্য মালয়েশিয়ায় রপ্তানি করেছে, একই সময়ে ১,৫৭৬.৮৯ মিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের পণ্য আমদানি করেছে। মালয়েশিয়ার পাম ওয়েল, ফার্নিচার, চকলেট, ফলমূলসহ বিভিন্ন খাদ্যপণ্যের প্রচুর চাহিদা রয়েছে বাংলাদেশে। মালয়েশিয়া বাংলাদেশে এসব পণ্যের কারখানা স্থাপন করলে অধিক লাভবান হবে। এখানে প্রচুর দক্ষ জনশক্তি রয়েছে, ফলে কম খরচে এসব পণ্য উৎপাদন করা সম্ভব।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ মালয়েশিয়া থেকে বিপুল পরিমাণ পাম্পওয়েল আমদানি করে থাকে। বাংলাদেশের ফার্নিচার শিল্প দ্রæত এগিয়ে যাচ্ছে। ভারতের সেভেন সিস্টার খ্যাত রাজ্যগুলোতে প্রচুর ফার্নিচারের চাহিদা রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্যোগে বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে একশতটি স্পেশাল ইকোনমিক জোন গড়ে তোলার কাজ দ্রæত এগিয়ে চলছে, অনেকগুলোর কাজ প্রায় শেষের পথে। এখানে মালয়েশিয়া ফার্নিচার, কৃষিপণ্য প্রসেসিংসহ সংশ্লিষ্ট শিল্প খাতে বিনিয়োগ করলে লাভবান হবে।
বাংলাদেশ ২০২৪ সালে স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা (এলডিসি) থেকে মধ্য-আয়ের দেশে উন্নীত হলে রপ্তানিতে শুল্কমুক্ত সুবিধা হারাতে হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন তখন বাণিজ্য সুবিধা মূলত দ্বিপক্ষীয় মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির উপর নির্ভর করবে।
উৎপাদন খরচ কমার ফলে রপ্তানি সক্ষমতা শক্তিশালী হবে। অভ্যন্তরীণ বাজারের জন্য উৎপাদিন পাণ্যের দামও কমবে। ফলে নতুন বাণিজ্য থেকে সরকার বেশি বেশি রাজস্ব পাবে, কর্মসংস্থান বাড়বে বলে তিনি জানান।
মালয়েশিয়ার সঙ্গে বিপুল পরিমান বাণিজ্য ঘাটতি পূরণে পণ্য রপ্তানি বাড়ানোর কোন বিকল্প নেই উল্লেখ করে তিনি অতিদ্রæত সত্তর এই এফটিএ চুক্তি সম্পাদন করার জন্য সরকারের উর্দ্ধতন কর্মকর্তা ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ জানান।