
সফটওয়্যার ও আইটিইএস রপ্তানি অনেকটাই সহজ বলছেন ব্যবসায়ীরা
মাজহারুল ইসলাম মিচেল : সফটওয়্যার ও তথ্যপ্রযুক্তি পরিষেবা (আইটিইএস-ইনফরমেশন টেকনোলজি এনাবল সার্ভিসেস) রপ্তানি এখন অনেক সহজ।
তথ্য প্রযুক্তির ব্যবসায়ীর শীর্ষ সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন (বেসিস) নের্তৃবৃন্দ ও বিভিন্ন ব্যবসায়ীদের সঙ্গে গতকাল বুধবার আলোচনা করে এ তথ্য জানা যায়।
বেসিসের সভাপতি রাসেল টি আহমেদ আমাদের অর্থনীতিকে বলেন, সফটওয়্যার ও তথ্যপ্রযুক্তি পরিষেবা (আইটিইএস) রপ্তানির ক্ষেত্রে আগে কোনো প্রকার ইআরসি প্রয়োজন ছিল না। পরে একটি ভুল-বোঝাবুঝির কারণে ইআরসির প্রয়োজন হতো। আমরা বেসিস থেকে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে বসে বিষয়টি তাদের বোঝাই। এরপর বিষয়টির সমাধান হয়। বেসিসের পক্ষ থেকে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে এজন্য আমরা ধন্যবাদ জানাই।
নের্তৃবৃন্দ জানান, আইটিইএস ফিজিক্যাল পণ্য না হওয়ায় রপ্তানির ক্ষেত্রে কোনো ধরনের ‘রপ্তানি নিবন্ধন সনদপত্র’-এর প্রয়োজন হয় না। মূলত বাংলাদেশ থেকে বিদেশে ফিজিক্যাল পণ্য রপ্তানি করতে হলে আমদানি ও রপ্তানির চিফ কন্ট্রোলারের অফিস থেকে রপ্তানি নিবন্ধন সার্টিফিকেট (ইআরসি) সংগ্রহ করতে হয়।
তারা জানান, এ বছরের ১৭ জানুয়ারি বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে দেওয়া এক বিজ্ঞপ্তিতে সফটওয়্যার ও তথ্যপ্রযুক্তি পরিষেবা রপ্তানিতে ইআরসি লাগবে না বলে উল্লেখ করে। সহকারী নিয়ন্ত্রক মো. সিরাজুল ইসলামের সই করা বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ২৮ নভেম্বর ২০২২ তারিখে পত্রের নির্দেশনার আলোকে জানানো যাচ্ছে নন-ফিজিক্যাল ফরমের (সফটওয়্যার ও আইটিইএস) সেবা রপ্তানির ক্ষেত্রে আমদানি ও রপ্তানি প্রধান নিয়ন্ত্রকের দপ্তর হতে রপ্তানি নিবন্ধন সার্টিফিকেট (ইআরসি) গ্রহণের প্রয়োজন নেই।
বিজ্ঞপ্তির অনুলিপি বাংলাদেশ ব্যাংক, বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি অনুবিভাগ, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ, বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেস, বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব কনটাক্ট সেন্টার অ্যান্ড আউটসোর্সিংসহ বিভিন্ন সংস্থা ও দপ্তরে পাঠানো হয়েছে।
গ্রাফিক পিপলের নির্বাহি কর্মকর্তা ইমতিয়াজ ইলাহি জানান, এখন পর্যন্ত বাংলাদেশ রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) এ বাধ্যবাধকতাকে শিথিল করেনি।
সফট্ওয়ার রপ্তানির ক্ষেত্রে ইপিবি কতটুকু গুরুত্বপূর্ণ এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন বিদেশে বিভিন্ন প্রমোশন করতে গেলে এর গুরুত্ব রয়েছে, এছাড়া এর তেমন কোন ভূমিকা নেই। তবে ইআরসি থাকলে বিভিন্ন ধরনের সুযোগ সুবিধা পাওয়া যায়।
সরকারের এ ধরনের নানা উদ্যোগের কারনেই দেশে অনেক সফটওয়্যার ও তথ্যপ্রযুক্তি পরিষেবা (আইটিইএস-ইনফরমেশন টেকনোলজি এনাবল সার্ভিসেস) কোম্পানি তৈরি হয়েছে বলে মন্তব্য করেন।
বেসিসের অফিস সেক্রেটারি হাসিম আহমেদ জানান, শুধু ট্রেড লাইসেন্সের মাধ্যমেই যেকেউ সফটওয়্যার রপ্তানি করা সম্ভব।
বেসিসের হিসাব অনুযায়ী, বর্তমানে দেশে এ খাতে কাজ করছে ২ হাজার ২ শ’ ৬৭ টি প্রতিষ্ঠান। কর্মরত আছেন তিন লাখের বেশি লোক। সঠিক পরিকল্পনায় এগোতে পারলে আগামী কয়েক সালের মধ্যে জনবল ১০ লাখে উন্নীত করা সম্ভব বলে মনে করেন সংগঠনটির নেতারা।
কাজের ধরন অনুযায়ী সফটওয়্যার প্রতিষ্ঠানগুলো দুই রকমের সরাসরি সফটওয়্যার উন্নয়ন প্রতিষ্ঠান, যেগুলোকে বলা হয় আইটি কোম্পানি এবং সফটওয়্যার-নিয়ন্ত্রিত সেবা প্রদানকারী বা আইটিইএস কোম্পানি। বেসিসের সদস্য প্রতিষ্ঠানগুলোর ৪৫ ভাগ আয় আসে সফটওয়্যার বিক্রি করে, বাকি ৫৫ ভাগ আয় আসে আইটিইএস-সংক্রান্ত সেবা থেকে।
