
সুগন্ধি চালের রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার চায় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়
সোহেল রহমান : সুগন্ধি চাল রপ্তানির ওপর থেকে আরোপিত নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হতে পারে। বিষয়টি এখন সরকারের সক্রিয় বিবেচনাধীন রয়েছে। ব্যবসায়ীদের আবেদনের প্রেক্ষিতে সম্প্রতি খাদ্য মন্ত্রণালয়ে এ-সংক্রান্ত একটি চিঠি পাঠিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্র মতে, নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের সার্কুলার এখনো না দেয়া হলেও কোনো রপ্তানিকারক চাইলে এখনই সুগন্ধি চাল রপ্তানি করতে পারবেন। এখন থেকে কেস-টু-কেস ভিত্তিতে সুগন্ধি চাল রপ্তানির অনুমতি দেয়া হবে। অনেকেই আবেদন করেছেন।
এদিকে খাদ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, নিষেধাজ্ঞা এখনো প্রত্যাহার হয়নি। প্রত্যাহারের একটি আবেদন এসেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে। আমরা বিষয়টি বিবেচনা করছি। এ বছর চালের উৎপাদন ভালো। তবে বিষয়টি নিয়ে মন্ত্রিসভায় আলোচনা করা হবে। প্রধানমন্ত্রীর নজরে দিয়ে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
প্রসঙ্গত: দেশে চালের বাজারে স্থিতিশীলতার জন্য গত বছরের জুনে সুগন্ধি চালের রপ্তানি বন্ধ করে দেয়া হয়েছিল। চলতি বছর দেশে চালের বাম্পার ফলন হয়েছে। এ প্রেক্ষিতে সুগন্ধি চাল রপ্তানি চালু করতে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের আপত্তি থাকার কথা নয় বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
জানা যায়, সুগন্ধি চাল রপ্তানি বন্ধের আগে প্রতি বছর প্রায় ১০ হাজার টন চাল রপ্তানি হতো। এর বড় বাজার ছিল সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই), ইউরোপ, আমেরিকা, যুক্তরাজ্য, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর। আরও অন্যান্য দেশগুলো মিলে এ পর্যন্ত বিশ্বের ১৩৬টি দেশে রপ্তানি হতো এ চাল। দেশের বড় বড় করপোরেট কোম্পানিসহ বিভিন্ন রপ্তানিকারক এ চাল রপ্তানি করতো।
এদিকে বাংলাদেশ থেকে সুগন্ধি চাল রপ্তানি বন্ধ থাকায় দেশীয় কোম্পানিগুলো রপ্তানি বাজার হারাচ্ছে। তারা বলছে, শুধু সুগন্ধি চাল থেকে রপ্তানি আয় বন্ধ তা নয়, এ চালের কারণে অন্যান্য কৃষিপণ্যের রপ্তানি আয়ও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। কারণ দোকানে গেলে বাংলাদেশি সুগন্ধি চালের সঙ্গে ক্রেতারা অন্যান্য উপকরণও কিনতেন।
রপ্তানিকারকদের হিসাবে, দেশে সুগন্ধি চালের উৎপাদন ১৮ থেকে ২০ লাখ টন। এর সর্বোচ্চ ২ শতাংশ পর্যন্ত রপ্তানি করা হয়। এর কারণে রপ্তানি চালু থাকলে সামগ্রিক বাজারে কোনো প্রভাব পড়বে না।
জানা যায়, এর আগে প্রাণ-আরএফএল গ্রæপ, স্কয়ার ফুড অ্যান্ড বেভারেজ, এসিআই, টিকে গ্রæপ, ইফাদ গ্রæপসহ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান গত ডিসেম্বর ও জানুয়ারিতে সুগন্ধি চাল রপ্তানির সুযোগ চেয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় বরাবর আবেদন করে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনের (বিটিটিসি) কাছে বিষয়টি নিয়ে মতামত চায়। সুগন্ধি চাল রপ্তানিতে ট্যারিফ কমিশনের আপত্তি নেই বলে জানা যায়।
